• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দৌড়ঝাপে ব্যস্ত বিএনপি নেতারা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১৪, ২০১৬, ১১:৫৪ এএম
দৌড়ঝাপে ব্যস্ত বিএনপি নেতারা

সোনালীনিউজ রিপোর্ট

দলীয় পদ পেতে বিএনপি নেতারা দৌড়ঝাপে ব্যস্ত এখন। পদ পাওয়ার আশায় অনেক নেতাই তদবিরে দিনরাত এক করে ফেলছেন। আগামী ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে ইতিমধ্যে দলের চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় লোকারণ্য হয়ে উঠছে। পদ পদবীর জন্য লবিং তদবির করতে সারাদেশের পাশাপাশি এমনকি বিদেশ থেকেও নেতারা আসছেন। শুধুমাত্র দলীয় প্রধানের কার্যালয়ই নয়, বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের বাসা-বাড়িতে ভিড় লেগেছে। ভিড় জমছে নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও। গত ৭ বছর যেসব নেতারা দলে নিস্ক্রিয় ছিলেন তারা পদ পাওয়ার তদবিরে ব্যস্ত। প্রভাবশালীদের কাছে তারা তাদের অতীতের রেকর্ড, দলের কোন কোন পদে ছিলেন, কি কি করেছেন ওসব আমলনামা নতুন করে তুলে ধরছেন। বিএনপি সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দলে পদ প্রত্যাশী নেতারা বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে প্রতিদিন সাক্ষাতের জন্য লাইন ধরছেন। কেউ সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন, কেউ পাচ্ছেন না। বেগম জিয়া সাক্ষাতকারীদের কথা শুনছেন। কাউকে আশ্বাস দিচ্ছেন তবে অধিকাংশকেই বলছেন দেখবো। বেগম জিয়া দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হওয়ায় অনেকেরই ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর মওকায় তাকে সালাম দেয়া সুযোগ ঘটছে। সাক্ষাতপ্রার্থী নেতাদের কাউকে কাউকে যখন বেগম জিয়া প্রশ্ন করেন- এতোদিন নিস্ক্রিয় ছিলেন কেন? আন্দোলন সংগ্রামে খোঁজ পাওয়া যায়নি কেন? জবাবে অধিকাংশ নেতাই মামলা-হুলিয়া আত্মগোপনে থাকার কথা বলছেন। আবার কোন কোন নেতা বেগম জিয়াকে জানাচ্ছেন তাদেরকে দলে অতীতে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। তাদেরকে উপযুক্ত পদ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিলে তারা কাজ করতে পারবেন।

সূত্র জানায়, পদ পেতে বিএনপি অনেক প্রবাসী নেই বিদেশ থেকে কেউ যাচ্ছেন লন্ডন আবার কেউ আসছেন ঢাকা। বিভিন্ন দেশের প্রবাসী নেতারাও এবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ-পদবী চান। তাদের যুক্তি- ঢাকার নেতাদের অনেকেই যখন দল ও জিয়া পরিবারের সাথে বেঈমানি করেছিল প্রবাসী নেতারা তখন তার প্রতিবাদসহ প্রতিকারের চেষ্টা করেছে। কাজেই প্রবাসী নেতারাও তাদের যোগ্যতা অনুসারে কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ-পদবি আশা করতেই পারেন। তাদের ত্যাগ-কন্ট্রিবিউশন কম নয়। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ই তা প্রমাণিত হয়েছে। কোনো কোনো প্রবাসী নেতা চাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদ। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদের সংখ্যা বাড়ানোর দাবিও প্রবাসী নেতাদের। তাদের মতে- এই পদধারীরা দেশে থেকে কিছুই করেন না। ইউরোপ-আমেরিকা-যুক্তরাজ্যে যোগ্য নেতাদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদ দিলে তারা ব্যাপক কাজ করতে পারবেন। দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে লবিং করতে পারেন। সে সুযোগ দেয়া উচিত। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় বসবাসরত বিএনপির ডাইহার্ট নেতাদের বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদটি দেয়া হলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লবিং করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে। কারণ লবিংয়ের ক্ষেত্রে দলীয় পদবীর পরিচয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দলের বর্তমান প্রতিকূল সময়ে প্রভাবশালী দেশগুলোর সরকারের সাথে যোগাযোগও রাখতে পারেন কেবল দলের প্রবাসে থাকা নেতারা।

সূত্র আরো জানায়, ইউরোপ-আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার কমপক্ষে ১২টি দেশের শতাধিক নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে পদ পেতে লবিংয়ে ব্যস্ত। অনেক নেতাই এখন ঢাকায়। তাদের বেশির ভাগেরই টার্গেট কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদটি। যুগ্ম-মহাসচিবসহ অন্যান্য পদেও আগ্রহী প্রার্থী রয়েছেন। তাছাড়া অনেকেই নিদেনপক্ষে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যও হতে চান। প্রবাসী কোনো কোনো নেতা এখন লন্ডনে আসা-যাওয়ায় আছেন। তারা সেখান অবস্থানরত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের সাথেও সাক্ষাতের চেষ্টা করছেন।

এদিকে বিএনপির হাইকমান্ড ঘনিষ্ঠরা বলছেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে দলের দুঃসময়ে যারা নিস্ক্রিয় ছিলেন, আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখেননি এবং ইতিমধ্যে যাদের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে ওসব নেতাদের কেউই থাকছেন না। ইতিমধ্যে বেগম খালেদা জিয়া দলের মূল পদগুলোতে সম্ভাব্যদের একটি খসড়া তালিকা পেয়েছেন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেটি দীর্ঘদিনের নানা পর্যবেক্ষণ এবং সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে তৈরি করেছেন। তিনি দলের কাউন্সিলে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হবেন। আগামী ১৯ মার্চ সকাল ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে জাতীয় কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!