• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসন খাত চাঙ্গায় নতুন উদ্যোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৬, ২০১৮, ১২:২৯ পিএম
আবাসন খাত চাঙ্গায় নতুন উদ্যোগ

ঢাকা : আবাসন খাত চাঙ্গা করতে নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলো যাতে এ খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ নীতিমালা সংস্কার করা হচ্ছে। শিগগিরই সংস্কার শেষ করে সে অনুসারে সিদ্ধান্ত কার্যকরে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান নির্দেশনা মোতাবেক, কোনো ব্যাংক তার মোট ঋণের ১০ শতাংশের বেশি আবাসন খাতে বিতরণ করতে পারবে না। এ খাতে অশ্রেণিকৃত ঋণের ২ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হয়। নীতিমালা সংস্কার করে এই হার অর্ধেক করা হবে। অর্থাৎ নতুন নিয়মে আবাসন খাতে অশ্রেণিকৃত ঋণের এক শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে সুদহার বেড়েছে। এতে ঋণপ্রবাহ কিছুটা কমে যেতে পারে। কারণ উচ্চসুদে ঋণ নিতে চাইবেন না অনেকে। আবার নির্বাচনের বছর শুরু হয়ে গেছে। ফলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় অনেক উদ্যোক্তা নতুন করে বিনিয়োগে আসবেন না; যার প্রভাব পড়বে ব্যাংক খাতের সার্বিক সূচকে। ব্যাংকগুলো আমানত এনে বিনিয়োগ করতে না পারলে তাদের মুনাফা কমে যাবে। এমন প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক আবাসন খাতকে এ বছর গুরুত্ব দিতে চাইছে। ব্যাংকগুলো যাতে আবাসনে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে, সে জন্য তার প্রভিশন সংরক্ষণ নীতিমালাটি সংস্কার করা হচ্ছে। এতে এই খাত যেমন চাঙ্গা হবে তেমনি খাতসংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত আরো গতিশীল হবে।

তারা জানান, কর্মসংস্থান তৈরি, রাজস্ব আয়, লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে আবাসন খাত। যারা অ্যাপার্টমেন্ট করেন তারা রড, সিমেন্ট, টাইলস, গ্যাস, দরজাসহ ২৫০ ধরনের উপকরণ ব্যবহার করে। ফলে এ খাত চাঙ্গা হলে দেশের অর্থনীতি গতি পাবে, বাড়বে কর্মসংস্থান।

আবাসন খাতের ঋণ ভোক্তা ঋণ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে প্রবাসীদের জন্য গৃহঋণ উন্মুক্ত করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের গৃহায়ন খাতে ঋণ দিতে পারছে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের ঋণসীমা ৫০ অনুপাত ৫০। অর্থাৎ ৬০ লাখ টাকা দামের ফ্ল্যাটের জন্য ব্যাংক অর্ধেক বা ৩০ লাখ টাকা ঋণ দেবে। এর আগে ২০১২ সালে দেশে বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য ব্যাংকঋণের সীমা করা হয় ৭০ অনুপাত ৩০। অর্থাৎ ফ্ল্যাটের নির্ধারিত দামের ৭০ শতাংশ ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে।

বিশ্বমন্দার প্রভাবে ২০১০ সালে আবাসন ব্যবসায়ও নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। তখন সঙ্কট কাটাতে এক অঙ্ক সুদে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ চান ব্যবসায়ীরা। তাদের এ আবেদনে সাড়া না দিলেও বেশ কিছু উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাট কিনতে ঋণ সহজলভ্য, সুদহার কমানো, জটিলতা নিরসন, দলিল সহজকরণ, সরকারি সংস্থা হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের অর্থের জোগান বাড়ানো এবং বহুজাতিক সংস্থার তহবিলের জোগান।

বর্তমানে এ খাত আগের থেকে গতিশীল বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের একজন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আমরা এই খাত নিয়ে দীর্ঘদিন নানা সঙ্কটে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ায় এ খাতে কিছুটা গতি এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণপ্রবাহ বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে এ খাত আরো চাঙ্গা হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আবাসন খাতসংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!