• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চায়ের দাম জমিয়ে দেশকে ১.১৫ লাখ দান ভিক্ষুকের


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬, ১০:৪২ এএম
চায়ের দাম জমিয়ে দেশকে ১.১৫ লাখ দান ভিক্ষুকের

সোনালীনিউজ ডেস্ক

প্রতিদিন মন্দিরে আসতেন তিনি। দর্শন শেষ হলে পূজারী তাকে এক কাপ চা দিতেন। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেই চায়ের দাম মিটিয়ে দিতেন। আর প্রতিবার হতভম্ব হয়ে যেতেন পূজারী। আর হবেন নাইবা কেন! প্রতিদিন যিনি চায়ের দাম মেটান তিনি নিজেই যে একজন ভিক্ষুক। কতজন মন্দিরে আসেন নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য, ভগবানকে বহুমূল্য জিনিস দেন। আর তিনি ছিলেন সেই অগণিতের মধ্যে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। আজ তার জমানো চায়ের দাম থেকেই তৈরি হয়েছে একটি ‘পিজন টাওয়ার’।

গুররাটের বিহারীলাল মহাদেব মন্দিরের পূজারী মৌনি বাবার সঙ্গে একদিন দেখা হয় এই ভিক্ষুকের। সেও প্রায় ৪৩ বছর আগের কথা। প্রথমবার চায়ের দাম দেওয়ায় অবাক হয়েছিলেন মৌনিবাবা। আরও অবাক হন, যখন জানতেপারেন যে, এই ব্যক্তি নিজেই ভিক্ষা করে দিন গুজরান করেন। সেখানেই শেষ নয়। মৌনি বাবা দেখেন ওই ব্যক্তি সামান্য মানসিক ভারসম্যহীন। পয়সাকড়ি চিনতে পারেন না। 

তবু প্রতিদিন চা খেলে দাম মিটিয়ে দেওয়া চাইই চাই সাধারণ মানুষ মন্দিরে কিংবা ভিক্ষুককেই পয়সা দেন। কিন্তু ভিক্ষুকের এই ইমানের পয়সা নিয়ে কী করবেন মৌনী বাবা ভেবে পেতেন না প্রথমে। নিজের কাছেই রাখতেন সেই টাকা। পরে ওই ভিক্ষুকের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি। সেখানেই জমতে থাকা সমস্ত টাকা পয়সা। চার দশক পেরিয়ে দেখা গেল ভিক্ষুকের সেই চায়ের দাম মেটানোর মূল্য হয়েছে ১.১৫ লাখ টাকা। বিন্দু বিন্দু জমেই সিন্ধু হয় জানতেন মৌনীবাবা, কিন্তু তা যে এভাবে চাক্ষুস করবেন, এ যেন তাঁর কাছেও স্বপ্নাতীত ছিল।

ওই ভিক্ষুকের নাম স্মরণীয় করেই রাখতে তৈরি করা হয় পায়রাদের জন্য ‘পিজন টাওয়ার’। সেখানে ভিক্ষুকের পোপাট নামও খোদাই করে দেওয়া হয়। দেশপ্রেম, দেশদ্রোহিতা ইস্যুতে গোটা দেশ উত্তাল। কত না রাজনীতির জল গড়িয়ে যাচ্ছে কত রঙে। সেখানে এই ভিক্ষুকের ইমানদারিকে দেশপ্রেম ছাড়া আর কীই বা বলা যায়। বড় তত্ত্ব, প্রজ্ঞা নয় প্রত্যেকের ছোট ছোট দায়িত্বপালনে, ইমানদারিতেই দেশ স্বপ্নের হয়ে উঠতে পারে। ধ্বংস থেকে এগিয়ে যেতে পারে গঠনের দিকে৷ সহায়সম্বলহীন পোপাটের কীর্তি সে কথাই মনে করিয়ে দেয় দেশবাসীকে।

সোনালীনিউজ/আমা

Wordbridge School
Link copied!