• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে আ. লীগ


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১২, ২০১৬, ১১:৩১ এএম
বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে আ. লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি

রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে আমলে না নিলেও দলটির আসন্ন কাউন্সিলে কেমন নেতৃত্ব আসেন তা পর্যবেক্ষণ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভাইস-চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন। অন্য পদে কেমন নেতৃত্ব আসে তা দেখার অপেক্ষায় ক্ষমতাসীনরা। ’রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে’ আয়োজিত কাউন্সিলে দুর্বল বিএনপি কতখানি সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে উঠতে পারে তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে আওয়ামী লীগের ভেতরে। কারণ,আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রতিপক্ষ এখনও বিএনপিই।আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকমণ্ডলীর অন্তত ৫ জন নেতা বিএনপির সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করছেন বলে বাংলা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি-নির্ধারণী নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তারা প্রকাশ্যে বিএনপির সম্মেলন নিয়ে কথা বলতে না চাইলেও সম্মেলনের মধ্যদিয়ে বিএনপি সত্যিই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারে কি-না তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। দুর্বলতা কাটানোর মতো নেতৃত্ব আসলে আওয়ামী লীগের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে-তা নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারম্যান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেছেন। এটি পর্যবেক্ষণেরই অংশ।

নেতারা জানান, বিএনপির সম্মেলন ও নেতৃত্ব দেখে দলটিকে মোকাবেলা করার জন্য আওয়ামী লীগও যুৎসই রাজনৈতিক কৌশল ঠিক করবে। তার আগে সম্মেলনের মধ্যদিয়ে বিএনপি কতখানি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পেতে চায় আওয়ামী লীগ। আগামী ১৯ মার্চ বিএনপির কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপির সম্মেলনে জামায়াত প্রীতি রয়েছে এমন কতজন নেতা দলটির পদ-পদবি পেতে পারেন সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন ক্ষমতাসীনরা। তাহলে বিএনপিকে ঘায়েল করার অন্যতম হাতিয়ার থাকবে আওয়ামী লীগের হাতে। কারণ নতুন প্রজন্ম এখন জামায়াতকে ঘৃণা করে। ইতঃপূর্বে জামায়াত প্রীতিই বিএনপিকে রাজনীতিতে দুর্বল করেছে। কারণ, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধীরে ধীরে সমুন্নত হতে চলছে। সম্পাদকমণ্ডলীর বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, বিশেষ করে জামায়াত প্রীতি রয়েছে এমন নেতা বিএনপিতে দায়িত্ব পেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সুযোগ প্রসারিত হবে। আর বিএনপি জামায়াত প্রীতির বাইরে কোনো নেতাকে বিএনপিতে রাখবেন না এমনটি মনে করে না আওয়ামী লীগ। তাছাড়া তারেক রহমানের প্রভাব কতখানি থাকে, আন্তর্জাতিক ‘লবি’ রক্ষা করে এমন নেতা কারা আসতে পারেন, পাকিস্তান ‘প্রেসক্রিপশন’ কতখানি পালন করে বিএনপি এবং মহাসচিব পদে কাকে বসানো হয় এসব বিষয় আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। 

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদধারী নেতারা বলেন, বিএনপির সম্মেলন শেষ হলে দলটিকে মোকাবেলা করার জন্যে নতুন কৌশল গ্রহণ করবে ক্ষমতাসীনরা। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা করার দায়িত্ব কার উপর অর্পণ করা হয় সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে আওয়ামী লীগ। সরকার ও দলের নেতারা মনে করেন, বিএনপির রাজনীতি নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কোন্নয়নের উপর। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এখন বিএনপির অবস্থান একেবারেই শূন্যের কোটায়। তাই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন করার মতো বিএনপিতে কোন ডায়নামিক নেতা এ দায়িত্ব পাক তা চায় না শাসক দল।

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কয়েকজন নেতা বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের দায়িত্ব পাক তা চায় ক্ষমতাসীনরা। তাহলে বিএনপিকে গোপনে নিয়ন্ত্রণ করার মত সুযোগ থাকবে আওয়ামী লীগের।

সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপি বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। তাদের কর্মকাণ্ড আওয়ামী লীগ পর্যবেক্ষণ করবে-এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া, বিএনপি আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে ষড়যন্ত্র করেই চলেছে। তাই তাদের মোকাবেলা করার জন্যে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায়ে রাখার স্বার্থে বিএনপির কার্যক্রম আওয়ামী লীগ নজরে রাখতে চায়।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজি জাফরউল্যাহ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সম্মেলনকে নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন মাথাব্যথা নেই। তবে আমরা চাই,বিএনপিতে সঠিক নেতৃত্ব আসুক।তিনি বলেন, বিএনপির মত একটি বড় রাজনৈতিক দল ভুল নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাক আমরা তা চাই না।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমরা ভাববো কেন? বিএনপির প্রতি মানুষের কোনও আস্থা-বিশ্বাস নেই। তিনি বলেন, জনগণ দেখেছে, কিছুদিন আগে বিএনপির শীর্ষ দু’টি পদে মা-ছেলে দুই আসামি আসীন হয়েছেন। এতে জাতি আরও হতাশ।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!