• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন খালেদার আইনজীবীরা 


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮, ০৬:০২ পিএম
কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন খালেদার আইনজীবীরা 

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের বিষয়টি নিয়ে কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। দলীয় প্রধানের জামিন, আপিল ও কারাবাস নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে এক ধরনের সমন্বয়হীনতারও আলামত পাওয়া গেছে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন।

জানা গেছে, চলতি সপ্তাহেই কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হবেন দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া- এমনটি মনে করছেন তার আইনজীবীরা। রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ামাত্র জামিন ও আপিল আবেদনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করছেন বিএনপি ঘরানার আইনজীবীরা। 

এদিকে দলনেত্রীর পক্ষে হাইকোর্টে লড়াইয়ে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে অনেক আইনজীবী এখন মরিয়া। আইনাঙ্গনকেন্দ্রিক রাজনীতি, জাতীয় রাজনীতিতে নিজ অবস্থান শক্তিশালীকরণ, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনপ্রবাসী তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা প্রমাণ এবং কারাবাসী নেত্রীর দৃষ্টিতে পড়ার মোক্ষম সুযোগ হিসেবে মনে করছেন তারা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য জানান, দলীয় প্রধানের বন্দিদশা এবং তার মুক্তিপ্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের মধ্যে নানা ধরনের প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে গত ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে দানাবাঁধা পুরনো বিরোধ। সে সময় এক গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন টিএইচ খান, নাজমুল হুদা, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুবউদ্দিন আহমদ, হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া ও জয়নুল আবেদীন। তাদের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য বিরোধের কারণে সে সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম’ কয়েক খণ্ডে বিভক্ত হয়।

বিগত সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ব্যক্তিগতভাবে আবারো নিজের আইনজীবীগোষ্ঠীর কোন্দলের মুখোমুখি। রাজনীতির মাঠে আন্দোলনে সরব থাকার পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমেই সংকট মোকাবিলার পরিকল্পনা বিএনপির। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরাও এটিকে জিয়া পরিবারের কাছে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের মওকা হিসেবে দেখছেন। তবে অতীতে বিভাজনে নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। কেউ দল থেকেই বহিষ্কৃত। মারাও গেছেন কয়েকজন। তবে ক্ষয়িষ্ণুদের অনুসারীরা এখনো সক্রিয়। আগের বিভাজন ও বিভক্তির রেখা-সূত্র ধরেই দানা বেঁধেছে অনৈক্য। আর এই কারণে এ সন্দেহও ঘনীভূত হয়েছে যে, বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একটি অংশ ব্যক্তিগত স্বার্থেই চাইছেন না যে খালেদা জিয়ার জামিন ও কারামুক্তি শিগগিরই নিষ্পত্তি হোক।

বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আইনজীবী নেতার এক অনুসারী বলেন, শুধু আইনজীবী হিসেবে তালিকায় নাম লিখিয়ে গত কয়েক বছরে জাতীয় নেতা হয়েছেন-এমন অনেকেই আছেন। তারা গণমাধ্যমের কল্যাণে ‘খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা’ কিংবা ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। খালেদা জিয়া আদালতে না এলে তারা এ সুযোগ পেতেন না। অথচ তারা মাঠে-ময়দানে নেই।

এদিকে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনি লড়াই নিয়ে সৃষ্ট অনৈক্যের কথা অস্বীকার করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জামিন, মুক্তি ও আপিলের বিষয়ে আইনজীবীরা সবাই এক। আমাদের সবার প্রত্যাশা ও লড়াইটাও এক। এখানে কোনো অনৈক্যের প্রশ্নই ওঠে না। 

সোনালীনিউজ/এমটিআই/জেএ

Wordbridge School
Link copied!