• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিম্নমানের বিপুল খাদ্যপণ্য নিয়ে বিপাকে সরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৬, ০৬:৪২ পিএম
নিম্নমানের বিপুল খাদ্যপণ্য নিয়ে বিপাকে সরকার

বিশেষ প্রতিনিধি

বিপুল পরিমাণ নিম্নমানের খাদ্যপণ্য নিয়ে সরকার বিপাকে পড়েছে। নিম্নমানের এসব খাদ্যপণ্য একদিকে যেমন বিদ্যমান দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না, অন্যদিকে বেশিদিন গুদামে ওসব খাদ্যপণ্য রাখাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ওসব খাদ্যপণ্য বেশি দিন গুদামজাত থাকলে সরকারের পক্ষে নতুন করে চাল-গম সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে সরকার এখন বাধ্য হয়ে ভর্তুকি দিয়ে ওই খাদ্যপণ্য বিক্রি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। আর পরিকল্পনামাফিক ভর্তুকি দেয়া হলে তার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩০০  কোটি টাকা। মূলত ১৫ লাখ টন চাল, গম ও আটা নিয়ে সরকার এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারের নিম্নমানের যে ১৫ লাখ টন খাদ্যপণ্য রয়েছে তার বেশিরভাগই হচ্ছে চাল। ওই চাল মোটা ভাঙা এবং নিম্নমানের। অনেকদিন ধরেই সেগুলো বিক্রির জন্য গুদামজাত হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই চাল বিক্রির দর ধরা হয়েছে কেজি প্রতি ২০ টাকা। আর গম-আটার দাম কেজি ১৯ টাকা। কিন্তু কেউ ওই দামে সরকারের নিম্নমানের খাদ্যপণ্য কিনতে আগ্রহী হচ্ছে না। বরং ক্রেতারা মনে করছে তারচেয়ে কিছু বেশি টাকা যোগ করলে বাজার থেকে ভালো মানের চাল কেনাই সম্ভব। পাশাপাশি বাজারে প্রচুর পরিমাণ ভারতীয় চালও রয়েছে। যা দামেও বেশি সস্তা।

সূত্র জানায়, সরকারি গুদামে থাকা নিম্নমানের খাদ্যপণ্যগুলো কী করা যায় তা নিয়ে সম্প্রতি সরকারের উচ্চমহলে এক জরুরি বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সরকারি গুদামে রাখা খাদ্যপণ্য দ্রুত বিক্রি করার জন্য বলা হয়। কিন্তু বিদ্যমান দামে ওই খাদ্যপণ্য বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য দাম কমাতে হবে এবং কী পরিমাণ দাম কমাতে হবে তার একটি প্রস্তাবও দেয়া হয়। তাতে বলা হয়- চালের দাম নির্ধারণ করতে হবে কেজি ১৫ টাকা এবং আটার দর হবে কেজি ১৪ টাকা। কিন্তু ওই দামে পণ্য দুটি বিক্রি করা শুরু হলে অসাধু সিন্ডিকেট তা কিনে নেবে। পরে সরকার যখন আবার চাল-গম-আটা সংগ্রহ করতে চাইবে তখন তারাই আবার তা সরকারকে গছিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে। সেজন্য চালগুলো খোলা বাজার (ওএমএস) ও শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের মধ্যে বিক্রি করা যায় কিনা তা ভেবে দেখার কথা বৈঠকে বলা হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, সরকারের হাতে থাকা খাদ্যপণ্যে যদি প্রতি কেজি ১৪ ও ১৫ টাকা দামে বিক্রি করা হয় তবে সরকারকে আনুমানিক ৩০০  কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন হবে। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত সরকারের আরো উচ্চপর্যায়ে নেয়ার প্রয়োজন। এজন্য বৈঠকে স্থির হয় ওই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জানান,  সরকার চাল ও আটা কম দামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে কত দামে বিক্রি করা হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এক্ষেত্রে ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন পড়বে। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!