• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১, ২০১৬, ০৭:০৫ পিএম
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্

সোনালীনিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের শিক্ষা-ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি বলেছেন, ‘সেখানে শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারী প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার কী মান ছিল, আজকে আমরা কোথায় চলে যাচ্ছি ?’

 

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘এই সর্বোচ্চ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে দু-একটি কথা বলতে চাই। সেটা হলো, আমাদের শিক্ষা-ব্যবস্থা, শিক্ষার মান। আমাদের এই যে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেখানে শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারী প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। আমরা এই রকম একটা প্রতিষ্ঠানকে কী রক্ষা করতে পারব?’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে একটা ব্যবসা হিসেবে পরিণত করেছি। এই প্রতিষ্ঠানটা একটা মহান বিদ্যাপীঠ। আমার মহান বিদ্যাপীঠের সম্মানিত (অনারেবল) শিক্ষক যাঁরা; এই শিক্ষকেরা এখন নিজ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়ার চেয়ে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নেওয়ার জন্য ঝুঁকে যান। আমার এই কথা শুনলে অনেকে অখুশি হবেন। কারণ যখন দেখি একজন ছেলে বা মেয়ে এই প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে আইন পেশায় যায়, তখন তাকে একটার বেশি দুটি প্রশ্ন করলে তার মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না। খুবই কষ্ট লাগে।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার আলো জ্বালাতে হলে গুরুজনদের যেভাবে আমরা শ্রদ্ধা করতাম, এটা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ—তাঁদের কাছে অনুরোধ করব, গুরুজন হিসেবে আন্তরিকতার সঙ্গে আমরা যেটা শিক্ষা পেয়েছি, সেই শিক্ষা তাদের দেওয়ার জন্য।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৯৭১ সালে জগন্নাথ হলে যত রক্ত ঝরেছে, আর কোনো হলে এত রক্ত ঝরেনি। মুক্তিযুদ্ধের কিছু কাগজপত্র আমাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল। সেখানে দেখেছি কী মর্মান্তিক, নৃশংসভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। তাঁদের রক্ত যদি না ঝরত, তাহলে হয়তো আমরা এত তাড়াতাড়ি স্বাধীনতা পেতাম না। তাঁদের প্রতি রইল আমার গভীর শ্রদ্ধা।’ দেশের প্রতিটি আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ হলের যেসব শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরেছে, তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতি।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘বাঙালি জাতি এখন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-প্রযুক্তি, অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়ন যাত্রা কেউ পরাভূত করতে পারবে না। আমরা যে যেখানে থাকি না কেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাব।’
একই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত শত্রু সম্পত্তি আইন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি সরকারসংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘খালি মুখে অসাম্প্রদায়িক আর কাজে অন্য কিছু করলে তো চলবে না। এই জায়গায় আরও সততা, আরও নিষ্ঠা আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে। এই কথাটি বলতে চাই। বলতে বলতে বলা শেষ হয়েছে। এখন রাস্তায় নামতে হবে। নামতে চাই।’
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কানুতোষ মজুমদারের সভাপতিত্বে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক অজয় রায়, আওয়ামী লীগের নেতা অসীম কুমার উকিল, বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জগন্নাথ হলের বিভিন্ন ব্যাচের অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পুনর্মিলনীতে যোগ দেন। পুনর্মিলনীর প্রথম পর্বে আলোচনা সভা এবং দ্বিতীয় পর্বে সংগীতানুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

Wordbridge School
Link copied!