• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশি ঋণ পরিশোধের হার এক বছরে ১৯ শতাংশ কমেছে


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬, ০৮:৪০ পিএম
বিদেশি ঋণ পরিশোধের হার এক বছরে ১৯ শতাংশ কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বিদেশি উৎস থেকে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া ঋণ পরিশোধের হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ঋণের সুদসহ কিস্তি বাবদ ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ কম। তবে পাইপলাইনে আটকে থাকা বিশাল অংকের বিদেশি ঋণ ছাড় করা শুরু হলে তখন ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে যাবে বলে অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত মনে করেন। তবে বিদেশি ঋণের তুলনামূলক কম খরচ ও পরিশোধে সরকারের সক্ষমতা বাড়ায় তাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে তার মত। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ অর্থ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১০০ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের ঋণ-সহায়তা ছাড় করেছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে নেয়া ঋণের সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এ হিসাবে নিট বিদেশি ঋণ-সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৯৯ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ ছাড় হয়। ওই সময়ে সরকারের ঋণের কিস্তি পরিশোধ ছিল ৪৭ কোটি ১১ লাখ ডলার। সে হিসাবে ওই সময়ে নিট ঋণ-সহায়তার পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বিদেশি ঋণ-সহায়তার ছাড় বেড়েছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ; আর নিট ঋণ-সহায়তা বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি। জায়েদ বখত বলেন, বিশ্ব ব্যাংক, এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার আটকে থাকা ঋণ যখন ছাড় হবে তখন কিন্তু সুদ পরিশোধ বেড়ে যাবে। তবে তাতে সমস্যা হবে না উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পাইপলাইনের ঋণগুলো ছাড় করতেই সরকারকে এখন সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। মেট্রোরেলসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এখন যত বেশি ঋণ-সহায়তা আসবে ততই ভালো। সরকার দেশের উন্নয়নে সে অর্থ ব্যয় করতে পারবে। দাতাদের অর্থে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে খরচ অনেক কম পড়ে, সুদের হার কম। সরকারের সুদ পরিশোধের সামর্থ্যও বেড়েছে। বাজেটেও এজন্য বরাদ্দ রাখা আছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও বিদেশি ঋণ-সহায়তা বৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান জায়েদ বখত। পাইপলাইনে থাকা ঋণ-সহায়তা ছাড়ের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক হলে দাতাদের অর্থ ছাড়ের পরিমাণ আরও বাড়তো। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা মিলে ৩১০ কোটি ২২ লাখ ডলার ছাড় করে, যার মধ্যে আগের নেয়া ঋণের সুদ বাবদ চলে যায় ৯০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। তখন নিট ঋণ-সহায়তা ছিল ২২০ কোটি  (২ দশমিক ২ বিলিয়ন) ডলার। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৯৯-০০ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি ঋণের পরিমাণ (আগের দেনা পরিশোধের পর হাতে থাকা অর্থ) ছিল ১১৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০০০-০১ অর্থবছরে তা কমে ৯৫ কোটি ২৩ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০০১-০২ ও ২০০২-০৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১০১ কোটি ৯৮ লাখ ও ১১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে তা ৬১ কোটি ৩ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ১০১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এবং ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ১০৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলার ছিল সরকারের হাতে। আগের অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৯৯ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ ছাড় হয়। ওই সময়ে সরকারের ঋণের কিস্তি পরিশোধ ছিল ৪৭ কোটি ১১ লাখ ডলার। সে হিসাবে ওই সময়ে নিট ঋণ-সহায়তার পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বিদেশি ঋণ-সহায়তার ছাড় বেড়েছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ; আর নিট ঋণ-সহায়তা বেড়েছে ১৯ শতাংশের বেশি। জায়েদ বখত বলেন, বিশ্ব ব্যাংক, এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার আটকে থাকা ঋণ যখন ছাড় হবে তখন কিন্তু সুদ পরিশোধ বেড়ে যাবে। তবে তাতে সমস্যা হবে না উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পাইপলাইনের ঋণগুলো ছাড় করতেই সরকারকে এখন সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। মেট্রোরেলসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এখন যত বেশি ঋণ-সহায়তা আসবে ততোই ভালো। সরকার দেশের উন্নয়নে সে অর্থ ব্যয় করতে পারবে। দাতাদের অর্থে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে খরচ অনেক কম পড়ে, সুদের হার কম। সরকারের সুদ পরিশোধের সামর্থ্যও বেড়েছে। বাজেটেও এজন্য বরাদ্দ রাখা আছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও বিদেশি ঋণ-সহায়তা বৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান জায়েদ বখত। পাইপলাইনে থাকা ঋণ-সহায়তা ছাড়ের ব্যাপারে সরকার আন্তরিক হলে দাতাদের অর্থ ছাড়ের পরিমাণ আরও বাড়তো। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা মিলে ৩১০ কোটি ২২ লাখ ডলার ছাড় করে, যার মধ্যে আগের নেয়া ঋণের সুদ বাবদ চলে যায় ৯০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। তখন নিট ঋণ-সহায়তা ছিল ২২০ কোটি  (২ দশমিক ২ বিলিয়ন) ডলার। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৯৯৯-০০ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি ঋণের পরিমাণ (আগের দেনা পরিশোধের পর হাতে থাকা অর্থ) ছিল ১১৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০০০-০১ অর্থবছরে তা কমে ৯৫ কোটি ২৩ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০০১-০২ ও ২০০২-০৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১০১ কোটি ৯৮ লাখ ও ১১৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে তা ৬১ কোটি ৩ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ১০১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এবং ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ১০৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলার ছিল সরকারের হাতে। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে দেশে নিট বিদেশি সাহায্য আসে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। ২০০৭-০৮ অর্থবছর ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এসেছিল যথাক্রমে ১৩৭ কোটি ৬৫ লাখ এবং ১০২ কোটি ২৮ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি উৎস থেকে মোট ১৮ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকার ঋণ-সাহায্য আসবে বলে ধরা হয়েছে, যার ৫ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা বিভিন্ন সময়ে নেয়া ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে বলে ধরেছে সরকার। এই হিসাব ঠিক থাকলে দেনা বাদ দিয়ে সরকারের হাতে থাকবে ১৩ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে ৩২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ আসবে বলে ধরা হয়েছে। আর আগের নেয়া ঋণের শোধের জন্য রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে নিট বিদেশি সাহায্যের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!