• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপিকে চাপে রাখতে কৌশলী ক্ষমতাসীনরা


বিশেষ প্রতিনিধি মার্চ ১৩, ২০১৮, ১১:৩০ এএম
বিএনপিকে চাপে রাখতে কৌশলী ক্ষমতাসীনরা

ঢাকা : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে নির্বাচনী লড়াইয়ের ময়দানে চাপে রাখতে কৌশলী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রাক-নির্বাচনী পর্ব থেকে নির্বাচনকাল- পুরো সময়কে সামনে রেখে নানা ছক কষতে শুরু করেছে শাসক দল। এই ছকের পরিধি মাঠে-রাজপথে উভয় ক্ষেত্রজুড়ে।

মূল লক্ষ্য বিএনপিকে নানামুখী চাপের মুখে আবদ্ধ রেখে দলকে নির্বাচন-সক্ষমতা অর্জনে অনায়াসে গুছিয়ে ওঠার সুযোগ না দেওয়া। এরই মহড়া ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে দলের ঘোষিত পর্যায়ক্রমিক আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো শক্ত হাতে সামাল দিচ্ছে।

বিএনপির ওপর সরকারের এমন বৈরী মনোভাব সম্পর্কে আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি নেতারা মুখে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা বললেও তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য আলাদা। খালেদা জিয়ার কারামুক্তি তাদের উদ্দেশ্য নয়, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন ভুণ্ডল করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারের কাছে তথ্য আছে, জুন-জুলাই থেকে তারা আন্দোলনের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় মাঠে নামবে। এখন যা করছে তা নিছক লোক দেখানো। কিন্তু সরকার এবার আর কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চায় না।

তিনি আরো বলেন, আমরা চাই না দলটি দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করুক। তাই রাজপথে তাদের কোনো আন্দোলনে আমরা ছাড় দেব না। জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব সরকারের। এই ইস্যুতে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারটা সম্পূর্ণভাবে আদালতের এখতিয়ার। আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা এখন বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন ও সমাবেশের ডাক দিচ্ছে, এটাও তো আদালত অবমাননার শামিল। আদালতের বিরুদ্ধে তো তারা আন্দোলন করতে পারে না। এটা তো অন্যায়। এটা তো সরকারের সিদ্ধান্ত নয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায়ে দণ্ডিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। অনশন, অবস্থান, মানববন্ধন, কালো পতাকা প্রদর্শন, গণস্বাক্ষর, লিফলেট বিতরণের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে তারা।

তবে, অবস্থান কর্মসূচি ও লিফলেট বিতরণের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও নেতাকর্মীদের আটকের মধ্যে দিয়ে সরকার তার কঠোর মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দেখা গেছে। রাজপথের আন্দোলনের কর্মসূচিতে দাঁড়াতেই দেওয়া হচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের। পুলিশি বাধার মুখে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির এসব কর্মসূচি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ সারা দেশে বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে কর্মসূচি চলাকালে আটক করা হয়েছে।

বিএনপি অহিংস আন্দোলনের পথে থাকলে সরকার নিশ্চয়ই গণতান্ত্রিক আচরণই করবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ তার ভাষায় বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে। সরকার তা মোকাবেলা করার চেষ্টা করবে, এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে বিএনপি যেকোনো সময় সহিংস আচরণ করতে পারে। তবে বিএনপির এ আন্দোলন বা হুমকি-ধমকি নিয়ে সরকার কিছু ভাবছে না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!