• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইরাকে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তদন্তের মুখে প্রায় ৩০০


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১০, ২০১৬, ০৫:২৫ পিএম
ইরাকে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তদন্তের মুখে প্রায় ৩০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরাকে যুদ্ধের সময় দেশটির সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন প্রায় ৩০০ ব্রিটিশ সেনা। ইরাকে ব্রিটিশ সেনাদের অপরাধ তদন্তে গঠিত ‘ইরাক হিস্টোরিক অ্যালিগেশন্স টিম’ (আইএইচএটি) এ ধরনের যেসব ঘটনা তদন্ত করছে, সেগুলোর ঘটনাস্থলে ব্রিটিশ সেনারা উপস্থিত ছিলেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া ইরাকিদের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১০ সালের নভেম্বরে এই তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী গার্ডিয়ান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগ তদন্তে প্রায় ৩০০ সেনার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ তদন্তকারী কর্মকর্তারা সেনাদের ঠিকানায় গিয়ে তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

তদন্ত কমিটির একজন মুখপাত্র বলেন, প্রায় ২৮০ জন সেনাকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছে, তদন্ত হচ্ছে এমন ঘটনার সঙ্গে তাঁরা যুক্ত ছিলেন বলে কমিটির কাছে তথ্য আছে। ইরাক (আইএইচএটি) প্রধান মার্ক ওয়ারউইক সম্প্রতি বলেন, অনেকগুলো গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে, যার ভিত্তিতে সার্ভিস প্রসিকিউটিং অথরিটি (সামরিক কর্মচারীদের বিচারিক কর্তৃপক্ষ) অভিযোগ আনতে পারে।

মার্ক বলেন, এমন কিছু ‘গুরুতর অভিযোগ’ তদন্ত করা হয়েছে, যেগুলো যুদ্ধাপরাধের মধ্যে পড়তে পারে। ওয়ারউইকের এমন ইঙ্গিতের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই প্রায় ৩০০ সেনার কাছে চিঠি পাঠানো হলো।গতকাল শনিবার ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাকি নাগরিকদের বিচারবহির্ভূত হত্যার ‘কয়েক ডজন’ অভিযোগ ইতিমধ্যে প্রসিকিউটরদের কাছে পাঠিয়েছে তদন্ত কমিটি। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমিটি সম্ভাব্য ১ হাজার ৫১৫ জন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছে। প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে ২৮০টি। ২০১৯ সালে এই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৭২ লাখ পাউন্ড।

এদিকে ইরাকযুদ্ধ-ফেরত ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে সমালোচনা উঠছে বিভিন্ন তরফ থেকে। যুক্তরাজ্যের পুলিশপ্রধান এবং কোনো কোনো এমপি ব্রিটিশ সেনাদের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের বিষয়টিকে ‘ঘৃণ্য’ ও ‘ভূত খোঁজা’র মতো ঘটনা বলে মন্তব্য করেন। তাঁরা সেনাদের চিঠি পাঠানো এবং কোনো কোনো সেনাকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদেরও সমালোচনা করেন।

গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তদন্ত কমিটি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছে, পুলিশ সাধারণত যেভাবে কাজ করে, ঠিক সেভাবেই কাজ করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। সেনাদের অনুসন্ধানের জবাব দিতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা এই মুহূর্তে নেই।যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বেশির ভাগ ব্রিটিশ সেনা যুদ্ধে আইন মেনে এবং পেশাদারি বজায় রেখে আচরণ করেন। বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগগুলো তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন।

সাদ্দাম হোসেনকে হটাতে ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলার শুরু থেকে ২০০৯ সালের জুলাই পর্যন্ত ব্রিটিশ সেনারা দেশটিতে অবস্থান করে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!