• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভিনগ্রহবাসীর হাতে অপহরণ!


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৩০, ২০১৬, ০৫:৪৯ পিএম
ভিনগ্রহবাসীর হাতে অপহরণ!

আজ থেকে ৪১ বছর আগের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা অধিবাসী এক ব্যক্তি দাবি করেছিলেন যে ভিনগ্রহবাসীদের একটি মহাকাশযানে তাকে কয়েকদিনের জন্য নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে আবার ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়। অপহৃত বলে দাবি করা ট্রাভিস ওয়ালটনের ভাষ্য মতে, তাকে ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর তারিখে অপহরণ করা হয়েছিল। ট্রাভিসের আগে আরও অনেকেই ভিনগ্রহবাসীদের মহাকাশযান দেখতে পাবার দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু ট্রাভিসই প্রথম ব্যক্তি যিনি দাবি করেন যে তার সঙ্গে ভিনগ্রহবাসীদের সাক্ষাত হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে তিনি পাঁচদিন কাটিয়েছেন। ট্রাভিসের মতে, ভিনগ্রহবাসীরা তাকে নিয়ে যাবার পর সর্বপ্রথম কানের পেছনে কিছু একটা প্রতিস্থাপন করেন এবং আবার যখন ফিরিয়ে দিয়ে যান তখন সেই বস্তুটি তুলে নেয়। ভিনগ্রহবাসীরা তাকে পশুর মতো করে দেখেছিল বলেও তার দাবি।

ভিনগ্রহবাসী ও তাদের ব্যবহৃত উড়োযান নিয়ে আমেরিকানদের বিশ্বাসের কমতি নেই। আর এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কিছু ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি বের হচ্ছে একটি ফটোবুক, যার নাম রাখা হয়েছে ‘ফেনোমেনা’ বা ‘ইন্দ্রিয়গোচর/ঘটনা’। ডেনমার্কের আলোকচিত্রী পিটার হেলেস এরিকসন, সারা গালবিয়াতি এবং তোবিস সেলনাস মারকুসেনের যৌথ অংশগ্রহনে তৈরি করা হচ্ছে এই ফটোবুক। গালবিয়াতির ভাষ্যে, ‘আমাদের প্রত্যেকেরই এখানে স্বার্থ আছে। আমরা এই বিষয়টাতে বিশ্বাস করি বলেই নয় শুধু আরও অনেকের কথা আমাদের ভাবতে হয়েছে যারা এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্বাস করেন। অনেকক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রচলিত বিশ্বাসের তুলনায় তারা এখনও সংখ্যালঘু।’
ট্রাভিস ওয়ালটন

ফটোবুকের সবগুলো ছবিই যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা অঙ্গরাজ্য, নিউ মেক্সিকো, এবং নেভাদার এরিয়া ৫১’তে তোলা হয়েছ। এই এরিয়া ৫১ এর খবর বিশ্ববাসীতো দূরের কথা, খোদ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষই দীর্ঘদিন জানতো না। কিছু গবেষক তাদের লেখার মধ্যে এরিয়া ৫১’এর কথা উল্লেখ করতে থাকেন। কিন্তু তখনও এই এরিয়া ৫১’কে কল্পিত বলা হতো মার্কিন প্রশাসনের তরফ থেকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর আগে এই প্রকল্পের কথা স্বীকার করে মার্কিন প্রশাসন এবং তারা এও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, এই প্রকল্পে ভিনগ্রহবাসীদের নিয়ে গবেষণা করা হয়।

নিজেদের কাজের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরতে হয়েছে তাদের। পাশাপাশি যে সকল অঞ্চলে এই ভিনগ্রহবাসীদের যান বা ‘ইউএফও’ দেখা গিয়েছিল, সেই স্থানগুলোও তাদের ঘুরতে হয়েছে। তেমনি একটি স্থান হলো ফনিক্স। ১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ তারিখে এই অঞ্চলের মানুষ আকাশে ইউএফও দেখতে পেয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এবিষয়ে গালবিয়াতি জানান, ‘ডেনমার্ক অথবা ইউরোপে বিষয়টি এখনও একটা ট্যাবুর মতো। যদি আপনি ইউএফও দেখতে পান তবে সেটাই হবে আপনার জীবনের সেরা গোপনীয়তা। এটা এমন কোনো বিষয় নয় যা নিয়ে আপনি বাইরে কথা বলবেন। কারণ অধিকাংশ মানুষই ভাববে যে আপনি পাগল গোছের কেউ। কিন্তু আমেরিকায়, বিশেষত যে স্থানগুলোতে আমরা গিয়েছি সেখানে দেখেছি তাদের ইউএফও বিশ্বাসটা অনেকটা ধর্ম বিশ্বাসের মতো। আপনি যদি বিশ্বাস করেন তবেই তারা আপনার সঙ্গে কথা বলবেন নচেৎ নয়।
ভিনগ্রহবাসী প্রাণীর পায়ের ছাপ

এমন অনেক মানুষের দেখা পেয়েছেন তারা, যারা তাদের বাসায় তাদের প্রবেশ করতে দিয়েছে এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছে। এমন অনেকের সঙ্গেই তাদের কথা হয়, যারা খুবই উদারভাবে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই বিশ্বাস নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো হাসি তামাশা করতে দেখা যায়নি। এক কথায়, ইউএফও তাদের কাছে একটা ধর্মীয় বিশ্বাসের মতো ব্যাপার, যা নিয়ে কোনো সন্দেহমূলক আলোচনা চলে না। উপরন্তু বিশ্বব্যপী দানিকেনতত্ত্ব ব্যাপক সাড়া ফেলায় বিশ্বাসীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেই, কমছে না।

ইউএফও বিশ্বাসীদের একটি দল তাদের আমন্ত্রন জানিয়েছিল নিয়মিত সভায়। সেখানে যাবার আগে আলোকচিত্রীরা ভেবেছিল খুব একটা মানুষ হবে না। হাতে গোনা দুএকজন মানুষ দেখার আশা নিয়ে যাবার পর তারা মোটামুটি বিস্মিত হয়ে যান। কারণ সেখানে গিয়ে তারা ভাবনার অতীত মানুষ দেখতে পান। এই সভায় আগত মানুষেরা তাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বলছেন, আর নিঃসন্দেহে এই সবগুলো গল্পই ইউএফও’কে কেন্দ্র করে। এমন অনেক ব্যাপারই তারা জানতে পারেন, যা তারা আগে জানতেন না।
এরিয়া ৫১

এমন অনেকেই আছেন যারা বিশ্বাস করেন পৃথিবীতে ভিন্ন ভিন্ন ৩৫টি প্রাণ প্রজাতি রয়েছে। আর এই প্রজাতিগুলো মূলত ভিনগ্রহবাসীদের। আবার আরেকদল মনে করেন, ভিনগ্রহবাসীরা আমাদের পৃথিবীতেই আছেন এবং তারা আমাদের সরকারগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বাস করছেন। যদিও ভিনগ্রহবাসীরা পৃথিবীর মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল নাকি আক্রমনকারী তা এখনও জানা যায়নি। একদল ভাবছেন যে, পৃথিবীর মানুষ আসলে প্রজাতি হিসেবে খুবই ধ্বংসপ্রবন। আর এই ধ্বংসপ্রবন জাতিকে সুরক্ষার জন্যই ভিনগ্রহবাসীরা আমাদের মাঝে অবস্থান করছেন। তবে যে যাই ভাবুন না কেন, সম্প্রতি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা জানিয়েছে যে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেই ভিনগ্রহবাসীদের অস্তিত্ব প্রমাণ হবে। আর সত্যিই যদি তাই নয়, পুরো মানবজাতির ইতিহাস যে আবার নতুন করে সাজাতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!