• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে কমছে সরকারের নিট ঋণ


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৮, ২০১৬, ০৭:২০ পিএম
সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে কমছে সরকারের নিট ঋণ

বিশেষ প্রতিনিধি
সঞ্চয়পত্রের বিক্রি বেড়েছে। কমছে সরকারের নিট ঋণও। সুদ হার কমানোর পরও এ অবস্থার কোনো হেরফের হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ কমেছে ৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।
পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে ওই খাতে সরকারের ভর্তুকির বদলে এখন বড় অঙ্কের আয় আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছে, পরিশোধ করছে তার চেয়ে বেশি। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণ কমেছে ৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে সরকারের ঋণ ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিদেশি ঋণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার ঋণ নেয়। সেক্ষেত্রে সঞ্চয়পত্র বিক্রি এবং ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হয়। চলতি অর্থবছর ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। অবশ্য গতবারও সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে বেশি অর্থ আসায় অর্থবছর শেষে ব্যাংকে ঋণ কমে ৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে নিট ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে করা হয় ২১ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থবছর শেষে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ২৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা পায়। এবার ওই খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসেই নিট ১১ হাজার ৩২৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আগের অর্থবছরে একই সময়ে যা ১১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা ছিল। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্রে গড়ে ২ শতাংশ হারে সুদহার কমানোর পরও এবার ৮৪ কোটি টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, নির্দিষ্ট একটি সময় থেকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত নেয়া ঋণ নিট ঋণ হিসেবে বিবেচিত। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে সরকারের মোট ঋণ কমে এক লাখ ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। অথচ ৬ মাস আগেও গত জুন শেষে যা এক লাখ ৫ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ছিল। ওই হিসাবে ৬ মাসে সরকারের নিট ঋণ কমেছে ৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে সরকারের মোট ঋণের মধ্যে ৯৩ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা নেয়া হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে। বাকি ৮ হাজার ১৭৯ টাকা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যেও অর্থবছর শেষে ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ বর্তমানের মতো ঋণাত্মক ধারায় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান বলেন, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়লেও এবার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে অত্যন্ত ধীরগতি রয়েছে। একই সময়ে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার প্রচুর অর্থ পাচ্ছে। আবার জ্বালানি তেলসহ বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কমায় আগের মতো সরকারকে আর ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না। ফলে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ চাহিদা কম রয়েছে। সাধারণভাবে ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত তারল্য সরকারকে ঋণ হিসেবে দিয়ে থাকে। তবে এখন সরকারের আগের মতো ঋণ প্রয়োজন না হওয়ায় ব্যাংকগুলো তারল্য কলমানিতে খাটানোর চেষ্টা করছে।

 

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!