• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডাটাবেইজ তৈরির কার্যক্রম শুরু


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬, ০১:৩৮ পিএম
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডাটাবেইজ তৈরির কার্যক্রম শুরু

বিশেষ প্রতিনিধি

দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে অপরাধীদের ডাটাবেইজ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মূলত পরিচয় গোপন করে বা নানা কৌশলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একই অপরাধীর বারবার অপরাধ করে যাওয়া বন্ধ করতেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য কোনো অপরাধী একবার আটক হলে ডাটাবেইজে তার পারিবারিক পরিচিতি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, শরীরের বিশেষ ধরনের চিহ্ন, চোখের মণিসহ নানা বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হবে। ডাটাবেইজে একজন অপরাধীর প্রায় দেড় শ তথ্য রাখা হবে। পাশাপাশি জঙ্গিদের তথ্যসংবলিত ডাটাবেইজ তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অপরাধীদের ডাটাবেইজটিতে সারাদেশের ৬৮টি কারাগারের প্রায় ৭০ হাজার বন্দির তথ্য রাখা হবে। তাছাড়া ইতিপূর্বে ৪০ হাজার ব্যক্তির তথ্য নিয়ে এলিট ফোর্স র‌্যাব ক্রিমিনাল ডাটাবেইজ তৈরি করেছে। ডাটাবেইজটি ৫ লাখ অপরাধীর তথ্য সংরক্ষণ করার উপযোগী করে তৈরি করা হচ্ছে। তবে ৭০ হাজার বন্দির তথ্য রাখা ডাটাবেইজের নাম দেওয়া হয়েছে র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেইজ। যার সাথে আগে র‌্যাবের তৈরি করা ৪০ হাজার অপরাধীর ডাটাবেইজও যুক্ত হবে।

সূত্র জানায়, ২০১১ সাল থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে সাজাপ্রাপ্ত ৪০ হাজার অপরাধীর বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ তৈরি করা হয়েছে। যার নাম দেয়া হয়েছে‘ক্রিমিনাল ডাটাবেইজ। এখন নতুন করে কিছুদিন আগে থেকে দেশের কারাগারগুলোতে থাকা বন্দিদের ডাটাবেইজ তৈরি করা শুরু করেছে  র‌্যাবের কয়েকটি টিম। ইতিপূর্বে র‌্যাব যে ক্রিমিনাল ডাটাবেইজটি করেছে সেটি সেটি অনেকটাই এফবিআইয়ের মতো করে করা। তাতে ২০১১ সাল থেকে কারাগারে থাকা সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ও যারা র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের ওই ডাটাবেইজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রথমবারের মতো এদেশে এ ধরনের ডাটাবেইজ তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্রত্যেক অপরাধীর কয়েক পুরুষের নাম-ঠিকানা, অপরাধের ধরন, মামলার বিবরণসহ বায়োমেট্রিক নানা তথ্য রাখা হচ্ছে। যদিও বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ অপরাধীদের ডাটাবেইজ নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছে।

সূত্র আরো জানায়, ডাটাবেইজে অপরাধীদের মধ্যে জঙ্গিদের তথ্যও থাকছে। ওই ডাটাবেইজে জঙ্গি সংশ্লিষ্টদের নানা তথ্য, জঙ্গি হওয়ার ইতিহাসও সংযুক্ত করা হচ্ছে। তাছাড়া জঙ্গিসহ দাগি অপরাধীরা কোন ধরনের অবয়ব তৈরি করতে পারে তার সম্ভাব্য স্কেচও থাকছে। কোনো অপরাধী সম্পর্কে সর্বশেষ কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তাও ডাটাবেইজে যুক্ত করা হবে। র‌্যাবের  তৈরি বন্দিদের ডাটাবেইজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে লাগবে। এমনকি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এর সহযোগিতা নিতে পারবে। তাতে তথ্য-পরিচয় গোপন করে দাগি অপরাধী কোথাও চাকরি করতে গেলেও ধরা পড়ে যাবে।

এদিকে কারাগার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারাগারে থাকা কোনো বন্দি জামিন নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর নিজের অনেক কিছু পাল্টে ফের অপরাধ করে থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি অনেকে নাম-ঠিকানাও বদলে ফেলে। তাছাড়া ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও বানানো হয়েছে এমন নজিরও আছে। যেভাবেই অপরাধ করুক ডাটাবেইজের সুইচ টিপলেই বেরিয়ে যাবে তার আসল পরিচয়।

এ প্রসঙ্গে আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন জানান, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেইজ তৈরি করা হচ্ছে। ওই ডাটাবেইজ তৈরি হয়ে গেলে কোনো অপরাধী একবার ধরা পড়লে সে আর তার পরিচয় গোপন করতে পারবে না। প্রাথমিকভাবে ঢাকা ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের র‌্যাব-প্রিজন ইনমেট ডাটাবেইজ তৈরি করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব কারাগারেই এই ডাটাবেইজ করা হবে।

একই প্রসঙ্গে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান জানান, নতুন যে ডাটাবেইজ করা হচ্ছে সেটি পুরনোটির সাথে যুক্ত করে দেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!