• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুম থেকে ডেকে তুলে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে পায়ে গুলি!


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৬, ২০১৬, ০২:৫৬ পিএম
ঘুম থেকে ডেকে তুলে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে পায়ে গুলি!

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর বদলগাছীতে আব্দুল জলিল মন্ডল (৪২) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে তার পায়ে গুলি করেছে পুলিশ। কেবল তাই নয়, নগদ  তিন লাখ টাকা ও  ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে উপজেলার সাগরপুর (গোয়ালপাড়া) নামক গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী জলিল মন্ডলসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন, জলিল মন্ডলের ছেলে মিঠুন মন্ডল (২২) ও তাদের আত্মীয় রাজশাহীর বাঘার উপজেলার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা (৪০)। গুলিবিদ্ধ জলিলকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল জলিল মণ্ডল, তার পরিবার ও প্রতিবেশিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ‘ পুলিশ রাতের অন্ধকারে  গ্রামবাসীদের না জানিয়ে অভিযান চালানোর সময় গুলি করায় তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। গুলির শব্দ শুনে রাতে ডাকাত মনে করে এলাকার সবাই ঘর-বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।’

তবে পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদে ওই বাড়িতে মাদক আছে জানতে পেরে পুলিশ রাতে অভিযান চালানোর সময় জলিলের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জলিল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল জলিল মন্ডলের নির্মাণাধীন বাড়ির টয়লেটের পাশে একটি স্থানে ডালি দিয়ে ঢাকা রক্ত ও তিনটি গুলি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশিরা ঐ বাড়িটিতে ভিড় করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, জলিল মাদক ব্যবসা করতেন। তিনি একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। গত ১৫ মার্চ রাজশাহী থেকে ফেরার পথে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানা পুলিশ তাকে আটক করেছিল। তার কাছে কোনো মাদক না পেলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার এক মাসের সাজা হয়। এক মাস কারাভোগের পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জলিল তার বাড়িতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে নিজ বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দুইটার দিকে বদলগাছী থানা পুলিশের একটি দল জলিলকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে পায়ে গুলি করে। এরপর পুলিশ জলিল সহ তিনজনকে ধরে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতিবেশি আবুল কাশেম, মামুন হোসেন, হামিদ ইসলাম জানান, জলিল আগে মাদক ব্যবসা করতেন, তবে এখন করেন না।

বদলগাছী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম খান জানান, আব্দুল জলিল ও তার লোকজনের হামলায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নুর ইসলাম, পুলিশ সদস্য মাহমুদুল হাসান, আতিকুর রহমান ও শাহিনুর আলম আহত হন। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়লে আব্দুল জলিলের বাম পায়ে গুলি লাগে। পরে জলিলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২০ বোতল ফেনসিডিল ও একটি দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মাদক ব্যবসা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জলিল, তার ছেলে এবং আত্মীয়কে (৪২) আটক করা হয়েছে।

ওসি তিন লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মাদক ব্যবসা ও পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে। এর আগেও মাদক ব্যবসার অভিযোগে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে নয়টি মামলা রয়েছে এবং সম্প্রতি মাদক ব্যবসার অভিযোগে তার এক মাসের সাজাও হয়েছিল।’

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!