• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘দলবল দেখে আদেশ দিই না’


আদালত প্রতিবেদক মে ১৭, ২০১৮, ১০:৫২ পিএম
‘দলবল দেখে আদেশ দিই না’

ঢাকা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের দুই পৃথক আবেদন নিষ্পত্তির পর বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীর রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চাওয়াকে কেন্দ্র করে অনির্ধারিত বিতর্ক প্রত্যক্ষ করেন আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চাইলে সরকারপক্ষে ঘোর আপত্তি তোলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন দৃশ্যত ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এজে মাহমুদ আলীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা দলবল দেখে আদেশ দিই না।’

বিরতির পর বুধবার (১৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় আদালত বসলে এজে মাহমুদ আলী বলেন, জামিননামা দাখিল করতে চাই, তাই ঘোষিত রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চাচ্ছি। এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘উনিতো (খালেদা জিয়া) আরো কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। রায় ঘোষণার পর সংক্ষিপ্ত আদেশের অনুলিপি দেওয়ার নজির নেই।’

ছেড়ে কথা না বলে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির স্বাধীনতা অন্য যেকোনো বিষয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রায়ের পর এক মুহূর্তও কাউকে আটকে রাখা হলে, তা হবে বেআইনি। এ জন্য সংক্ষিপ্ত আদেশ চাচ্ছি।’

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি যা বলেছেন তা আমাদের রুলসে নেই।’ তিনি জানান, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করা হবে। এ সময় বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ঈমান আলী যোগ করেন, ‘এ ধরনের শর্ট অডার (সংক্ষিপ্ত আদেশ) দেওয়ার নজির নেই।’

এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ আপনার (মোহাম্মদ আলী) আবেদন নাকচ করা হলো।’ এর জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী হাইকোর্ট বিভাগের রুলসে শর্ট অডারের বিধানের কথা তুলে ধরলে বিচারপতি ঈমান আলী পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, হাইকোর্টের বিধান আমাদের জন্য (আপিল বিভাগ) কি মানা বাধ্যতামূলক? কিছুটা নমনীয় হয়ে এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি তা বলছি না। আপনারা চাইলে দিতে পারেন।’

এর উত্তরে আদালত এ জে মোহাম্মদ আলীর আবেদন নাকচ করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ পর্যায়ে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ হয়ে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি একা এসেছি, দলবল নিয়ে আসিনি। এর জবাবে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা কেমন কথা। দলবল নিয়ে আসলেই কি আমরা আদেশ দিয়ে দিই। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘দলবল দেখে আমরা আদেশ দিই না।’

চার সদস্যের বেঞ্চের অপর বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর মন্তব্যে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনি গুরুতর আপত্তিকর কথা বলেছেন। আপনি আমাদের ফোর্স করতে পারেন না। আপনারা ভুলে যান যে, আপনারা অফিসার অব দ্য কোর্ট। কোনো দলের লোক নন।’

এ পর্যায়ে সাবেক অ্যাটর্নি এ জে মোহাম্মদ আলী তার বৈরী মন্তব্যের জন্য আদালতের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!