• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রায় কার্যকরে প্রস্তুত আট জল্লাদ


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১০, ২০১৬, ০৯:৪৭ এএম
রায় কার্যকরে প্রস্তুত আট জল্লাদ

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি রায় কার্যকরের জন্য রাজু, আবুল, হযরত, সাত্তার, রনি, ইকবাল, মাসুদ ও মুক্তার নামে আট জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছানোর পর শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে নিজামীর। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ক্ষমার আবেদন করতে হবে। অবশ্য মতিউর রহমান নিজামী ক্ষমা চাইছেন না বলে জামায়াত ও নিজামীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে ফাঁসির রায় কার্যকরে কোনো বাধা থাকবে না। সরকার যেদিন যখন চাইবেন তখনই ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারবে।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, রাজুর নেতৃত্বে ফাঁসির রায় কার্যকরের কথা রয়েছে। তবে যদি কোন কারণে রাজু ফাঁসি কার্যকরে অংশ নিতে না পারেন তাহলে আবুল, হযরত বা সাত্তার এ সুযোগ পাবেন। এর আগে জল্লাদ সর্দার শাহজাহান ভূইয়ার নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য বেশিরভাগ ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। শাহজাহান ১৪৩ বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং ৩৬ বছর ধরে কারাগারে। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করেন তিনি। তার হাতেই জঙ্গি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, এরশাদ শিকদার, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ আসামি, কাদের মোল্লারসহ বিভিন্ন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

জল্লাদ শাহজাহান ও রাজু অন্যদের চেয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। সেই সঙ্গে সুঠাম দেহ ও অধিক মনোবলের কারণে জল্লাদদের তালিকায় তাদের নাম প্রথমে রাখা হয়। তবে জল্লাদ শাহজাহানের বয়স হয়ে গিয়েছে। উল্লেখযোগ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তার হাতে। তাই এবার অন্যদের সুযোগ দেওয়া হবে। আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের সময় শাহজাহানের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রাজু। ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল আরেক জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরে ভূমিকা রাখেন জল্লাদ রাজু। রাজু ১৫ বছর ধরে কারাগারে আছেন। তালিকা অনুসারে কর্তৃপক্ষের নজরে অন্য যারা রয়েছেন তারাও প্রশিক্ষিত। এ ছাড়াও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে একবার মহড়া দেওয়া হবে। তখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কার নেতৃত্বে, কে কে ফাঁসি কার্যকরে ভূমিকা রাখবেন।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেসার আলম সাংবাদিকদের জানান, কারাগারের পক্ষথেকে সব সময়ই সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাওয়ার পর তা কার্যকর করা হয়। এ ক্ষেত্রেও এর কোন ব্যাতিক্রম হবে না।

উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন নিজামীকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে মৃত্যদণ্ডে দণ্ডিত করে।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তার করা আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়। সেই রায়েও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ১৫ মার্চ। আর ২৯ মার্চ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন নিজামী। ৩ মে শুনানি শেষে ৫ মে রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। সেদিন আপিল বিভাগ তার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!