• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

একাত্তর হল ছাত্রলীগকে ঢাবি ছাত্রলীগের সংগঠিত ইউনিট করেছি


ঢাবি প্রতিনিধি আগস্ট ১৭, ২০১৭, ১১:২২ পিএম
একাত্তর হল ছাত্রলীগকে ঢাবি ছাত্রলীগের সংগঠিত ইউনিট করেছি

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ সভাপতি ফকীর রাসেল আহমেদ । জন্ম ২৮ জুলাই ১৯৯৬ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানার বিখ্যাত ফকীর পরিবারে । দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল থেকে ২০১১ সালে এস এস সি এবং ২০১৩ সালে রাজউক উত্তরা মডেল হাইস্কুল থেকে এইচ এস সি পাশ করেন।

২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট ভর্তি হন । তার সাথে বর্তমান ছাত্ররাজনীতি, ভবিষ্যত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং ক্যাম্পাস ও হলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সোনালীনিউজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক নাজমুল হুদা রাজ

সোনালীনিউজ: হল সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় কি কি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন? কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?

ফকীর রাসেল আহমেদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নান্দনিক ও সুন্দর আবাসিক ছাত্র হল হচ্ছে বিজয় একাত্তর হল । জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথম থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবাসেন । তার ভালোবাসার বড় প্রমাণ হচ্ছে সুফিয়া কামাল হল ও বিজয় একাত্তর হল প্রতিষ্ঠা । বিজয় একাত্তর হলকে আমাদের জন্য উপহার দিয়েছেন । আমি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় চিন্তা করেছি যেন এই হলের প্রত্যেকটা ছাত্রের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাণী পৌছে দিতে পারি এই লক্ষে কাজ করবো ।

প্রত্যেকেই যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হতে পারে, তারা যেন বিভিন্ন দিকে মেধা, রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি সবখানে যেন এগিয়ে যেতে পারে । শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই যেন একজন কারিগর হতে পারি সে স্বপ্ন দেখেই একাত্তর হলের সভাপতি হিসেবে আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম। দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছি । তারপর বিভিন্ন সময় বৃক্ষরোপন কর্মসূচি এবং বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পাঠ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি । আমি এবং আমার সাধারণ সম্পাদক মিলে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করি । আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি ।

সোনালীনিউজ: বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আপনার কি ধরণের উদ্যোগ ছিল?

ফকীর রাসেল আহমেদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত হল হিসেবে এখানে রাজনীতির চর্চা বলতে গেলে শুরু । এই হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে দেখতে পারেন, বর্তমান সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সবচেয়ে বড় ইউনিট হিসেবে ধরা হয় বিজয় একাত্তর হলকে। সংগঠিত একটি ইউনিট । তো রাজনীতির শুরুতে আমরা চেষ্টা করেছি যারা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলো না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সম্পর্কে জানতো না আমরা তাদের রুমে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর গল্প শুনিয়েছি, ১৫ আগস্টের গল্প শুনিয়েছি, ৭ই মার্চের ভাষণ শুনিয়েছি ।

আমরা তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী বিতরন করেছি । আমরা এই হলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছি। এক্ষেত্রে আপনাদের সবার ভালোবাসা এবং বঙ্গবন্ধুকে সবাই ভালোবাসে বলেই আজকে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছি বলে আমি মনে করি ।

সোনালীনিউজ: শোক দিবস উপলক্ষে কি ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন?

ফকীর রাসেল আহমেদ: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাধ্যক্ষ স্যার সময় দিলে খুব শীঘ্রই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো। আমাদের কর্মসূচিতে থাকবে দেয়াল লিখন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে নির্মিত বিখ্যাত মুভি ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ডকুমেন্টারি হলের মাঠে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে প্রাধ্যক্ষকের উপস্থিতে দেখানোর ব্যবস্থা করবো । আমাদের পাঠচক্র কর্মসূচি চলছে । এ মাসের শুরুতে আমি এবং আমার সাধারণ সম্পাদক মিলে অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচা বিতরন করেছি । আমাদের যে সাধারণ সভা হয় সেখানে তারা এই বই পাঠ করছে।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হলের প্রতিনিধি হিসেবে বলতে পারি, প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ১০০ ছাত্র কারাগারের রোজনামচা এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ করছে । কুইজ প্রতিযোগিতা এবং রচনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের জ্ঞান এবং ভালোবাসাকে আমরা মূল্যায়ন করবো । এবং এখানে পুরস্কার দিবেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আমাদের মাননীয় প্রাধ্যক্ষও থাকবেন। আর ঈদের পর আমরা ছাত্রলীগ থেকে এ হলের মেধাবীদেরকে তাদের মেধার স্বীকৃতি দেবো। যেসব ছাত্রলীগ কর্মী সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ অথবা ৩.৮০ এর উপরে পেয়েছে তাদের পুরস্কৃত করবো। যারা ছাত্রলীগ করে, রাজপথে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ভালো রেজাল্ট করছে তাদেরকে বেশি করে পুরস্কার দেয়া যেতেই পারে। তারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হয়ে ডিপার্টমেন্টে মেধার ছাপ রাখছে।

সোনালীনিউজ: গত ১০ অাগস্ট ছাত্রদল ক্যাম্পাসে এসে শোডাউন দিয়ে গেল। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

ফকীর রাসেল আহমেদ: ধর্মকে ব্যবহার করে যারা রাজনীতি করে তাদেরকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে । কিন্তু প্রগতিশীল জোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি নিষিদ্ধ না। এই ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নিষিদ্ধ না । তারা বামদের একটা অনুষ্ঠানে এসেছে। আমাদের তো ধাওয়া দেয়ার কিছু নেই। আমরা ছাত্রলীগ সমরাজনীতিতে বিশ্বাসী, সহাবস্থানে বিশ্বাসী। এরা বামের একটি অনুষ্ঠানে একাত্মতা ঘোষণা করতে আসলেও তাদের উদ্দেশ্য ছিল দখল করা, ছাত্রলীগের উপর হামলা করা ।

তারা মধুর ক্যান্টিনে চেয়ার দখলের জন্য আমাদের উপর হামলা করতে আসছে। সে সময় মধুতে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতারা  প্রতিবাদ করে। খবর পেয়ে আমরা বিজয় একাত্তর এবং জসীম উদ্দীন হল ছাত্রলীগ একত্রিত হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। এখানে তাদের সাথে আমরা সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করিনি। কারণ তারা রাজনীতি করে, তাদের রাজনীতিকে আমরা স্বাগত জানাই।

ডাকসু নির্বাচন আমরাও চাই। তারা আসুক। কিন্তু ৩জন আসার কথা বলে যখন ৬০ জন আসে তখন আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হলেও বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনার আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আমরা বলতে পারি, এই সুষ্ঠু ক্যাম্পাস, এই সোনার বাংলা গড়ার যুদ্ধে কোন ধরনের অরাজকতা, কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ছাত্রলীগ কখনও সহ্য করবে না।

ইতোমধ্যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বিজয় একাত্তর হলকে প্রতিদিন সকাল ১০টায় মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে পাহারা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশমত আমরা কাজ করছি যাতে ক্যাম্পাসে কোন নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-শিবির এবং তাদের দোসররা কোন অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করতে না পারে । তারা রাজনীতি চর্চা করতে আসলে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু যখন তারা আক্রমণাত্মক হবে তখন কিন্তু ছাত্রলীগ তাদের ছেড়ে দিবে না। ছাত্রলীগ রাজপথে থেকে প্রমাণ দেবে শেখ হাসিনার এই উন্নয়ন যাত্রা কেউ বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না। আমরা ছাত্রলীগ রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।  

সোনালীনিউজ: বিরোধী সংগঠনের বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?

ফকীর রাসেল আহমেদ: জামাত-শিবিরের বিষয়ে তো আমার বলার কিছুই নেই । আপনারা জানেন ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করে যারা মানুষ খুন করে, যারা মানুষের রগ কাটে, তারা কি ধার্মিক? আপনাকে একটি কথা আমি বলতে চাই, কোরআনে একটি আয়াত আছে ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন’। অর্থাৎ তোমার ধর্ম তোমার আমার ধর্ম আমার।। আমাদের নবী কারীম (সাঃ) কিন্তু নিজের ধর্ম কারো উপর চাপিয়ে দেন নি। তো আমার রাজনীতি আমি অন্য কারো উপর চাপিয়ে দিবো আর এবং ইসলামের নাম ব্যবহার করে রাজনীতি করবো! এই রাজনীতি আসলে অপরাজনীতি।

বাংলাদেশ সরকার এবং গণতন্ত্রী বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ওই শিবির সংগঠন নামে সন্ত্রাসী সংগঠনকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে । তারা আসলে সন্ত্রাস, তারা আসলে রাজনীতি করেনা। এদের রাজনীতি করার অধিকার ক্যাম্পাসে নাই। তারা ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬০০০ স্টুডেন্ট প্রতিহত করবে বলে আমি মনে করি। আর অন্যান্য যে সংগঠনগুলা আছে তাদেরকে ক্যাম্পাসে আমরা রাজনীতি করার অধিকার দিচ্ছি।

ছাত্র ইউনিয়ন ক্যাম্পাসে সরকার বিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমে অন্যায়ভাবে স্লোগান দেয় । ছাত্র ফেডারেশন দেয়, আরো যারা বাম দল আছে তারা দেয়। তো তাদেরকে আমরা রাজনীতি করার সুযোগ দিচ্ছি। কারণ মুক্ত রাজনীতিতে, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা যেমন বিশ্বাস করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগও বিশ্বাস করে।

আর ছাত্রদল সম্পর্কে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ছাত্রদলকে চেঞ্জ হতে হবে। আমি আপনার মাধ্যমে বলতে চাই, আমি চতুর্থ বর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্র হিসেবে বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছি। কিন্তু আপনি পাশের বঙ্গবন্ধু হলে খেয়াল করলে দেখবেন, সে হলের সাধারণ সম্পাদক আলামিন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।

কিন্তু ওই হলের ছাত্রদলের যে আহ্বায়ক আলামিনের থেকে তার বয়সের ব্যবধান ৯ বছর বেশি। আলামিনের বয়স যদি আজকে ২১ হয় তাহলে তার বয়স ৩০ বছর। ৩০, ৪০ বছরের একজন মানুষ। তার কি ছাত্রত্ব আছে? আর সে তো ক্যাম্পাসের বাইরে। তাইলে অছাত্ররা এসে ক্যাম্পাসে অরাজকতা করবে, এটাতো ছাত্রলীগ মেনে নিতে পারে না । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অছাত্র সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করবে।

যদি ছাত্রদল ছাত্রদের নিয়ে আসে, আমার বন্ধু-সহপাঠিদের নিয়ে আসে তাদের সাথে আমরা রাজনীতি করবো। তাদের সাথে রাজনীতিক চর্চা হবে। আমরা বিজয় একাত্তর হল এবং কবি জসীম উদ্দীন হল ওইদিন যখন মহড়া দিয়েছিলাম, তখন তাদের দেখে মনে হচ্ছিল আমি তার বাচ্চা। এটা তো রাজনীতি হতে পারেনা। এই যে অপরাজনীতি, আদু ভাইদের দিয়ে ছাত্ররাজনীতি করিয়ে ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।

এই কলুষিত রাজনীতিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেমন প্রশ্রয় দিবে না বলে আমি মনে করি ছাত্রলীগও প্রশ্রয় দিবে না। ছাত্রদলকে রাজনীতি করতে হলে ছাত্রদেরকে দিয়ে রাজনীতি করতে হবে। ক্যাম্পাসের নিয়মিত ছাত্রদেরকে আনতে হবে। ছাত্রদের আনলে তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাবো। রাজনীতিতে সহাবস্থান আমরা করে দেবো । কিন্তু আদু ভাইদেরকে নিয়ে এসে ক্যাম্পাসে গন্ডগোল করলে তা প্রতিহত করা হবে।

সোনালীনিউজ: বেশিরভাগ হলে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হলেও আপনার হলে এখনও দেয়া হয়নি কেন? কবে ঘোষণা করা হতে পারে?

ফকীর রাসেল আহমেদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলা হলে ছাত্রলীগের ইউনিটটা গোছানো । তো নবীনতম ইউনিট হিসেবে আমরা সাধারণ ছাত্রদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাণী পৌছে দিয়ে আজকে হলে ছাত্রলীগের কর্মী প্রতিষ্ঠিত করেছি। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নেতা বানানোর আগে তোমরা খোজ-খবর নিও । আজকে সরকার ক্ষমতায় । কাদের স্যার বলেছেন দলে কাউয়া ঢুকে পড়েছে। আমার এবং সাধারণ সম্পাদকের চোখের আড়ালে এরকম অনেকেই ঢুকে যেতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির প্রাণ। আর ইতোমধ্যেই বিজয় একাত্তর হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণের হল হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় ইউনিটকে আমরা চাইবো বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত সৈনিক এবং শেখ হাসিনার প্রকৃত কারিগররা যাতে উঠে আসে । তাই আমরা যাচাই বাছাই করে একটু সময় নিয়ে কমিটি করবো। তবে খুব বেশি দেরী হবে না । আমরা আশা করি সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিতে পারবো।

সোনালীনিউজ: কাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগে আসলেন? ছাত্রলীগে আপনার আইডল কে?

ফকীর রাসেল আহমেদ: আসলে আইডল বলতে আমার চাচা রাজবাড়ী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার । ওনি ১৯৬৮-১৯৭২ পর্যন্ত বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমি জন্মের পরেই দেখেছি ওনি আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন। এবং আমার ছোট চাচা ফকীর আমজাদ হোসেন যিনি সবসময় আমার কাছে থাকতেন। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

পরবর্তীতে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হয়েছেন। তো আমার ছোটবেলা থেকেই যখন আমার জ্ঞান হয়েছে আমি দেখেছি আমার ফ্যামিলিতে একটি শব্দ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, নৌকা । আমি ২০০৬ সালে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সেক্রেটারি হই। ২০০৮ সালে গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হই। আমি যখন ছাত্ররাজনীতিতে তখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি লিয়াকত শিকদার ভাইয়ের নামটা প্রথম শুনেছিলাম। তবে, আমার আইডল হচ্ছে আমার পরিবার, আমার চাচা ফকীর আব্দুল জব্বার। যিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির জন্য, আওয়ামীলীগের রাজনীতির জন্য আমাদের রাজবাড়ীর একটি বড় সম্পদ।

কারণ, জননেত্রী শেখ হাসিনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৭-৬৮ সালে দুঃসময়ে নৌকার কান্ডারি হিসেবে চাচাকে অবিভক্ত ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমার চাচার কাধে হাত রেখে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ পার হয়েছেন। আমার চাচা অনেক গর্ব করে গল্প আবেগে এসব বলেন। তার গল্প শুনে, তার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে, তার ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগের প্রতি ভালোবাসা দেখেই আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এতো দূর পর্যন্ত এসেছি।

সোনালীনিউজ: ভবিষ্যত রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে পরিকল্পনা কি?

ফকীর রাসেল আহমেদ: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠিক রাখার জন্য হল ইউনিট সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হল কমিটি হলো সারা বাংলাদেশে আলোচিত কমিটি। আজকে যিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে ছোট বয়সে হলের সাধারণ সম্পাদক।

আজকে তারই ভালোবাসায়, তারই স্নেহে তিনি আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠতম সভাপতি হিসেবে এখানে এনেছেন। রাজনীতিতে আমি অনেক পেয়েছি। আমি কৃতজ্ঞ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতির প্রতি, কৃতজ্ঞ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতি। স্বপ্ন হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক হিসেবে দেশ গড়ার যে সংগ্রাম জননেত্রী শেখ হাসিনা করে যাচ্ছেন, সেই সংগ্রামের একজন অগ্রসৈনিক আমি হতে চাই।

জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকতে চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে তার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হতে চাই, যদি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং যারা ছাত্রলীগের কর্ণধার রয়েছেন তারা যদি আমাকে সুযোগ দেন আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার সেবা করতে চাই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মানুষের কাছে পৌছে দিতে চাই। এ স্বপ্নই দেখি। এটাই আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যত।

সোনালীনিউজ: কোন সংগঠনই সমালোচনার উর্ধ্বে নয় । আপনার সংগঠন নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করতে বলা হলে আপনি কোন বিষয়টিকে বলবেন?

ফকীর রাসেল আহমেদ: ছাত্রলীগ হচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত সংগঠন। এই সংগঠনের ১৭০০০ নেতা-কর্মী জীবন দানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রেখেছে। এই সংগঠনের সমালোচনা আছে। গঠনমূলক সমালোচনা করলে বলা যায়, আমরা সবাই কিন্তু ছাত্র। আমরা কিন্তু আদু ভাই না। তবে, আমরা মাঝে মাঝে যৌবনের উদ্যমে ব্যক্তিগত পেশিশক্তি দলীয়ভাবে ব্যবহার করে দলকে অপরাজনীতির দিকে নিয়ে যাই।

ব্যক্তিগত মারামারির জন্য দলীয় ভাবে কলম সন্ত্রাসের শিকার হই অথবা মাঝে মাঝে দলকে পেশিশক্তির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি। ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীর প্রতি আমার আহ্বান থাকবে ছাত্রলীগকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করে, পেশীশক্তিতে ব্যবহার না করে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কাজের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

সোনালীনিউজ: আমাদের সময় দেয়ার জন্য  আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ফকীর রাসেল আহমেদ: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। সোনালীনিউজকেও ধন্যবাদ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!