• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সারাদিন কেমন কাটে সফল ব্যক্তিদের?


নিউজ ডেস্ক অক্টোবর ১২, ২০১৭, ০১:৪৮ পিএম
সারাদিন কেমন কাটে সফল ব্যক্তিদের?

ঢাকা: সফলতার চূড়ায় পৌঁছে যাওয়া মানুষগুলো কিভাবে সময় কাটান তারা সেটা জানার আগ্রহ আমাদের সবারই কম বেশি রয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তির প্রতিদিনের জীবনযাত্রার অংশবিশেষ।

রিচার্ড ব্র্যানসন-
তার পুরো নাম স্যার রিচার্ড চার্লেস নিকোলাস ব্রানসন (১৮ জুলাই ১৯৫০), ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে এই গ্রুপটি সারা বিশ্বে প্রায় ৪০০টিরও বেশি কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। স্যার রিচার্ড প্রতিদিন রাতের খাবার সেরে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। তিনি সাধারণত ৬ ঘণ্টা ঘুমান। তার আগে তিনি গল্প করে সময় কাটাতে ভালবাসেন। গল্পগুজব শেষে রাত ১১ টায় ঘুমাতে যান।

মার্ক জাকারবার্গ-
মার্ক জাকারবার্গকে চেনে না এমন মানুষ পৃথিবীতে কমই আছে। কারণ তিনি হলেন জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা। সারাদিনের সব কর্মব্যস্ততার পর ৩৩ বছর বয়সী মার্ক এলিয়ট জাকারবার্গ তার এক বছর বয়সী শিশু কন্যা ম্যাক্সকে নিয়ে (ইহুদী নিয়মের ‘মী শেবিরাচ’) প্রার্থনায় সময় কাটান। প্রতিদিনই তিনি একই রুটিন মেনে চলেছেন এবং আশা করা যায় আগস্টে তার ঘর আলো করে আসা দ্বিতীয় কন্যা সন্তানটিও শত ব্যস্ততার মাঝে বাবার কাছে খুব সুন্দর সময় পেতে যাচ্ছে।

ডেমন্ড জন-
ফুবুর প্রতিষ্ঠাতা ডেমন্ড গার্ফিল্ড জনকে আমরা চিনি তার বিখ্যাত শো ‘শার্ক ট্যাংক’ এর মাধ্যমে। ডেমন্ড জন ‘ডিসলেক্সিয়া’ রোগে আক্রান্ত। ‘ডিসলেক্সিয়া’ তে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত কোনো কিছু পড়তে পারে না। অক্ষর চেনা যায় ঠিকই, কিন্তু অক্ষরগুলো স্থির থাকে না। মনে হয় নড়ছে। যার ফলে কোনোকিছু পড়তে খুব কষ্ট হয়। ‘তারে জামিন পার’ সিনেমার ‘ইশান’ এর কথা মনে পড়ে? সে অক্ষরগুলো উল্টো করে দেখতো। কখনোবা দেখতো অক্ষরগুলো নেচে বেড়াচ্ছে। এটাই সেই রোগ। কিন্তু অসুস্থতা তাকে থামাতে পারেনি। নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার যুদ্ধে নেমে পড়েন। তিনি প্রতিদিন ঘুমাতে যাবার আগে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, সেগুলোর বাস্তবায়ন এবং সময়সীমার তালিকা তৈরি করে রাখেন। তার ভাষ্যমতে এই প্রাত্যহিক কাজটি তাকে সফল হতে অনেক বেশি সহায়তা করেছে।

শেরিল স্যান্ডবার্গ-
শেরিল কারা স্যান্ডবার্গ (২৮ আগস্ট, ১৯৬৯) একজন আমেরিকান প্রযুক্তি নির্বাহী কর্মকর্তা এবং লেখিকা। ঘুমাতে যাবার আগে ফেসবুক সিওও (চিফ অপারেটিং অফিসার) শেরিল স্যান্ডবার্গ ‘ব্যাড টিভি’র  টিভি সিরিয়াল দেখেন। নিজের প্রোফাইলে এমনটাই বললেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, মজা করে আরো যোগ করেন, “আমি জানি না আমার স্বামী কেন এটাকে ‘ব্যাড টিভি’ শো বলে। মূলত এটা তো ‘গুড টিভি’ শো যা আমাকে ঘুমাতে সহায়তা করে, কারণ এতে আমি অনেক উৎফুল্ল থাকি”।

বিল গেটস-
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটস। তিনি কীভাবে অবসর সময় কাটান? শপিং? ঘোরাঘুরি? লং ড্রাইভ? আপনি-আমি যা ভাবছি তার একটিও না। আমাদেরকে রীতিমত চমকে দেবার মতো কাজ করেন তিনি। রাতে ঘুমুতে যাবার আগে জমে যাওয়া ডিশগুলো ধুয়ে রাখেন। অন্যরা সাহায্য করলেও তিনি এই কাজটি খুব স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই করে থাকেন। এছাড়াও তিনি ঘুমাতে যাবার আগে ঘণ্টাখানেক সময় ধরে বই পড়েন। এটি তাকে ঘুমাতে সাহায্য করে।

জেফ বেজোস-
জেফ্রি প্রিস্টোন বেজোস আমাজনের সিইও। তিনিও বিল গেটসের মতো নিজেই নিজের ডিশ ধুয়ে রাখতে পছন্দ করেন। তিনি আরও বলেন, “ এটা সত্যিই খুব আনন্দদায়ক কাজ”।

ব্র্যাড স্মিথ-
ইন্টুইট এর সিইও ব্র্যাড ডি. স্মিথ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে পরিবারের সাথে টিভি শো দেখতে পছন্দ করেন। তার দৈনন্দিন জীবনে এই সময়টুকু একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

ইভাংকা ট্রাম্প-
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জ্যৈষ্ঠ কন্যা ইভাংকা ট্রাম্প অত্যন্ত বিশ্রামপ্রিয়। তিনি তার বই ‘উইমেন হু ওয়ার্ক্স’ (Women Who Works) এ উল্লেখ করেন, রাতে বেশিরভাগ সময় ওয়াইন, পাস্তার সাথে ‘রিয়েল হাউজওয়াইফ’ শো দেখে সময় কাটান। এছাড়াও তিনি সারাদিনের জমে থাকা মেইলের জবাব দেন। তিনি কখনোই প্রতিদিনের রুটিন পরিবর্তন করেন না। তার সন্তানদেরও তিনি এভাবেই বড় করেছেন।

পিচাই সুন্দররাজন-
পিচাই সুন্দররাজন ৪৫ বছর বয়সী একজন গুণী ও বিখ্যাত মানুষ।  তিনি ‘সুন্দর পিচাই’ নামেই অধিক পরিচিত। ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট তিনি গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষিত হন। তিনি প্রতিদিন বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের ঘুম পাড়িয়ে দেন।

আরিয়ানা হাফিংস্টোন-
‘দ্য হাফিংটন পোস্ট’ এর প্রতিষ্ঠাতা আরিয়ানা হাফিংস্টোন ঘুম এবং সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে অতি সচেতন একজন নারী। তার বই “The Sleep Revolution” থেকে জানা যায় তিনি ঘুমানোর আগে সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করে দেন। তারপর তিনি প্রশান্তিদায়ক উষ্ণ পানিতে গোসল সেরে নেন এবং এক কাপ ল্যাভেন্ডার বা ক্যামোমিল (ঘুমে সহায়ক) ফ্লেভারের চা পান করে থাকেন। সবশেষে তিনি তালিকা করেন সেই সমস্ত জিনিসের যার জন্য তিনি সর্বদাই কৃতজ্ঞ। আপনিও চেষ্টা করে দেখুন। মন ভালো হয়ে যাবে প্রতিদিনের এই তালিকা দেখে!

অপরাহ উইনফ্রে-
‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’ এর কথা মনে আছে? এই শো এর সাবেক উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রে সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ধ্যান করেন। এই সময়টুকুতে তিনি সারাদিনের ক্লান্তি খুব সহজেই ঝেড়ে ফেলতে পারেন বলে CNBC কে জানান। এছাড়াও তিনি নিয়মিত Transcendental Meditation করে থাকেন। এটি ধ্যানের একটি ভিন্নধর্মী নিয়ম।

এইসব বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গদের সারাদিন কাটে খুবই ব্যস্ততায়। তবুও দিন শেষে রাতে যেটুকু সময় তারা পেয়ে থাকেন ওই সময়টুকু পরিবারের সঙ্গে কাটানোর চেষ্টা করেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!