• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাকার অভাবে যুবকের ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ আব


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১০, ২০১৬, ১০:২১ পিএম
টাকার অভাবে যুবকের ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ আব

সোনালীনিউজ ডেস্ক

চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি লিখে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু ’ আবেদন করেছে এক যুবক।
ঘটনাটি ঘটে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ইংরেজবাজার এলাকায়।

ভারতের সর্বাধিক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, সুমন দাস নামের ওই যুবক জানায়, এভাবে বাঁচা যায় না। যদি সুস্থ হওয়ার কোনো উপায় খুঁজে না পাই তাহলে আমাকে মৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হোক। পাড়াপড়শীর সঙ্গে কথা বলে সেই আবেদনই জানিয়েছি। যেভাবে হোক মরে যাব। তা হলে মা কাজ করতে পারবে। ভাইটা অন্য রাজ্য থেকে ফিরে এখানে থাকতে পারবে।

খবরে আরও জানা গেছে, সুমন দাস নামে ওই যুবক কাজ করার সময় (১০ অক্টোবর)নিজ কর্মস্থলেই দুর্ঘটনার শিকার হন । এতে তার পিঠের মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে যায়। সেখান থেকে প্রশমে তাকে  মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। পরে সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়।

সুমনের মা আলোদেবী জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি অন্যের বাসায় কাজ করে ২ ছেলে ও ১ মেয়েকে বড় করছিলেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। সুমন ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে  ট্রাকের খালাসির কাজে নেমে পড়ে ।

অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি আরও বলেন, চোখের সামনেই ছেলেটা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। দেখতে পারি না। দিনরাত খালি বলে আমাকে মেরে ফেলো। না হলে সকলে মরবে। এদিকে টাকাও জোগাড় করতে পারছি না।

প্রতিবেশীরা চাঁদা তুলে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা জোগাড় করে সুমনকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যান। সেখানে অস্ত্রোপচারের পরে ‘ফিজিওথেরাপি’ করানোর পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় সুমনকে। টাকার অভাবে নভেম্বরের পর থেকে নিজ এলাকায় আসার পর থেকে আর কোনো চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি।

সংসারের অভাবের কথা ভেবে সুমনের ছোট ভাই এর মধ্যে শ্রমিকের কাজে নেমেছেন। ছোট ছেলের টাকাতেই কোনো রকমে টিকে আছে সংসার।

সুমনের মেরুদণ্ড ঠিক হলেও শিরায় রক্তপ্রবাহ ঠিক না থাকায় তিনি নিজে উঠে বসতে পারেন না। পা নাড়াতে পারেন না।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ভালো ফিজিওথেরাপি হলে এমন রোগীর ভালো হওয়া সম্ভব। তবে তা সময়সাপেক্ষ।’

গত ৪ জানুয়ারি সুমন দাসের চিঠি জেলা প্রশাসক শরদ দ্বিবেদীর অফিসে পৌঁছেছে। শনিবার ওই চিঠির প্রতিলিপি সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দেন সুমনের প্রতিবেশীরা। এরপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

ঘটনায় অস্বস্তিতে মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীও। তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার নজরে আসেনি। তার চিকিৎসার জন্য টাকার অভাব হবে না। তার পরিবার আবেদন করলে সরকারি তহবিল থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাবে। তাতে না কুলোলে পরে দেখা যাবে।

মালদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ব্লকের প্রতিনিধি দলকে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সব কিছু করানো হবে।

 

Wordbridge School
Link copied!