• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মীর কাসেমের পূর্ণাঙ্গ রায় যেকোনো দিন


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৮, ২০১৬, ১২:০০ পিএম
মীর কাসেমের পূর্ণাঙ্গ রায় যেকোনো দিন

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আপিলে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের রায় লেখার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যে কোনো দিনের যে কোনো সময় প্রকাশ পেতে পারে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি। আজ বুধবার বা বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। আর কোনো কারণে চলতি সপ্তাহে প্রকাশ না হলে সেটি আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। 

সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে রায়ের খসড়া লেখা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রায় প্রদানকারী বেঞ্চের বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি যেকোনো সময় প্রকাশ করা হতে পারে। এর আগে গত ১০ মে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয় জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর।

৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে তার আপিল মামলার রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তিনি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন জানালে এর নিষ্পত্তিতে শেষ হবে মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানবতাবিরোধী অপরাধের এই হোতার মামলা।   

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ০২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর খালাস চেয়ে মীর কাসেম আলী আপিল করেন।

ট্রাইব্যুনালে আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতন কেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের কিলিং স্কোয়ার্ড আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষ নেতা ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী। যিনি শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও।

এ ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণ হয়েছে। বাকি ৪টি অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।

১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি অর্থাৎ ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ৪টি অর্থাৎ ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেন নি বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়।

১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ মোট ৮ জনকে হত্যার দায়ে কাসেমের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে ও ১২ নম্বর অভিযোগে রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজুকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ১১ নম্বর অভিযোগে সর্বসম্মত ও ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ফাঁসির রায় দেন বিচারপতিরা।

ফাঁসি ছাড়াও প্রমাণিত অন্য ৮টি অভিযোগে আরো ৭২ বছরের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড পান চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম আলী। এর মধ্যে প্রমাণিত ফারুককে অপহরণ-নির্যাতনের দায়ে ২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতনের ১৪ নম্বর অভিযোগে দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পান তিনি। এছাড়া অপহরণ, আটক ও নির্যাতন সংক্রান্ত ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের এক নম্বর বেঞ্চে ৭ কার্যদিবসে এ শুনানি শেষে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের এ যুদ্ধাপরাধী নেতার আপিল মামলার রায় দেওয়ার জন্য দিন ঠিক করেন ৮ মার্চ।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়। এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে হত্যার দায় থেকে এই জামায়াত নেতা অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রাখা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!