• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দীর্ঘ আয়ু মেলে স্বল্প আঁচে রান্না খেলে


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১, ২০১৬, ০৯:৪৫ পিএম
দীর্ঘ আয়ু মেলে স্বল্প আঁচে রান্না খেলে

সোনালীনিউজ ডেস্ক : খুব ধীরে রান্না করার বিশেষ পদ্ধতি বহুকাল ধরে চলে আসছে। তবে এটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ১৯৭১ সালের দিকে। আমেরিকার কম্পানি রাইভাল ধীরগতিতে রান্নার বিশেষ পাত্র প্রস্তুকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাক্সোন ইউটিলিটিস করপোরেশনকে কিনে নেয়। তারা 'অল পারপাস কুকার'কে আরো উন্নত করে বানায় 'ক্রক পট'। আমেরিকান নারীদের মধ্যে এই পটটি দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বলা হয়, এভাবে খাবার রান্না করে খেলে দীর্ঘায়ু মেলে।

সেলিব্রিটি কনসালটেন্ট সন্ধ্যা গুগনানি বলেন, ধীরে রান্না করা হলে খাবারের ফ্যাট কমে যায়। কাজেই এটা রান্নার স্বাস্থ্যকর উপায়। এ পটে রান্না করতে ঝামেলাও অনেক কম। এতে তেল খুব লাগে। কারণ যথেষ্ট পরিমাণ ময়েশ্চার থাকে। অন্যদিকে, উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হলে অনেক পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রার মাধ্যমে দ্রুত রান্না করা হলে তা খাবারের প্রোটিনেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। কয়েক ধরনের অ্যামাইনো এসিড গুণ হারাতে পারে। কম তাপমাত্রায় ধীর গতিতে রান্না করা হলে খাদ্য উপাদান দেহ সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ করতে পারে।   

দারুণ সুস্বাদু : সেলিব্রিটি শেফ বরুণ রামচন্দ্র জানান, ধীরগতিতে রান্নার মূল বিষয় হলো খুব অল্প তাপে রান্না করা। এই উপায়ে রান্না খাবারের স্বাদ অদ্ভুতভাবে বৃদ্ধি করে। অন্য যেকোনো উপায়ে রান্নার চেয়ে স্লো কুকিং খাবারে স্বাদ বৃদ্ধি করে।

স্বল্প আঁচে রান্না করার কয়েকটি রেসিপি দেয়া হল :

চিকেন বিরিয়ানী 

উপকরণ : বাসমতি চাল ১ কেজি, এক কাপ চালের জন্যে দেড় কাপ পানি, মুরগি ১ কেজি, গরম মসলা পাউডার ২ টেবিল চামচ, আদা বাঁটা ১০০ গ্রাম, রসুন বাঁটা ১০০ গ্রাম, দই ১ কাপ, ১টি লেবুর রস, কাটা টমেটো আড়াই শো গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি আধা কেজি, ছোট আকারের পেঁয়াজ আড়াই শো গ্রাম, কাঁচা মরিচ ৫টা, ধনিয়া পাতা এক গোছা, মিন্ট পাতা এক গোছা, ঘি ১০০ গ্রাম এবং জায়ফল পাউডার এক টেবিল চামচের ৪ ভাগের এক ভাগ।

পদ্ধতি :
১. পানিতে চাল ২ ঘণ্টা ধরে ভিজিয়ে রাখুন।
২. মুরগির সঙ্গে এক কাপ দই ও লবণ মিশিয় আলাদা করে রেখে দিন।
৩. একটি বড় পাত্র ঘি এবং তেল নিয়ে গরম করুন। তাতে পেঁয়াজ ও মরিচ একসঙ্গে দিন।
৪. পেঁয়াজের রং বাদামী হয়ে এলে তাতে আদা ও রসুন বাঁটা দিন।
৫. এতে টমেটো, ধনে পতা ও মিন্ট পাতা দিন। সব ভালোমতো মিশে গেলে তেল আলাদা হয়ে যাবে।
৬. এবার এই মিশ্রণে গরম মসলা এবং জায়ফল পাউডার দিন। আলাদাভাবে রাখা মুরগি দিয়ে দিন।
৭. এবার মুরগি ভালোমতো মিশ্রণে মিশিয়ে নিন। পাত্র ঢেকে দিন।
৮. প্রতি তিন মিনিট অন্তর নেড়ে দিন। এভাবে ৭-৮ মিনিট রান্না করুন।
৯. মুরগি আধা সেদ্ধ হলে তাতে পানি দিয়ে জাল দিন।
১০. এবার যে চাল ভিজিয়ে রেখেছেন তা থেকে পানি ঝরিয়ে নিন। এ চাল পাত্রে ঢেলে দিন।

১১. এভাবে গোটা মিশ্রণ জাল করুন। চাল বাধা সেদ্ধ হলে তাতে লেবুর রস দিন।
১২. এবার চুলার আগুন কমিয়ে ফেলুন এবং টানা ৪৫ মিনিট রেখে দিন।
১৩. কম তাপে রান্না হলে বাড়তি ময়েশ্চার দূর হবে এবং বিরিয়ানির স্বাদ অনেক বেড়ে যাবে।
১৪. প্রতি বিশ মিনিট পর পর পাত্রের ঢাকনা তুলে দেখে নিন।

নিহারি 

উপকরণ : ১ কেজি মাংস, ৩ টেবিল চামচ রিফাইন্ড তেল, ৩-৪টি সবুজ এলাচ, ২ টেবিল চামচ দারুচিনি গুঁড়া, ২টি কালো এলাচ, ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়া, বে লিভস, এক কাপের চারভাগের এক ভাগ পানি, ১ টেবিল চামচ আদা-রসুনের পেস্ট, ১ টেবিল চামচ জিরা, ১ টেবিল চামচ ধনিয়ার গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ লাল মরিচের গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ পেঁয়াজ (কাঁচা ও ভাজা), ৩ টেবিল চামচ ফেটে যাওয়া দই, ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল, ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল, আধা টেবিল চামচ জায়ফল ও এলাচ গুঁড়া, আধা টেবিল চামচ জাফরান, পরিমাণ মতো লবণ।

পদ্ধতি :
১. একটি প্যানে তেল গরম করুন। সবুজ এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, কালো এলাচ এবং বে লিভস দিন।
২. এতে মাংস মেলান এবং হালকা ভাজা ভাজা করুন।
৩. এতে লবণ এবং হলুদের গুঁড়া মেশান।
৪. এবার এতে পানি দিন এবং প্যানটি ঢেকে রান্না হতে দিন।
৫. পানি ফুটতে শুরু করলে তাতে আদা, রসুন, লাল মরিচ, রসুনের পেস্ট এবং পেঁয়াজ দিন।
৬. এগুলো ভালোমতো মিশিয়ে নিন এবং তাতে দই, গোলাপ জল, গরম মসলা, জায়ফল এবং দারুচিনি গুঁড়া ও জাফরান মেশান।
৭. এবার প্যান ঢেকে দিন এবং ২-৩ মিনিট জাল দিন।
৮. এবার প্যান থেকে একটি বড় পাতিলে সব ঢেলে দিন।
৯. ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন।
১০. ঢাকনার চারদিকে ময়দার আঠা দিয়ে সিল করে দিন। চুলোর আগুন হালকা করে দিন।
১১. রান্না শেষ হলে তাকে টাকটা ধনিয়ার পাতা দিয়ে পরিবেশন করুন।

Wordbridge School
Link copied!