• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
মাহে রমজান

দাম বেড়েছে চিনি ছোলা রসুনের


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৬, ২০১৬, ১১:০২ এএম
দাম বেড়েছে চিনি ছোলা রসুনের

রমজানকে সামনে রেখে আগের কয়েক দিনের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি।

অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজানে একটু ভালো খেতে চায় জনগণ। কিন্তু সরকারিভাবে বারবার তদারকি করার পরও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি যেমন, বিভিন্ন রকমের ডাল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, আলু এসবের দাম গত এক মাসে ধরে ধীরে ধীরে বেড়েছে। রোববার সকালে রাজধানীর বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, রোজার মাসে রোজাদার মুসলমানের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় ছোলার দাম গত একমাস আগে প্রতি কেজিতে ২২ বা ২৫ টাকা হারে বেড়ে গেছে। ৬০ টাকার ছোলা ১ মাস আগে থেকে বাড়িয়ে ৮২ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেসন ৩ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এখন ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একদিনে আলুর ও পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা। খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। আর ব্যবসায়ীরা বলতে শুরু করেছে সবজির ঝাল, খিরায়, বেগুনসহ আরো পণ্যের দাম বাড়বে। তবে ভোজ্য তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া, বাজারে দু’একটি ছাড়া বেশিরভাগ কাঁচাপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারের একজন কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী বলেন, প্রায় প্রতিটি জিনিসের দাম আজ ৩ থেকে ৪ টাকা করে কেজিতে বেশি। অনুরূপ একজন মুদি দোকানদার বলেন, তাদের সব পণ্যের দামও এখন বেশি।

আইন শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই তিনটি পণ্যের মূল্য ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হচ্ছে না।

রোববার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে এক কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা ও দেশি রসুন ১২০ টাকা। কিন্তু মাত্র একমাস আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল ৪৬ টাকা, ছোলা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা ও রসুনের দাম ছিল মাত্র ৮০ টাকা কেজি।

এছাড়া দেশি পেয়াজ খুচরা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, ভারতীয় আমদানি করা পেয়াজ ১৫ থেকে ১৭ টাকা, কাঁচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মশুর ডাল দেশি ভালোটা ১১০ টাকা, আদা ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল ৮২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে খিরা ও শশা ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুন ২০ টাকা এবং খেজুর প্রকারভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসবের পাশাপাশি বাজারে অন্যান্য শাকসবজির দাম প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে।

সূত্রাপুর বাজারের এক ক্রেতা বলেন, রোজা উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এসে দেখি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এখান থেকে একমাস পূর্বে কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের কেজি প্রতি ১৫ থেকে ৪০ দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। শ্যামবাজারের এক দোকানি চিনি, ছোলা ও রসুন ছাড়া বাকি সব জিনিসের দাম প্রায় আগের মতোই রয়েছে বলে দাবি করেন। রোজাকে সামনে রেখে বেশ কিছু দিন আগে থেকেই এই তিনটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি বাজার থেকে কেনার পর কেজিতে ১ থেকে দেড় টাকা লাভে তারা সব পন্য বিক্রি করে থাকেন। তবে রমজান উপলক্ষে আর কোনো পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।

রাজধানীর রায়সাহেব বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, প্রায় এক মাস আগে থেকেই বাজারে চিনির দাম কেজিতে ১৪/১৫ টাকা বেড়ে গেছে। মিল থেকে চিনি সরবরাহ হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পণ্যের সরবরাহ না থাকলে দাম বাড়াটাই স্বাভাবিক। এখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কোনো হাত থাকে না। তবে সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আরেক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি জানান, আসন্ন রমজানে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য চেম্বারের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। এসব সভায় দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানানো হয়। একই সঙ্গে রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায় রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

দায়িত্বপ্রাপ্ত এক মার্কেটিং অফিসার জানান, মাহে রমজানের আগে বা রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের যাতে মূল্য বৃদ্ধি না হয় সেজন্য বাজার মনিটরিং কমিটি নিয়মিত তদারকি করছেন। যে সকল অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী পণ্যের কৃতিম সংকট সৃষ্টি করবে এবং মূল্য বদ্ধি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই পণ্যের যাতে ঘাটতি দেখা না দেয় পর্যাপ্ত পরিবহন হয় সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!