• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অতিথি পাখির কলতানে মুখর রামরাই দিঘি


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২১, ২০১৬, ০৮:৩২ পিএম
অতিথি পাখির কলতানে মুখর রামরাই দিঘি

ঠাকুরগাঁও: শীত এলেই প্রকৃতি সাজে নতুন সাজে। তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থানের মত ঠাকুরগাঁওয়ের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম জলাশয় রামরাই দিঘির প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্রকেও সাজিয়েছে নতুন সাজে। প্রকৃতিক রূপটাকে আরও বাড়িয়েছে তোলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অতিথি পাখির দল।

ঠাকুরগাঁও জেলা সদর থেকে সড়কপথে ৪৩ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত রানীশংকৈল উপজেলা। উপজেলা শহর থেকে ৪ কিমি দূরে উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জলাশয় রামরাই দিঘীর অবস্থান। এটি ঠাকুরগাঁওয়ের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম জলাশয়। উপজেলা  শহর থেকে বাস, অটো, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশাসহ যেকোনো বাহন যোগে আসা যায়। ভাড়া মাত্র ১৫-২০ টাকা।

শীতের আগমনে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার রামরাই দিঘিতে ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। পাখিদের মুহুর্মুহু কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে রামরাই দিঘিতে ভিড় জমায় তারা। পাখিদের এই মুহুর্মুহু কলতানের টানে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখিপ্রেমীরা।

প্রতিবছর শীতের শুরুতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে আসে বাহারি রংয়ের এসব অতিথি পাখি। পাখিরা সুদূর সাইবেরিয়ার হিমশীতল আবহাওয়ার কবল থেকে রেহাই পেতে অভয়াশ্রম হিসেবে বেছে নেয় মিষ্টি শীতের দেশ বাংলাদেশকে।

এদেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসে তারা। আত্মীয়দের সঙ্গে যেমন আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতির সঙ্গেও তেমনি আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে এসব অতিথি পাখি।

পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে এসেছে রংপুরবাসী সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া সিফাত। সে জানায়, আমি বাড়িপাশের রংপুর চিড়িয়াখানার দেশী-বিদেশী পাখি দেখেই অভ্যস্ত। পাখি, পাখিদের ছোটাছুটি, পাখিদের কলতান যে এত মনোমুগ্ধকর হয় তা এখানে না এলে জানতে পারতাম না।

রামরাই দিঘির দেখভালের দায়িত্বে থাকা আব্দুস সালাম জানান, আমাদের এখানে যে অতিথি পাখি আসছে তার নাম ছোট সরালি। শীতের শুরু থেকে বহু মানুষ আসছেন এসব অতিথি পাখি দেখার জন্য। অনেকসময় অনেক পাখিশিকারীরাও আসেন পাখিশিকারের উদ্দেশ্যে। আমি সবসময় তাদের নিরুৎসাহিত করি কারণ অতিথি পাখিরা আমাদের দেশে আসে অতিথি হয়ে। কেউ যেন এদের শিকার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীরা সারাক্ষণ সজাগ আছি।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, এই ছোট সরালি জাতের অতিথি পাখি আমাদের দেশে প্রতি শীতেই আসে। এরা এখানে এসে ডিমও দেয়। তাদের নিরবিচ্ছিন্ন বসবাসে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। অতিথি পাখি শিকার করা দন্ডনীয় অপরাধ। তাই সকলকে অতিথি পাখি শিকার না করার আহ্বান জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!