• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আজ আন্তর্জাতিক নার্স দিবস

সরকারি হাসপাতালে স্বস্তি বেসরকারিতে সঙ্কট


বিশেষ প্রতিনিধি মে ১২, ২০১৮, ১০:৩২ পিএম
সরকারি হাসপাতালে স্বস্তি বেসরকারিতে সঙ্কট

ঢাকা : ডিপ্লোমা নার্সরা দ্বিতীয় শ্রেণির ও শীর্ষ পদমর্যাদায় কর্মরতরা প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা ভোগ করছেন এখন। আর নার্সদের তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়ার পর সরকারি চাকরিতে অনেকের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সারা দেশে রেকর্ডসংখ্যক নার্স নিয়োগ হয়েছে। আরো নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নতুন পদ সৃষ্টি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সরকারের উদ্যোগে গত ১০ বছরে বেড়েছে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা, পদমর্যাদা, পরিবহন সুবিধা ও ভালো কাজের মূল্যায়ন। ফলে সরকারি হাসপাতালে নার্স সঙ্কট অনেকটা কেটেছে। ফিরেছে কিছুটা স্বস্তিও।  তবে সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে। নার্সরা সেখানকার চাকরি ছেড়ে ঝুঁকছেন সরকারি হাসপাতালে। নার্সিংয়ে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে অনেকেই আর বেসরকারি হাসপাতালে যোগ দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। ফলে নামিদামি অনেক হাসপাতালে নার্স সঙ্কট দেখা দিয়েছে।  

সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নার্স সঙ্কট কাটাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের দেশ-বিদেশে ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেবা পরিদফতরকে নার্সিং ও মিডওয়াইফ অধিদফতরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সরকারি আটটি ও বেসরকারি পর্যায়ের নার্সিং কলেজ থেকে প্রতিবছর প্রচুর নার্স কর্মবাজারে আসছেন। তবে এত উদ্যোগের পরও সঙ্কট কাটছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় দুই লাখ নার্সের ঘাটতি আছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকার কথা। তবে আমাদের দেশে এর অনেক কম রয়েছে। চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারাও এ ঘাটতির কথা স্বীকার করেছেন। এ অবস্থায় শনিবার (১২ মে) পালিত হবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নার্সেস বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর-স্বাস্থ্য মানবিক অধিকার।’  

তথ্যমতে, ২০১০ সালে ২০০০, ২০১৩ সালে ৪,১০০ ও ২০১৬ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১০ হাজার নার্স নিয়োগ পান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় একসঙ্গে ১০ হাজার পদে নার্স নিয়োগ দেয়। তখন ঢাকার ল্যাবএইড কার্ডিয়াক, শমরিতা, স্কয়ার ও এ্যাপোলোর মতো অভিজাত হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে অনেকে সরকারি হাসপাতালে চলে আসেন। ফলে বেসরকারি হাসপাতালে নার্স সঙ্কট সৃষ্টি হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৪ হাজার ৬০০ পদে নার্স নিয়োগ দেওয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া চলছে। সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক।  

ওই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারা এত দিন ঢাকার নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করতেন। এখন সরকারি চাকরিতে তারা বেশি আগ্রহী। নতুন পে-স্কেলে বেশি বেতন, পেশার নিরাপত্তা, ক্ষমতা, মর্যাদাসহ নানা কারণে তাদের এ আগ্রহ।  

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আগে নার্স নিয়োগ দেওয়া হতো স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাধ্যমে ব্যাচভিত্তিক। তখন এটি ছিল তৃতীয় শ্রেণির পদ। এখন নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত করায় নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় পিএসসির মাধ্যমে। তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এ পেশায় এখনো বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। এখনো নার্স নিয়োগে পূর্ণাঙ্গ নিয়োগবিধি হয়নি।

এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণি (১১তম গ্রেড) থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে (দশম গ্রেডে) উন্নীত করার সময় যারা দ্বিতীয় শ্রেণিতে ছিলেন, তারা এখনো প্রথম শ্রেণিতে (নবম গ্রেডে) উন্নীত হননি। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক, সেবা তত্ত্বাবধায়ক ও উপ-সেবা তত্ত্বাবধায়কসহ অনেক পদে কর্মরতরা নিজ বেতনে বা চলতি দায়িত্বে বা অতিরিক্ত দায়িত্বে কাজ করছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!