• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেউ আপনাকে আকাশে তুলে দিলো আর আপনি ঝুলে থাকলেন!!!


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৪, ২০১৬, ০৫:২০ পিএম
কেউ আপনাকে আকাশে তুলে দিলো আর আপনি ঝুলে থাকলেন!!!

জগতের বেশিরভাগ মানুষ সমালোচনা করতে ভুলে গেছে। সমালোচনা যে নেতিবাচক কিছু না সেটাই আমরা বুঝতে পারিনা। সমালোচনা আর নিন্দাকে আমরা একীভূত করে ফেলেছি। অথচ সমালোচনা মানুষকে গড়তে পারে আর নিন্দা পারে ডোবাতে। অপরের থেকে সমালোচনা আশা করার চেয়ে আত্মসমালোচনা অধিক ফলদায়ক। তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এতটাই সংকুচিত হয়েছে যে, আমরা কখনোই আমাদের নিজেদের ত্রুটি দেখতে চাইনা। সমাজের অধিকাংশ লোক মনে করে, সে যেটা করছে ওটাই ঠিক। এর বাইরেও যে সঠিক কিছু থাকতে পারে সেটা তারা মানতেই চায়না। আবার অন্য কেউ আমাদের সমালোচনা করলে আমরা তাকে শত্রু ভেবে তার ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মুখিয়ে থাকি। যার কারনে যারা দক্ষ সমালোচক তারা নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছে। বিশ্বের প্রায় সকল মনীষী সমালোকদের বন্ধু ভাবলেও আমরা সমালোচকদের ভেবে থাকি সবচেয়ে বড় শত্রু। এটা আমাদের জ্ঞানীয় দুর্বলতার লক্ষণ।
 
আমরা যারা সমালোচনা সহ্য করতে পারিনা তারা সস্তা প্রশংসা পেলে ফুলে-ফেঁপে একাকার হয়ে উঠি। অথচ একবারও ভেবে দেখিনা যে, যে প্রশংসা আমাকে করা হলো আদৌ আমি তার যোগ্য কিনা। নিঃসন্দেহে প্রশংসা মানুষকে কর্মে উদ্দোমী করে কিন্তু সস্তা কিংবা মিথ্যা প্রশংসা যে ধ্বংসও ডেকে আনতে পারে সে কথা কি আমরা কখনো ভেবেছি ? আমাদের সমাজে তেলমারা সম্প্রদায়ভূক্ত কিছু লোক আছে। যারা নিজেদের কার্য উদ্ধারের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের কখনো আকাশে কিংবা আকাশ ভেদ করিয়েও উপরে পাঠিয়ে দেয় শুধু প্রশংসার মাধ্যমে। আর যে মানুষের প্রশংসা করা হচ্ছে তারা তা শুনে হেসে কুটি কুটি হয়, গর্ভে তাদের বুকের ছাতা প্রসারিত হয় অথচ একবারও বুদ্ধিমান প্রাণীর মত ভাবে না, তার যোগ্যতা কি ততোটা রয়েছে যার বিনিময়ে সে এমন আকাশমুখী প্রশংসা পেতে পারে।

বর্তমান সময়ে প্রশংসার চেয়ে আমাদের সমালোচনাই বেশি দরকার। কেননা এটা গঠনের সময়। প্রশংসা মানুষকে গড়তে পারে না বরং সমালোচনাই মানুষকে তার কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারে। ব্যক্তিজীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বত্র পর্যন্ত নিরেট সমালোচনাকে সাধুবাদ জানানো উচিত। সমালোচকদের যেন কোনভাবেই বিপদে ফেলা না হয়। কেননা সমালোচকরা আমাদের এমন বন্ধু, যারা কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই আমাদের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য ত্রুটিগুলো সামনে উপস্থাপন করে। কাজেই আত্মগঠনের জন্য সমালোচকদের অবারিত সুযোগ ও সম্মান দেয়া একান্তই কর্তব্য। কেউ মিথ্যা মিথ্যা আকাশে তুলে দিলে আর আমিও বোকার মত কল্পনায় আকাশে ঝুলে থাকলাম-এর চেয়ে কেউ যদি সত্য বলে আমাকে দাবিয়ে দিতে চায়, তাকেই অনুসরণ করা উচিত। কেননা আজকে আমার ভুলের কারণে যে সত্য আমাকে হেনস্তা করলো সেই ভুল থেকে যদি শিক্ষা নেই তবে আমার বাকীদিনগুলো হবে উত্তম আলোতে পথচলার একেকটা রঙিন দিন এবং মানুষের মনে চিরভাস্বর হয়ে থাকা যাবে মৃত্যুর পরের দিনগুলোতেও। বুদ্ধিমনদের বোধহয় সমালোচনা ও সমালোচকদের প্রাণখুলে স্বাগতম জানানো উচিত।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!