• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিস্তা ব্যারেজে আবারও ফাটল


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৬, ২০১৬, ০৪:৫৪ পিএম
তিস্তা ব্যারেজে আবারও ফাটল

নীলফামারী প্রতিনিধি
দেশের অন্যতম বৃহত্তম সেচ প্রকল্প নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজের একাধিক স্থানে আবারও ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা এটিকে ফাটল না বলে হেয়ার লাইন ক্র্যাক বলছেন।

এর আগে তিস্তা ব্যারেজে ফাটল দেখা দেওয়ায় ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে ব্যারেজের উপর দিয়ে সব ধরনের ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বর্তমানে ওই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্যারেজের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার ও পুলিশ সদস্যরা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মালবোঝাই ট্রাক পারাপারের সুয়োগ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সরেজমিন দেখা যায়, ৫২টি গেটের উপর দাঁড়িয়ে থাকা তিস্তা ব্যারেজের বেশকিছু স্থানে ফাটলের চিহৃ রয়েছে। এর মধ্যে ২, ১৬, ১৭, ১৮, ২৩, ২৪, ২৭ ও ২৮ নম্বর পানিপ্রবাহ গেটের মূল ব্যারেজের উপরিভাগের ফাটলগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় দায়িত্বে নিয়োজিত পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণেই তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে ১০ চাকা ও ৬ চাকার মালবোঝাই ট্রাক চলাচল করত। ব্যারেজের সামান্য ফাটল দেখা দেওয়ায় শুরুতেই ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পরই সন্ধ্যা নামলেই অর্থের বিনিময়ে মালবোঝাই ট্রাক পারাপারের সুযোগ করে দেন কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা।

সুমন ও জাহাঙ্গীরসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, সন্ধ্যা নামলেই এখানে ভারী যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। ভারী যানের শব্দে এখানে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, প্রতিটি ট্রাক থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেন দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ দফতরের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, তিস্তা ব্যারেজের পিলারে স্থাপিত গার্ডারের ওপর বসানো ডেকের এ ফাটলকে হেয়ার লাইন ক্র্যাক বলা হচ্ছে। এখন সে সব ফাটলের আকার আরও বেশি বড় হয়ে সরাসরি ফাটল হিসেবেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ সব ফাটল বুয়েট বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করেই কংক্রিট দিয়ে তড়িঘড়ি করে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

তিস্তা ব্যারেজের দোয়ানি পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান মিজান বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পরিবহন থেকে টাকা নিয়ে পারাপারের কোনো সুযোগ নেই এখানে। আনসার ক্যাম্পের ইনচার্জ জোনাব আলীও টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘তিস্তা ব্যারেজ দেশের জাতীয় সম্পদ। তাই ব্যারেজটি রক্ষায় এর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ গোপনে ভারী যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ব্যারেজে ফাটলের যে চিহ্ন রয়েছে তাকে হেয়ার লাইন ক্র্যাক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যারেজের সকল সমস্যা চিহিৃত করা হয়েছে।’ মেরামতের জন্য ইতোমধ্যেই দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টিতে উদ্বেগের কিছু নেই। এ সব ফাটল ব্যারেজের ডেকে হয়েছে। এগুলো মেরামতের যোগ্য। তাই মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!