• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রে এখনও বহাল ‌বিতর্কিত ৩৯ ধারা


বিশেষ প্রতিনিধি মে ১৫, ২০১৬, ০৪:৩০ পিএম
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রে এখনও বহাল ‌বিতর্কিত ৩৯ ধারা

যে কোনো সময় দলের যে কাউকে নিয়োগ, অব্যাহতি, প্রমোশন দিতে পারেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দলের একক যে কোনো সিদ্ধান্তও নিতে পারেন তিনি।

পার্টির গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারায় এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তাকে। এই ক্ষমতাবলে তিনি সম্মেলনের আগে দলের মহাসচিব পদ থেকে বাদ দেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে। তাকে নিয়োগও দেন একইপদ্ধতিতে। জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান ও এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারকে ফের মহাসচিব নিয়োগ দেন এরশাদ।

এ সব নিয়োগকে কেন্দ্র করে গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। অভিযোগ ওঠে ক্ষমতার অপব্যবহারের। নেতাদের মধ্য থেকে দাবি ওঠে ধারাটি বিলুপ্তির। এমনকি, গঠনতন্ত্রের ৩৯ ধারা নির্বাচন কমিশনের বিধির বিরুদ্ধে যায়- এমন কথাও বলেন কেউ কেউ। কিন্তু ৮ম জাতীয় সম্মেলনে বিতর্কিত ৩৯ ধারাই বহাল রাখা হয়েছে। নতুন সংশোধনী আনা হয়েছে, তাতে একটি শর্তযুক্ত হয়েছে, আর তাতে বলা হয়েছে- পার্টির চেয়ারম্যান যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে দলের প্রেসিডিয়ামের অনুমোদন নেবেন। আর এই গঠনতন্ত্রই শনিবার (১৪ মে) অনুষ্ঠিত দলের অষ্টম জাতীয় সম্মেলনে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, দলের গঠনতন্ত্রের ২০ ধারায়ও পার্টির চেয়ারম্যানকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার অসীম ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সম্মেলনে এই গঠনতন্ত্র পাস হওয়ায় এরশাদ এখন প্রেসিডিয়ামের অনুমতি নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তবে এককভাব তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিলে, তা না মানার সুযোগ নেই দলে, এমনটাই মনে করেন নেতা-কর্মীরা।

রওশন জাপার প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান : এইচ এম এরশাদকে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদকে দলটির প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এই পদে তারা সব সময় সন্মানিত থাকবেন। সম্মেলনে পাস হওয়া দলীয় গঠনতন্ত্রে ধারাটি নতুন যুক্ত করা হয়েছে।

নেই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের নতুন পদ : দলের গঠনতন্ত্রের বাইরে ‘অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুইয়াকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব’ নিয়োগ করা হলেও দলীয় গঠনতন্ত্রে পদটি পাস করা হয়নি। ফলে আগের মতোই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলে জাতীয় পার্টিতে নতুন কোনো পদ থাকছে না। রেজাউল ইসলাম সম্মেলনের আগ পর্যন্ত নিজের নামের আগে ‘জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব’ লিখে আসছেন।

নেতাদের শোডাউন : জাতীয় সম্মেলনে দলের মহাসচিবসহ শীর্ষপর্যায়ের নেতারা এলাকা থেকে নেতাকর্মী এনে ব্যাপক শোডাউন করেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা (শ্যামপুর-কদমতলী)  থেকে  শেখ মাসুক, সুজন দে, কাওসার আহমেদ ও ইব্রহিম মোল্লার নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর বিশাল মিছিল সম্মেলনে যোগ দেয়। এ সময় মিছিলটির নেতা-কর্মীরা মঞ্চের দিকে প্রবেশ করতে গেলে হুড়াহুড়িতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

সম্মেলন শুরুর আগে সকাল ১০টার মধ্যে দলের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদারের সমর্থনে বিশাল মিছিল সম্মেলনে যোগ দেয়। এ ছাড়া সম্মেলনে ব্যাপক শোডাউন করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও  ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। বিপুল সংখ্যক নারী কর্মীর মিছিল নিয়ে আসেন মহিলা পার্টির সেক্রেটারি অনন্যা হোসেন মৌসুমী। শোডউন করেন মহিলা পার্টির নেত্রী হেনা খান, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন খোকা, শ্রমিক পার্টির সভাপতি আশরাফুজ্জামান, ছাত্রসমাজের সভাপতি হাসান ও সে্ক্রেটারি মিজানুর রহমান মিরু। এ সব নেতাদের পক্ষে আনা ছবি সম্বলিত বিশালাকার ব্যানার-ফেস্টুন সম্মেলনে নজর কেড়েছে।

বড় রাজনৈতিক দলের নেতা আসেননি : দাওয়াত দেয়া হলেও জাতীয় পার্টির সম্মেলনে আসেননি আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বড় কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা। একমাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী আবুল বাসেত মজুমদার সম্মেলনে অতিথি হিসেবে অংশ নেন এবং বক্তব্য রাখেন। সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এত বড় জাতীয় সম্মেলনে বড় কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা যোগদান না করায় নেতা-কর্মীদের মাঝে চলছে আলোচনা।

সোনালীনিউজ/ ঢাকা/ জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!