• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁদা চেয়ে রাবির চার শিক্ষককে হুমকি


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১২, ২০১৬, ০৬:২১ পিএম

চাঁদা চেয়ে রাবির চার শিক্ষককে হুমকি

সোনালীনিউজ ডেস্ক

চাঁদা চেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চার শিক্ষককে অপরিচিত এক নম্বর থেকে ফোন দিয়ে  হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার ও মঙ্গলবার মুঠোফোনের এই ০১৬৩০২৯৮১৬৫৭ নম্বর থেকে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে ওই চার শিক্ষককে হুমকি দেয়া হয়।

হুমকি পাওয়া এ চার শিক্ষক হলেন- প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস, এনিমেল হাসবেন্ড্রী এন্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এসএম কামরুজ্জামান, শাহ্ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম এবং একই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুল হক।

অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাসকে মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। হুমকি পাওয়ার কিছুক্ষণ পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এর আগে গত বছরের ২১ মার্চ একইভাবে একটি বাংলালিংক নম্বর ব্যবহার করে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট মেজর জিয়ার পরিচয়ে এই অধ্যাপকের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়। ওই সময় তিনি মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে একই ফোন নম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল হাসবেন্ড্রী এন্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এসএম কামরুজ্জামানকে হুমকি দেওয়া হয়।

এর আগে সোমবার রাতে সর্বহারা দলের পরিচয় দিয়ে একই মুঠোফোন নম্বর ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম এবং একই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুল হককে ফোন হুমকি দেওয়া হয়।

হুমকির বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস বলেন, আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে একটি অপরিচিত নম্বর (০১৬৩০২৯৮১৬৫৭) থেকে আমার কাছে ফোন আসে। ফোনে ওপার থেকে বলে, ‘রাজশাহীর হকার্স মার্কেট ও নিউমার্কেটের ছেলেরা কি আপনার অফিসে গেছে?’ জবাবে আমি বলি, না। পরে ওই ব্যক্তি বলে, তারা আপনার কাছে যেতে যাচ্ছে, আমরা তাদের আটকে রেখেছি। আমাদের বস কথা বলবে, কথা বলুন।’ তারপর আমি ফোন কেটে দিই।’

শাহ মখুদম হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করে এক ব্যক্তি সর্বহারা দলের নেতা তপন বলে পরিচয় দেয়। এরপর সে বলে, ‘আপনার ঝামেলা আছে, আমাদের ছেলেরা আপনার কাছে যেতে চাচ্ছে, আমি আটকে রেখেছি।’ জবাবে জাহাঙ্গীর আলম তার পরিচয় জানতে চাইলে ‘আপনার সঙ্গে আমাদের সাক্ষাত হবে’ বলে ফোন কেটে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, শিক্ষকদের হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে মঙ্গলবার আমাদের কাছে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন অধ্যাপক লিখিত ও এনিমেল হাসবেন্ড্রী এন্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন। একইভাবে সোমবার শাহ মখদুম হলের প্রাধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বসে কীভাবে সমাধান করা যায় তা দেখবো।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) অশোক চৌহান বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের কাছে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে, ১০ মার্চ ‘লাল বাহিনী’ পরিচয়ে ও ২৭ নভেম্বর ‘সর্বহারা পার্টি’ পরিচয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মো. আবুল কাশেমকে, ১২ মার্চ ‘লাল বাহিনী’ পরিচয়ে দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে, ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদারকে, ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদীকে, ২৭ ও ২৮ নভম্বের একই মুঠোফোন থেকে ইতিহাস বিভাগের অন্তত পাঁচ শিক্ষককে ফোনে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষককে বিভিন্ন সময় চাঁদা চেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

 

Wordbridge School
Link copied!