• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৮, ২০১৬, ০১:৩৭ পিএম
আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়

ধর্মচিন্তা রিপোর্টার
সুফিদের মতে, মানব জীবনে প্রকৃত কল্যাণ লাভ করাই কোরবতে ইলাহী বা খোদার নৈকট্য। এই কল্যাণ কোথায় লাভ করা যায়? আল্লাহ বলেন, ‘ক্বাদ আফলাহাল মু’মিনুনাল্লাজিনা হুম ফী সালাতিহিম খাশেউন’। যারা খুশুখুজু বা তাকওয়াসহ নামাজে রত থাকে তারাই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করেছে। কোরবতে ইলাহীর অধিকারী কারা?
সুফিদের মতে, মানব জীবনে প্রকৃত কল্যাণ লাভ করাই কোরবতে ইলাহী বা খোদার নৈকট্য। এই কল্যাণ কোথায় লাভ করা যায়? আল্লাহ বলেন, ‘ক্বাদ আফলাহাল মু’মিনুনাল্লাজিনা হুম ফী সালাতিহিম খাশেউন’। যারা খুশুখুজু বা তাকওয়াসহ নামাজে রত থাকে তারাই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করেছে। কোরবতে ইলাহীর অধিকারী কারা? ‘আসসাবেকুনাস সাবেকুন উলায়িকাল মুকাররাবুন’। আল্লাহ বলেন, অগ্রগামীদের মধ্য যারা অগ্রগামী তারাই মোকাররাব বা নৈকট্যপ্রাপ্ত। নবী (স.)-এর নবুয়তী ডাকে সাড়া দিয়ে যারা ঈমান হাসিল করেছে তারা সবাই অগ্রগামী মানব সম্প্রদায়। তাদের মধ্যে যারা তাকওয়া বা পরহেজগারী অবলম্বন করেছে তারাই অগ্রগামীদের মধ্যে অগ্রগামী। আল-কোরানের ভাষায় ‘আসসাবেকুন’। তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতপ্রাপ্ত জান্নাত। আল্লাহর পরিচয় ও মারেফত হাসিল করার কারণে তাদের হৃদয়ে ‘কোরবতে ইলাহীর’ আকাক্সক্ষা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসে।
কিসের ভিত্তিতে আল্লাহর মারেফত বা প্রকৃত পরিচয় লাভ হয়? মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মারেফত বা পরিচয় মানব জীবনে তিন প্রকার ইয়াকীন বা বিশ্বাসের ভিত্তিতে হাসিল হয়।

১. ইলমুল ইয়াকীন বা জ্ঞানগত বিশ্বাস অর্থাৎ জ্ঞান বা জানা-শোনার ভিত্তিতে আল্লাহর পরিচয় লাভ। এর প্রভাব ‘কীল ও কাল’ বা ‘বলা-কওয়ার’ মধ্যে সীমিত। অনেক সময় এখানে ভুল বা ফিতনার অনুপ্রবেশ ঘটা স্বাভাবিক যখন বক্তা বা জ্ঞানের উৎস এবং জানাশোনার বিষয় নানা দোষে দুষ্ট থাকে।

২. আঈনুল ইয়াকীন বা চাক্ষুষ বিশ্বাস অর্থাৎ আল্লাহর কুদরতি সৌন্দর্যের প্রকাশ দেখে তার মারেফত বা পরিচয় উপলব্ধি করা। মানুষের জন্য এই প্রকার বিশ্বাসও দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে, কেননা এখানেও ইবলিস ও জিন্নাত শয়তানের ধোঁকা আর জাদুকরদের জাদুর প্রভাব থাকতে পারে। যার কথা সুরা নাসে ‘আল্লাজি ইউওয়াসবিসু ফী সুদুরিন্নাস’ বলে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। অর্থাৎ শয়তানের ওয়াসওয়াসা মানুষের অন্তরেও বাসা বাঁধে। তাই অন্তর আত্মাকে কোনো ইনসানে কামেলের বিশুদ্ধ আত্মার সংস্পর্শে রাখতে হবে যাতে তা বিশুদ্ধ হয়ে যায়। যেমন- ধোঁকাবাজরা সাধারণ মানুষকে খাঁটি সোনার বদলে নকল সোনা গছিয়ে দেয়, কিন্তু যারা বুদ্ধিমান অভিজ্ঞ লোকদের সঙ্গে থেকে ধোঁকাবাজদের ফেরেব থেকে বেঁচে থাকে এবং এক সময় সে তার স্পর্শে থেকে নিজেও অভিজ্ঞ হয়ে যায়। এই অন্তর বিশুদ্ধ করার ঘোষণা কালামে পাকে এভাবে এসেছে ‘ক্বাদ আফলাহা মান তাযাক্কাহ’ আল্লাহ বলেন, ‘সেই কল্যাণ লাভ করেছে যে তার অন্তর পরিশুদ্ধ করতে পেরেছে’।

৩. হাক্কুল ইয়াকীন বা প্রকৃত বিশ্বাস অর্থাৎ পরিশুদ্ধ অন্তরের আলোর দৃষ্টিতে আল্লাহর মারেফত ও পরিচয় উপলব্ধি করে বিবেকের বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে আল্লাহর কুদরত ও সৃষ্টির প্রকৃত রহস্যের পরিচয় লাভ করা, যাতে অন্তরাত্মা প্রশান্তি লাভ করে। কোরআনের ভাষায় যাকে ‘ক্বালবে সালিম’ বলে। আল্লাহ বলেন, ‘লা ইয়ানফাউ মালুও ওয়ালা বানুন ইল্লা মা আতা আল্লাহু বি ক্বাল্বিন সালিম’। প্রশান্ত চিত্ত ছাড়া আল্লাহর অনুগ্রহের মধ্যে ধন-সম্পদ, সন্তানাদির মাঝে কোনো উপকার নেই। এই তিনটি বিশ্বাসের প্রকৃষ্ট উদাহরণ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইব্রাহিম (আ.)-এর কোরআনি সংলাপটি এখানে প্রণিধানযোগ্য। ওয়া ইজ ক্বালা ইব্রাহিমু রাব্বি আরিনি কাইফা তুহয়িল মাওতা-ক্বালা আওয়া লাম তু’মিন-ক্বালা বালা ওয়া লাকিন তাতমাইন্না ক্বালবি। নবী (সা.)-কে স্মরণ করিয়ে আল্লাহ বলেন, যখন ইব্রাহিম (আ.) বললেন, প্রভু হে কি করে আপনি মৃতকে জীবিত করেন? আল্লাহ বলেন, তুমি কি তা বিশ্বাস কর না? এর উত্তরে ইব্রাহিম বললেন, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু এর প্রক্রিয়াটি বাস্তবে দেখলে হৃদয় প্রশান্ত হতো। সুফিদের কাছে এর নামই হাক্কুল ইয়াকীন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বীনের সহিহ বুঝদান করুন। আমীন।
সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!