• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ১০, ২০১৬, ০১:৪৬ পিএম
রাজধানীকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার

সোনালীনিউজ রিপোর্ট

রাজধানী ঢাকাকে ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রাজধানীকে গড়ে তোলা হবে তিলোত্তমা নগরী হিসাবেও। সেজন্য শহরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি যানজট পরিস্থিতিকেও সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে। ওই লক্ষ্যে পুরো রাজধানী শহরকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনা হবে। বিভিন্ন স্থানে মোট ৩৩টি মোবাইল ট্রেকারও বসানো হচ্ছে। ফলে যত্রতত্র চোখে পড়বে না পুলিশ। বরং বিশ্বের অন্যান্য আধুনিক সিটির আদলেই ঢাকা শহরকে গড়ে তোলা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকায় বসবাসরত সব নাগরিককে ডাটাবেজের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পুরো রাজধানী শহরকেই সিসিটিভির আওতায় আনা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে সার্ভে করা হচ্ছে। রাজপথের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ গলি রাস্তাও এর আওতায় আনা হবে। যাতে কোথাও কোনো অপরাধ হলেই ওই ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে। তাছাড়া কোথাও অপরাধ হলে সাথে সাথেই পুলিশ সেখানে হাজির হবে। একাধিক দিক থেকে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হাজির হয়ে অপরাধীকে গ্রেফতার করবে। এই লক্ষ্যে এলাকা ভিত্তিক কন্ট্রোল রুম থাকবে। কন্ট্রোল রুমে বসেই রাজধানীর পুলিশিং ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এখনকার মতো রাস্তাঘাটে কোনো পুলিশ ডিউটি করবে না। বরং বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ প্রস্তুত হয়ে পিকআপে বসে থাকবে। কন্ট্রোল রুমের নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথে নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে যাবে। তাতে রাস্তায় ডিউটি করে পুলিশকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হবে না। বরং আগের চেয়ে নিরাপত্তা বেশি দিতে পারবে এই বাহিনী।

সূত্র জানায়, রাজধানীতে এলাকা ভিত্তিক কন্ট্রোল রুম নিয়ন্ত্রণ করবে সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যাতে দায়িত্বে অবহেলা না থাকে সেজন্যও নিরাপত্তার চেইন সিস্টেম থাকবে। শুধু অপরাধ নিয়ন্ত্রণ নয়, কোথাও আগুন লাগলে সাথে সাথে সেখানে পৌঁছে যাবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও। এমনকি রাস্তায় কোথাও যানজট তৈরি হলে সেখানে পুলিশ হাজির হয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করবে। তাছাড়া রাস্তায় পুলিশ না থাকলেও কেউ ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করলে তার কাছে জরিমানার ম্যাসেজ পাঠানো হবে। জরিমানা পরিশোধ না করলে নির্ধারিত সময়ের পর গাড়ি আটক করা হবে। রাজধানীর রাস্তায় চলাচলকারী সকল গাড়িতে ডিজিটাল নম্বর প্লেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। পাশাপাশি কোনো গাড়ির অবস্থান রাস্তায় কোথায় সিসিটিভির মাধ্যমে তাও দেখা যাবে। কোনো গাড়ি আটক করতে হলে গাড়ির অবস্থা জানা খুবই সহজ হয়ে যাবে। সিগন্যাল লাইটই নিয়ন্ত্রণ করবে সিগন্যাল ব্যবস্থা। ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে এই সিগন্যাল ব্যবস্থা চালানো হবে।

সূত্র আরো জানায়, সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সমাজের ক্ষমতাবান ব্যক্তিরাই বেশি মাত্রায় ট্রাফিক আইন অমান্য করে। এ নিয়ে পুলিশ বাহিনী রীতিমতো বিব্রত। ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের তালিকায় মন্ত্রী, এমপি, সাংবাদিকসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রয়েছেন। ট্রাফিক বিভাগের দাবি- আইন মানাতে হলে সকলকেই মানতে হবে। তাছাড়া পুরো ঢাকা শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনার পাশাপাশি রাজধানীতে মোট ৩৩টি পয়েন্টে মোবাইল ট্রেকার স্থাপন করা হবে। ওই ট্রেকার সকল মোবাইলে কল রেকর্ড করবে এবং তাদের কথোপকথন বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লিপিবদ্ধ হয়ে থাকবে। তাতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা জঙ্গি তৎপরতা সংক্রান্ত কোনো কথা বললে ওই নম্বর চিহ্নিত করতে সিগন্যাল দেবে ট্রেকার। সাথে সাথে কোন কোন নম্বর এই কথোপকথনে জড়িত তা চিহ্নিত হয়ে যাবে। আর কি কথা হয়েছে তাও রেকর্ড দেখে পাওয়া যাবে। এর ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকায় বসবাসরত সব নাগরিককে ডাটাবেজের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশ। বাড়ির মালিক, ভবন মালিক, ভাড়াটিয়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকান মালিক ছাড়াও ছিন্নমূল নাগরিকের তথ্যও থাকবে পুলিশের কাছে। যদি কেউ ঢাকা শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যান সে তথ্যও সংরক্ষণ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। মূলত রাজধানীতে বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপত্তা ও জঙ্গি তৎপরতা রোধেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
 
এদিকে রাজধানীকে ডিজিটালাইজড শহর করা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, পুরো ঢাকা শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে সার্ভে চলছে। আগে সার্ভে না করে ট্রাফিক সিগন্যাল লাইটের মাধ্যমে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালাতে গিয়ে জ্যাম বেড়ে গিয়েছিল। তাই কোনো কিছু শুরু করার আগেই পর্যবেক্ষণ দরকার। সে কাজ চলছে। অন্যান্য আধুনিক শহরের মতো সরকার ঢাকা শহরকেও গড়ে তুলতে চায়। এখন যাচাই-বাছাই চলছে। খুব শিগগিরই এর কার্যক্রম শুরু করা হবে। তাছাড়া দেশের অপরাধ দিন দিন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এই অপরাধ মোকাবেলায় প্রযুক্তি নির্ভর হতে হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। অপরাধ শনাক্ত (ডিটেক্ট) করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!