• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে দাতার সন্ধানে সরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১১, ২০১৬, ১০:০৪ এএম
মেগা প্রকল্পে অর্থায়নে দাতার সন্ধানে সরকার

সোনালীনিউজ রিপোর্ট

সরকার পায়রা বন্দরসহ ৩৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। আর এসব প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য দাতার সন্ধান করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা), এশিয়ান ইনফ্রাসটাকচার ব্যাংক (এআইআইবি), চীন, কেএফডব্লিউ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), ভারতীয় এলওসি, জার্মানি, ইডিসিএফ, কুয়েত ফান্ড, সৌদি ফান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের কাছে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বৈদেশিক সহায়তা অনুসন্ধান কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সভায় প্রকল্পগুলোর অর্থ যোগানোর বিষয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী দেশ বা দাতা সংস্থার মনোভাব আগামী দু’মাসের জন্য জানানোর কথাও বলা হয়েছে। আর আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মেগা প্রকল্পের জন্য আলাদা ক্যাপিটাল বাজেট দেয়া হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক অর্থ সংস্থানের প্রচেষ্টা চালানো হবে সেগুলো হচ্ছে─পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ। এ প্রকল্পের সম্ভাব্য ঋণের উৎস হিসেবে ধরা হয়েছে চীন। পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অব বিপিডিবি আন্ডার থ্রি হিলি ডিস্ট্রিক্ট অব বাংলাদেশ প্রকল্পের সম্ভাব্য উৎস বিশ্বব্যাংক ও এডিবি। গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কোল ফায়ারড থার্মাল পাওয়া প্ল্যান্টের সম্ভাব্য উৎস চীন এবং জাইকা। 

মোল্লাহাট ১০০ মেগাওয়াট সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্টের সম্ভাব্য উৎস চীন এবং কেএফডব্লিউ। গ্রিড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন সাউথ জোন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এডিবিকে অনুরোধ করা হবে। প্রজেক্ট ফর সাপ্লাই অ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব প্রি-পেমেন্ট মিটার সিস্টেম ফর সিক্স ডিস্ট্রিবিউশন জোনস অব ডিপিডিবির ঋণ চাওয়া হবে আইডিবির কাছে।

আপগ্রেডেশন অব পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ইন ওয়েস্ট সিস্টেমের ঋণ চাওয়া হবে এডিবি এবং এআইআইবির কাছে। ২ দশমিক ৫০ মিলিয়ন কঞ্জুমার কানেকশন থ্রোট রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন প্রোগ্রামের জন্য এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হবে। 

এক্সপানসন এ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার চিটাগাং এরিয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হবে। তবে সাব-স্টেশন রিহ্যাবিলিটেশন এ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন অব সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডাটা একিউজিশন সিস্টেম (স্কাডা) প্রজেক্ট,প্র্রজেক্ট উন ওয়েস্ট জোন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই সম্মত হয়েছে এডিবি।

সূত্র জানায়, ডেসকোর ডিজাইন সাপ্লাই এ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাবস্টেশন অ্যাট বসুন্ধরা অ্যান্ড উত্তরা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই ৩৬০ কোটি টাকা (৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার) ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে এআইআইবি। তাছাড়া ডিজাইন সাপ্লাই এ্যান্ড ইনস্টেলেশন অব কনভেনশন অব একজিসটিং ৩৩ কেভি আন্ডার গ্রাউন্ড লাইনস প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা (১০ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণ সম্মত হয়েছে এআইআইবি।

তবে স্ট্রেংদেনিং অব মংলা জয়মনিরঘোল সাইলো কানেকটিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নে এডিবি ও জাইকার কাছে ঋণ চাওয়া হবে। কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অব রাবার ড্যামস টু সাপোর্ট সাসটেইনেবল গ্রোথ অব ফুড প্রডাকশন প্রকল্প বাস্তবায়নে এডিবি ও জাইকার কাছে, ঢাকা স্যানিটেশন ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ফেইজ-১) জন্য বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও জাইকার কাছে ঋণ চাওয়া হবে। কনস্ট্রাকশন অব ব্রড গেজ রেললাইন বিটুই দর্শনা-মুজিবনগর এ্যান্ড আপটু মেহেরপুর প্রকল্পের জন্য ঋণ চাওয়া হবে এডিবি, জাইকা ও ইডিসিএফের কাছে।

কনস্ট্রাকশন অব মিটারগেজ লাইন ডুয়েল গেজ লাইন টু পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশন, ঋণ চাওয়া হবে ভারতীয় এলওসির কাছে। কনস্ট্রাকশন অব নিউ বিজি ট্র্যাক অন সাতক্ষীরা টু মুন্সীগঞ্জ সেকশন অন টানর্কি বেসিস, ঋণ চাওয়া হচ্ছে এডিবি, জাইকা, ইডিসিএফ। কনস্ট্রাকশন অব মর্ডান রেলওয়ে ওয়ার্কশপ অ্যাট রাজবাড়ী, ঋণ চাওয়া হচ্ছে জাইকা ও জার্মানির কাছে।

প্রকিউরমেন্ট অব ৭৫ মিটির গেজ লাগেজ ভ্যান ফর বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্প বাস্তায়নে ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০০ কোটি টাকা (৫ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে এআইআইবি। কনভারসেশন অব মিটার গেজ রেলওয়ে ট্র্যাক ইনটু ডুয়েল গেজ রেলওয়ে ট্র্যাক ইন আখাউরা টু সিলেট প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ চাওয়া হচ্ছে চীনের কাছে। 

ইমপ্রুভমেন্ট অব ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট রোড টু রোড টু ফোর লেন হাইওয়ের জন্য এআইআইবির কাছে ঋণ চাওয়া হচ্ছে। কনস্ট্রাকশন অব নলুয়া-বাহেরচর ব্রিজ ওভারদি রিভার অব পায়রা প্রকল্পের ঋণ চাওয়া হচ্ছে এআইআইবির কাছে। কনস্ট্রাকশন অব বোগা ব্রিজ ওভার দ্য রিভার অব লোহারিয়ার ঋণ চাওয়া হচ্ছে এআইআইবির কাছে।

কনস্ট্রাকশন অব ঝপঝপিয়া ব্রিজের ঋণ চাওয়া হচ্ছে কুয়েত ফান্ড, সৌদি ফান্ড এবং এডিবির কাছে। আর কনস্ট্রাকশন অব ব্রিজ অন ভুলতা-আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর-নবীনগর রোড ওভার দি মেঘনা রিভার প্রকল্পের ঋণ চাওয়া হচ্ছে জাইকার কাছে।

সূত্র আরো জানায়, এস্টাবলিস্টমেন্ট অব সিমুলেটর সেন্টার এ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট অব ট্রেনিং শিপ ফর বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির জন্য ঋণ চাওয়া হচ্ছে ইডিসিএফ এবং সাসটেইনেবল কোস্টাল এ্যান্ড মেরিন ফিসারিজ ইন বাংলাদেশের জন্য ঋণ চাওয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের কাছে। উরির চর-নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণে ঋণ চাওয়া হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের কাছে।

বুড়িগঙ্গা রিভার রেস্টোরেশন প্রকল্পের জন্য চীনের কাছে অর্থ চাওয়া হবে। ডেভেলপমেন্ট অব গর্বামেন্ট সেকেন্ডারি স্কুলের অর্থ চাওয়া হচ্ছে এডিবি, ইডিসিএফ’র কাছে। এস্টাবলিস্টমেন্ট অব আইসিটি সেন্টার ইন ডিস্ট্রিক্ট এ্যান্ড উপজেলা, অর্থ চাওয়া হচ্ছে এডিবি ও ইডিসিএফের কাছে এবং প্রকিউরমেন্ট অব হারবর ক্রাফট ফর মংলা পোর্টের বাস্তবায়নে ভারতীয় এলওসি থেকে ঋণ চাওয়া হবে।

এদিকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ট্রান্সফরমেশন প্রকল্প হিসেবে আরো বেশ কিছু মেগা প্রকল্প নেয়া হবে। ওসব পপ্রল্পের জন্য আলাদা ক্যাপিটাল বাজেট করা হবে। মেগা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনে কিছুটা কঠিন শর্তেও ঋণ নেয়া হবে। মহেশখালীতে পাওয়ার সেন্টার তৈরি করা হবে। এরকম মেগা প্রকল্পে আগামী বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম জানান, আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতেই চাইবেই অর্থায়ন আসুক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনটিতে অর্থ পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না।

সোনালীনিউজ/আমা

Wordbridge School
Link copied!