• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামী-স্ত্রীর জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ


মমিনুল ইসলাম মোল্লা মে ৭, ২০১৬, ০৪:১৪ পিএম
স্বামী-স্ত্রীর জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ

বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক মুসলমান। মুসলমান নারী ও পুরুষ কোরআন ও হাদিস অনুসরণ করে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি লাভের চেষ্টা করে। ইসলাম ধর্মে পুরুষকে নারীর অভিভাবক হিসেবে স্থান দেয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে বাংলাদেশের নারীরা পথ হারাচ্ছে। সমানাধিকারের নামে তারা সমাজ ও সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘পুরুষরা নারীর তত্ত্বাবধায়ক; এ কারণে যে আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে।’ তাই সমানাধিকার কিংবা নারী স্বাধীনতার নাম দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করা কোন মুসলিম নারীর জন্য শোভনীয় নয়। তবে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পুরুষরাও সীমা লংঘন করতে পারবে না।

সূরা বাকারায় আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা তোমাদের জন্য আবরণ এবং তোমরা তাদের জন্য আবরণ’। তাই সংসারে নারী-পুরুষকে সংযম ও সহনশীলতা এবং ভালোবাসা প্রদর্শনের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে হবে।

স্ত্রী হল সংসারের রানী। স্বামী পেশাগত কারণে ঘরের বাইরে কাজে ব্যস্ত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। এ সময় স্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে সংসার দেখাশুনা করা। স্বামী বাইরে থেকে ফিরলে তাকে সাদরে হাসিমুখে বরণ করে নিতে হবে। স্ত্রীর হাসিমাখা মুখ দেখে স্বামীর সারা দিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। স্ত্রী নিজে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং স্বামীকেও ইবাদত করতে সাহায্য করবে। তবে নফল এবাদত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে স্বামীর অনুমতি নেবে। স্ত্রী যদি স্বামীর কথায় কর্ণপাত না করে তাহলে তাকে বুঝাতে হবে। প্রয়োজনে তাকে প্রতীকী শাস্তি দেয়া যাবে। তবে ধর্মের দোহাই দিয়ে তাকে শারীরিক বা মানসিকভাবে গুরুতর শাস্তি দেয়া যাবে না।

নারী একদিকে গৃহবধূ, অন্যদিকে সেবাদানকারিণী। তাই স্বামী অসুস্থ হলে তাকে সেবা করতে হবে। প্রয়োজনে তার কাছে রক্ষিত সম্পদও ব্যয় করতে হবে। হজরত ইয়াকুব নবী ১৮ বছর কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত থাকলে তার স্ত্রী রহিমা তাকে সুষ্ঠুভাবে সেবা করেন। রাসূল (সা.) বলেন, নারীর জন্য জিহাদ হল তার স্বামীর সেবা করা।

সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে ‘তোমাদের স্ত্রীরা হল তোমাদের শস্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদের ব্যবহার কর।’ তাই বলে পুরুষদের স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ নেই। একজন স্বামীকে অবশ্যই তার স্ত্রীর চোখে ভালো হতে হবে। একজন ব্যক্তির চোখে ভালো হতে হলে তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। তার চাহিদার দিকে খেয়াল রাখতে হবে; এটাই স্বাভাবিক। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা নারীদের প্রতি কল্যাণকামী হও। তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম (তিরমিজি)। স্বামী তার স্ত্রীর প্রয়োজনের দিকে খেয়াল রাখবে, তবে কেউ চাহিদা পূরণে অক্ষম হলে তাকে এ জন্য হেয় করা যাবে না।

স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলেই সংসার। স্বামীর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন স্ত্রীর প্রাথমিক দায়িত্ব। এ দায়িত্বে অবহেলা করলে সংসারে অশান্তি নেমে আসে। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মাধ্যমে সংসারে শান্তির সুবাতাস বয়ে যায়। স্ত্রী কোন কাজে ভুল করলে তাকে অন্যের সামনে হেয় করা যাবে না, ঠিক তেমনিভাবে স্বামীর সামর্থ্যরে বাইরে তার কাছে কিছু চাওয়া যাবে না। শুধু ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্যই এ নিয়ম নয়, হিন্দু ধর্মেও কঠোরভাবে স্বামীর সেবা করার কথা বলা হয়েছে। স্বামী কিসে সন্তুষ্ট হন তা ভেবে দেখতে হবে। তার মেজাজ-মর্জি বুঝে তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। মে ২০১২ বোম্বে হাইকোর্ট বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত এক মামলায় নির্দেশ দেন ‘সীতা তার স্বামী রামের সঙ্গে বনবাসেও গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ১৪ বছর কাটিয়েছেন। সব স্ত্রীর উচিত সীতার আদর্শ অনুসরণ করা। স্ত্রীকে হতে হবে সীতার মতোই পতিপরায়ণ।’ যারা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাচ্ছেন তারা জানেন কী ওইসব দেশে যে কোন মুসলিম দেশের চেয়ে বেশি পরিমাণে নারী নির্যাতন হচ্ছে? তাই পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে গা না ভাসিয়ে ইসলামের ছায়াতলে এসে আমাদের মা-বোনেরা স্বামীর সেবায় রত হলে তাদের ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির ব্যবস্থা হবে। ইনশাআল্লাহ। (সংকলিত)

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!