• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
বিনা পরোয়ানায় আটক

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৭, ২০১৬, ০৫:০৩ পিএম
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে

পরোয়ানা ছাড়া কাউকে  গ্রেফতার ও অনুমতি ছাড়া আসামিকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেকার আইন রদ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা (বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার) ও ১৬৭ ধারায় আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ (পুলিশি রিমান্ড) সংশোধনে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

এ রায়ের ফলে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও পুলিশি হেফাজতে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, সেটিই বহাল থাকল। তবে এখানে একটি বিষয় নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এট হলো, বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতার ব্যক্তির নিকট আত্মীয়-স্বজনকে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে। এ বিষয়টি আগে ছিল না। এখন থেকে এ নির্দেশনা মানবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু উচ্চ আদালত এ নির্দেশনা জারি করেছে, তাই এটা মানতেই হবে। সকালে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা (বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার) ও ১৬৭ ধারায় আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ (পুলিশি রিমান্ড) সংশোধনে এক যুগ আগে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল খারিজ করে আপিল বিভাগ। তবে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনার ওপর কিছু মোডিফিকেশন (সংস্কার) দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।

ফৌজদারি কার্যবিধির বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার (৫৪ ধারা) ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা দেওয়ার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেয়। এর ফলে ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশনা বহাল এবং তা মানায় সরকারের বাধ্যবাধকতা থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালত বলেছে, আপিল খারিজ করা হল। হাই কোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারার কিছু বিষয় সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ কারণে হাই কোর্ট কয়েক দফা সুপারিশ করেছে। এ বিষয়ে কিছু সংশোধনী থাকবে।

হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করতে পারবে না। কাউকে গ্রেফতার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে। গ্রেফতারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে। বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেফতার ব্যক্তির নিকট আত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে। গ্রেফতার ব্যক্তিকে তার পছন্দ অনুযায়ী আইনজীবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে। গ্রেফতার ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে কারাগারের ভেতরে কাচের তৈরি বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকট আত্মীয় থাকতে পারবেন। জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে।

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবে। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নেবেন এবং তাকে দন্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। এসব নির্দেশনা ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল হাই কোর্টের সেই রায়ে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!