• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রজন্মের চেতনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২০, ২০১৬, ১১:৫৪ এএম
প্রজন্মের চেতনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

নিসা জান্নাত
ইতিহাস :
বাংলাদেশের ইতিহাসের গৌরবময় সাহসী এক অধ্যায় এদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজ উদ দৌলার পরাজয়ের পর ১৭৫৭ – ১৯৭১ দীর্ঘ এই দুই শতকে বহু বীর বহুবার স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে শত্রুর মুখোমুখি হয়েছে, লড়াই করেছে, শহীদ হয়েছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ জাতি বিজয় ছিনিয়ে আনে, পূরণ হয় দুই শতকের স্বাধীনতার স্বপ্ন। সেই সব সংগ্রামের সাহসী কাহিনী তথ্য চিত্র, আলোকচিত্র এবং ইতিহাসের নানান স্বারকের সমন্বয়ে গড়ে উঠে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আটজন ট্রাস্ট্রি উদ্যোগে ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ সেগুন বাগিচার একটি সাবেকী ভবনে এর দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। এই জাদুঘর জাতির গৌরবদীপ্ত ইতিহাসের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের সম্পৃক্তির মাধ্যমে বিকশিত সমাজ গঠনে প্রেরণা সঞ্চারে সচেষ্ট রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিচালিত হয়।
ট্রাস্টির উদ্যোগে ইতিহাসের স্মারক সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও উপস্থাপনের এই প্রয়াস গোড়া থেকেই ব্যাপক মানুষের সমর্থন ও সহায়তায় ধন্য হয়েছে। বর্তমানে জাদুঘরের সীমিত পরিসরে প্রায় ১৪০০ স্মারক প্রদর্শিত হলেও সংগ্রহভাণ্ডারে জমা হয়েছে ১৫,০০০-এরও বেশি স্মারক। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিরপুরে মুসলিম বাজার ও জল্লাদখানা বধ্যভূমি খননের কাজ সম্পন্ন করে এবং পরে (২০০৮ সালে) জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিপীঠ নির্মাণ করে। ‘মানুষের জন্য ফাউণ্ডেশন’এর অংশীদারিত্বে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস ও মানবাধিকার বিষয়ক প্রদর্শনীর বিশেষ আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের রয়েছে গ্রন্থাগার ও তথ্য ভাণ্ডার এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল সেন্টার। হৃদয় আলোড়িত করা জাদুঘর-প্রদর্শনী ও বিভিন্নমুখি কর্মতৎপরতা দ্বারা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিণত হয়েছে দেশে-বিদেশে নন্দিত প্রতিষ্ঠানে।মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক দেশের প্রথম জাদুঘর।

জাদুঘরের কর্মকাণ্ড :
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইতিহাসের স্মারক সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে যথাযথভাবে উপস্থাপন। এর বিশেষ লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার ইতিহাস বিষয়ে সচেতন করে তোলা, যার ফলে তারা মাতৃভূমির জন্য গর্ব ও দেশাত্ববোধে উদ্দীপ্ত হবে এবং উদার অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী হবে।

আউটরিচ কর্মসূচি :
ঢাকা মেট্রোপলিটান এলাকায় শিক্ষার্থীদের পরিবহন যোগে জাদুঘর পরিদর্শনে নিয়ে আসা হয়। তারা ‘বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র দেখে, গ্যালারি পরিদর্শন করে, কুইজ পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং সবশেষে আলোচনায় মিলিত হয়। আউটরিচ কর্মসূচির যাত্রা সূচিত হয় ১৯৯৭ সালে। এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫০১, শিক্ষার্থী ১,২২,০২১ (ডিসেম্বর ২০১০)।

ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর :
একটি বৃহৎ আকারের বাসের অভ্যন্তরে প্রদর্শনী সাজিয়ে একে পরিণত করা হয়েছে খুদে জাদুঘরে। বাংলাদেশ জুড়ে পরিভ্রমণ দ্বারা বাসটি জেলা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে। ২০০১ থেকে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর বাসটি বিভিন্ন জেলায় যেতে শুরু করেছে। ২০০৩ সাল থেকে বিশেষভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রদর্শনী আয়োজন করেছে। এ-পর্যন্ত ৩২টি জেলার ২০৬ উপজেলায় ৬৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩,৫৫,১৬৩ জন ছাত্রছাত্রী প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। (ডিসেম্বর ২০১০) ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার, শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা’ কর্মসূচির আওতায় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি শিক্ষার্থীর কাছে বিশেষ উপস্থাপনা করে থাকে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের তাদের পরিবার-পরিজন ও প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে যাঁরা একাত্তরের দিনগুলো প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁদের কোনো একজনের অভিজ্ঞতার বিবরণী শুনে তা নিজ ভাষায় লিখে জাদুঘরে প্রেরণ করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ১৬,০০০-এরও বেশী প্রত্যক্ষ্যদর্শী ভাষ্য সংগৃহীত হয়েছে ও তা আরকাইভে সংরক্ষিত হচ্ছে।

জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ :
পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের সহযোগী আলবদর, আলশাম্স দেশব্যাপী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বহু বধ্যভূমি তৈরি করেছিল। এমনি একটি মিরপুরের জল্লাদখানা বধ্যভূমি, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ‘বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ’ গড়ে তুলেছে। একই সাথে এখানে বাংলাদেশের সকল বধ্যভূমি ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গণহত্যার পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

গণহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন :
একাত্তরের ভয়াবহ গণহত্যার বাস্তবতা বিশ্বসমাজের কাছে মেলে ধরা এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচার, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আহরণ ও সহায়তা গ্রহণ ইত্যাদি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে আসছে ২০০৮ সাল থেকে। সম্মেলনে প্রণীত সুপারিশমালা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়।

মুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব :
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর সপ্তাহব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রামাণ্যচিত্র উৎসব আয়োজন করে আসছে। যুদ্ধ, গণহত্যা, মানবাধিকার, শান্তি ও সম্প্রীতি বিষয়ক তথ্যচিত্র এতে প্রদর্শিত হয়। এছাড়া প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

বজলুর রহমান স্মৃতিপদক :
প্রখ্যাত সাংবাদিক প্রয়াত বজলুর রহমান ফাউণ্ডেশনের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বজলুর রহমান স্মৃতিপদক প্রদান চালু করেছে ২০০৮ থেকে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য প্রতিবছর সংবাদপত্রের জন্য একজন এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের জন্য একজনকে এই পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কারের অর্থ-মূল্য এক লক্ষ টাকা।

শান্তি ও সহনশীলতা বিষয়ক এশীয় তরুণদের ক্যাম্প :
২০০৬ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সবরমতী গান্ধী আশ্রম, আহমেদাবাদের সহযোগিতায় সেই ঐতিহাসিক স্থানে যুব ক্যাম্প পরিচালনা করে আসছে। ক্যাম্পে প্রতি বছর বিভিন্ন এশীয় দেশের যুব প্রতিনিধি শান্তি এবং সহনশীলতা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। বিগত দুই বৎসর একই ধারায় বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৩৫ জন যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে বাংলাদেশে বিশেষ শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্বেচ্ছাকর্মী :
জাদুঘরের নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘স্বেচ্ছাকর্মী দল’ গঠন করেছে। স্বতঃর্স্ফূত আন্তরিক ও দক্ষ স্বেচ্ছাকর্মীর দল বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনায় সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখছে।

মুক্তির উৎসব :
আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ঢাকা নগরীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিবছর বিশালভাবে ‘মুক্তির উৎসব’ আয়োজন করা হয়। এতে বিশিষ্টজনেরা যোগ দেন এবং নিবেদিত হয় চিত্তাকর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। র‌্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে দিনভর অনুষ্ঠান শেষ হয়। মুক্তির উৎসব শুরু হয় ২০০১ সালে, প্রতিবছর এতে অংশ নেয় প্রায় ১৫,০০০ কিশোর-তরুণ বয়েসী ছেলেমেয়েরা।

অন্যান্য অনুষ্ঠান :
স্বাধীনতা উৎসব/বিজয় উৎসব/ বইমেলা/ চিত্র প্রদর্শনী/বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎবরণ দিবস/তাজউদ্দীন আহমদ জন্ম দিবস/মিরপুর মুক্ত দিবস/মিরপুর জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ প্রতিষ্ঠা দিবস/শিক্ষক সম্মেলন/ গণঅভ্যুত্থান দিবস/সার্জেন্ট জহুরুল হক দিবস/বিশ্ব মানবাধিকার দিবস/ বিশ্ব জাদুঘর দিবস/বিশ্ব শরণার্থী দিবস/ হিরোশিমা দিবস/বজলুর রহমান স্মৃতিপদক প্রদান ইত্যাদি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক :
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আন্তর্জাতিক জাদুঘর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইট্স্ অব কনসান্স-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব মিউজিয়ামের সদস্য। আইকম-বাংলাদেশের সদস্য।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং কর্মসূচিসমূহের অর্থায়ন :
শুরু থেকেই ট্রাস্টিগণ সাধারণ জনগণের নিকট স্মারক সামগ্রী, আর্থিক অনুদান এবং অন্যান্য সাহায্যের জন্য আবেদন করলে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। যার ফলে সত্যিকার অর্থেই এটি ‘জনগণের জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হয়। ১৯৯৯ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বার্ষিক থোক অর্থ বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে অর্থ সাহায্য করেছে।

আগামী পরিকল্পনা : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ
জমি ও জাদুঘর ভবন : বর্তমানে একটি ভাড়া বাড়িতে জাদুঘরের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্থান-স্বল্পতার কারণে সংগৃহীত স্মারকসমূহ যথাযথভাবে প্রদর্শন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় জাদুঘর ট্রাস্টের অনুকুলে ০.৮২ একর ভূমি বরাদ্দ দেয়। আন্তর্জাতিকমানের সকল সুবিধাসহ একটি আধুনিক জাদুঘর সেখানে নির্মিত হবে। বিগত নভেম্বর ২০০৯-এ উন্মুক্ত স্থাপত্য নকশা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ড মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপত্য-নকশা নির্বাচন চূড়ান্ত করেছে। বর্তমানে জাদুঘর ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।

নির্মিতব্য জাদুঘরের স্থাপত্য-ধারণা :
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উপস্থাপনের জন্য নতুন জাদুঘর ভবনে দুই ধরনের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। একটি স্থায়ী ও অন্যটি পরিবর্তনশীল। স্থায়ী প্রদর্শনীর জন্য গ্যালারির আয়তন হবে সুপরিসর এবং নিয়মিতভাবে অস্থায়ী প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য পৃথক গ্যালারি বা স্পেস থাকবে। মূল স্থায়ী প্রদর্শনীর জায়গায় দুইটি ভাগ থাকবে। প্রথম ভাগের জন্য বরাদ্দ থাকবে ২৫ শতাংশ জায়গা

বাংলার জনপদ ও ঐতিহ্য :
প্রদর্শনীর সূচনায় চুম্বকাকারে বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়া হবে। বাংলার প্রাচীন জনপদ, সভ্যতার বিভিন্ন পর্ব, জাতিসত্তার বিকাশ ইত্যাদি।

ইতিহাসের গতিধারা :
প্রথম পর্ব : ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত উপনিবেশিক পর্ব সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত হবে। এরপর ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১-এর মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানি পর্ব। এবং দ্বিতীয় ভাগের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা (মুক্তিযুদ্ধ পর্ব) বরাদ্দ থাকবে।

মুক্তিযুদ্ধ পর্বে উপস্থাপিত বিষয়সমূহ :

অসহযোগ আন্দোলন ও ৭ মার্চের ভাষণ, গণহত্যা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, প্রথম প্রতিরোধ, উদ্বাস্তু সমস্যা, মুজিবনগর সরকারের প্রতিষ্ঠা, সেক্টর বিভাজন ও সংগঠিত সামরিক প্রতিরোধ, জনযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, সেক্টর ও ব্রিগেড কম্যাণ্ডারদের অধীনে সশস্ত্র যুদ্ধ, নৌকমাণ্ডো, বিমান বাহিনীতে বিমানযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার, গণমাধ্যম, সামরিক প্রশিক্ষণ ও শিবির, মুক্ত এলাকা, আন্তর্জাতিক সংহতি, দেশীয় দালালদের ভূমিকা, রাজাকারবাহিনী, শান্তিকমিটি ও আলবদর বাহিনী, বঙ্গবন্ধুর প্রহসনের বিচার, দেশের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ, নারীদের ভূমিকা, নারী নির্যাতন, যৌথ বাহিনী গঠন ও ডিসেম্বরের চূড়ান্ত লড়াই, মিত্রবাহিনীর ভারতীয় সদস্যদের আত্মদান, বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং বিজয়।

জাদুঘরের প্রদর্শনীতে ইতিহাসের মূলধারার পাশাপাশি ব্যক্তিমানুষের জীবন ও আত্মদানের পরিচয় মেলে ধরা হবে বিশেষ গুরুত্বসহকারে।

জাদুঘরের প্রদর্শনী শেষে আত্মোপলব্ধি বা ভাবমগ্নতার পরিসর সংযোজিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিশেষভাবে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন আধুনিক উপায় বা সুযোগ সমন্বিত রাখা হবে এবং সেই সাথে অডিও-ভিজ্যুয়াল তথা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা বিভিন্নভাবে গ্যালারির ভিতরে সংযোজিত থাকবে।

ট্রাস্ট্রিবৃন্দ :
    আলী যাকের: নাট্য ব্যক্তিত্ব ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ
    রবিউল হুসাইন : স্থপতি এবং কবি
    মফিদুল হক : লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী
    আসাদুজ্জামান নূর : সংসদ সদস্য, নাট্যব্যক্তিত্ব ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ
    সারা যাকের : নাট্যব্যক্তিত্ব ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ
    জিয়াউদ্দীন তারিক আলী : প্রকৌশলী ও সমাজকর্মী
    আক্কু চৌধুরী : চিত্রকলা বিশ্লেষক, সংগ্রাহক এবং কর্পোরেট ব্যবস্থাপক
    ডা. সারওয়ার আলী : সাবেক বিএমএ মহাসচিব এবং কর্পোরেট ব্যবস্থাপক


অবস্থান :
৫, সেগুন বাগিচা, ঢাকা – ১০০০। শিল্পকলা একাডেমি থেকে দুই-তিন মিনিটের পায়ে হাঁটার দূরত্বে এটি অবস্থিত।

পরিদর্শনের সময়সূচি :
    মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শনের সময়সূচি গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল এই দুই ভাগে নির্ধারণ করেছেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
    গ্রীষ্মকাল: সোমবার থেকে শনিবার, সকাল ১০.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
    শীতকাল: সোমবার থেকে শনিবার, সকাল ১০.০০ টা থেকে বিকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
    রবিবার জাদুঘর বন্ধ থাকে।
    জাদুঘর পরিদর্শনের জন্য দর্শনার্থীরা সাধারণত শুক্রবার ও শনিবার বেশী ভিড় করে। এছাড়া ১লা বৈশাখ, ২৬ শে মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর, ১৭ই মার্চ, ১৫ই আগষ্ট এসব দিনগুলোতে ভিড় হয়। সাধারণত সকল শ্রেণীর লোকজন জাদুঘর পরিদর্শনে আসে।

টিকেট সংক্রান্ত তথ্য :
    জাদুঘরে প্রবেশের জন্য কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। প্রধান গেইটের বাম পাশে জাদুঘরের কাউন্টারটি অবস্থিত। টিকেট মূল্য ৫ (পাঁচ) টাকা। তবে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা বিনামূল্যে জাদুঘরে প্রবেশ করতে পারবে।
    জাদুঘরে প্রবেশের জন্য দর্শনার্থীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্র কাউন্টারে জমা রাখতে হয়।


তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া

 

Wordbridge School
Link copied!