• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি 


রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭, ০৬:৪০ পিএম
বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি 

ঢাকা: বাংলাদেশ দল ২০১৭ সালটা শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ডে। অবশ্য তার আগেই স্বাগতিকদের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হেরে বসে মাশরাফি বিন মুর্তজার  দল। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হেরে যায় বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারলেও ওয়েলিংটন টেস্টে পাঁচ দিনের চারদিনই ম্যাচে ছিল মুশফিকুর রহীমের দল। প্রথম ইনিংসে বড় স্কোর তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। 

প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান সাকিব আল হাসান। ১৫৯ রানের কার্যকরি এক ইনিংস খেলেন মুশফিক। এই টেস্ট বাংলাদেশ হয় জিতবে নয়তো ড্র করবে, হারার কথা কেউ ভাবেনি। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতায় শেষ দিনে বাংলাদেশের লক্ষ্য টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে চোট জর্জর বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তিন সংস্করণের সবগুলো ম্যাচ হেরে শেষ হয় বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর। 

টেস্টের কুলিন পরিবারে ঢোকার প্রায় ১৭ বছর পর বাংলাদেশ প্রথমবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে ২০১৭ সালে। হায়দরাবাদে একমাত্র টেস্টটিতে বিরাট কোহলির ডাবল, মুরালি বিজয় আর ঋদ্ধিমান সাহার সেঞ্চুরিতে ৬৮৭ রানের বিশাল সংগ্রহ জড়ো করে ভারত। ১২৭ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। ২০৮ রানে হারলেও ম্যাচটি পাঁচ দিনে টেনে নিয়ে যেতে পারাটাই ছিল বাংলাদেশের প্রাপ্তি। 

শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে গল টেস্ট হেরে বসে বাংলাদেশ। তবে কলম্বোতে নিজেদের ১০০ তম টেস্টে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় মুশফিকের দল। বড় অবদান রাখেন সাকিব, তামিম ও মোস্তাফিজুর রহমান। সেই ধারাবাহিকতা বাংলাদেশ টেনে আনে ওয়ানডে সিরিজেও। ডাম্বুলায় প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নেয় মাশরাফিরা। সেখানেই দ্বিতীয় ম্যাচটি চলে যায় বৃষ্টির পেটে। 

অবশ্য তৃতীয় ম্যাচটি জিতে সিরিজে ১-১ এ সমতা ফেরায় শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে বসে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচের আগে আচমকাই টি-টোয়েন্টিতে অবসরের ঘোষণা দেন মাশরাফি। অবশ্য সতীর্থরা অধিনায়ককে বিদায়ী ম্যাচে জয়ই উপহার দেন। ফলে টেস্ট, ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজও শেষ হয় সমতায়।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে র্যাংকিংয়ের ৬ নম্বরে থেকে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যায় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতে মাশরাফিরা। ফাইনালে বাংলাদেশ পর্যদস্তু করে নিউজিল্যান্ডকে। সেই আত্মবিশ্বাসই বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডে।  

উদ্বোধনী ম্যাচে ইংলিশদের কাছে হার দিয়ে শুরু। বৃষ্টির বাগড়ায় শেষ হতে পারেনি বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ। এখান থেকে পাওয়া পয়েন্টটি বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। যদিও কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই জয়টি বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না। ২৬৬ রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুকছিল বাংলাদেশ। 

কিন্তু সাকিব-মাহমুদউল্লাহর পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের জুটি অবিশ্বাস্যভাবে ৪ উইকেটের জয় এনে দেয়। সাকিব-মাহমুদউল্লাহ দুজনই সেঞ্চুরি তুলে নেন। অথচ এই ম্যাচের আগেও সাকিবের পারফরম্যান্স নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছে। ব্যাট-বলের পারফরম্যান্সের ঘাটতির জেরে সাকিবকে বাদ দেয়ারও চিন্তা করা হয়েছিল! কিন্তু চ্যাম্পিয়নরা যে ফিরে আসতে জানে সেটি আরও একবার বুঝিয়েছেন সাকিব। প্রথমবার আইসিসির কোন প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। যেখানে ভারতের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে। তারপরও এই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে যাওয়াটাই ছিল বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি। 

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর অনেক তালবাহানার পর বাংলাদেশে  আসে অস্ট্রেলিয়া। মিরপুরে প্রথম টেস্টেই হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। সাকিব-তামিমের ফিফটি ছাড়ানো ইনিংসের পর তিন স্পিনার সাকিব, তাইজুল আর মিরাজের সামনে তারা অসহায় আত্মসমর্পণ করে। এই তিন স্পিনার মিলে তুলে নেন ১৯ উইকেট। এই ম্যাচটির শেষের দিকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী হাজির ছিলেন। চট্টগ্রামে ড্র করলেই সিরিজ জিততে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু নাথান লায়নের স্পিনের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মুশফিকরা।  

সেপ্টেম্বরে চার সপ্তাহের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বাজে। তিন সংস্করণের সিরিজে একটিতে জয় তো দূরের কথা হেরেছে দৃষ্টিকটুভাবে। অধিনায়ক মুশফিক সংবাদ সম্মেলনে বোলারদের কড়া সমালোচনা করেছেন। শুধু তাই নয়, টিম ম্যানেজম্যান্টের গোপন অনেক কথাই ফাঁস করেছেন। ঘটনাবহুল এই সফরের পরই বিসিবির কাছে পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।  

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই/জেএ

Wordbridge School
Link copied!