• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

১৯৪ একর জমির মালিকানা ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৫, ২০১৬, ০৯:০০ পিএম
১৯৪ একর জমির মালিকানা ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় ভারত সীমান্তে লাঠিটিলা গ্রাম এবং পাল্লাথল চা বাগানে ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ মোট ১৯৪ একর জমির মালিকানা ফিরে পাওয়া নিশ্চিত হয়েছে। বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সূত্রে এই খবর জানা গেছে। শিগগিরই লাঠিটিলা এবং পাল্লাথল সীমান্তে নতুন সীমান্ত পিলার বসিয়ে ওই জমির মালিকানা চূড়ান্ত করা হবে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।

লাঠিটিলায় ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বাংলাদেশের ১২০ একর জমির বিষয়টি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দুদেশের যৌথ জরিপে মীমাংসা হয়েছে এবং সেটা বাংলাদেশ পাবে। এখন সেখানে নতুন সীমান্ত পিলার স্থাপনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়েছে এবং পিলার বসানোর স্থান চিহ্ণিত করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, একই উপজেলার পাল্লাথল চা বাগান এলাকায় ভারতের অপদখলে থাকা মোট ৭৪ একর জমি দুদেশের যৌথ জরিপে বাংলাদেশ পেয়েছে। পাল্লাথলে নতুন সীমানা নির্ধারণ হয়েছে, তবে সীমান্ত পিলার কোথায় কোথায় বসাতে হবে, সেটি চিহ্ণিত করার কাজ চলছে।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গত ২৮ শে ডিসেম্বর লাঠিটিলায় চিহ্ণিত স্থান সমূহে সীমান্ত খূঁটি বসানোর বাজেট বরাদ্দ দিয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন।

জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার লাঠিটিলা (বাংলাদেশে)- ডোমাবাড়ি (ভারত) সীমান্তের বর্তমান প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৯৭ এবং প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৪০০ এর মধ্যবর্তী স্থানে এতদিন কোন সীমান্ত খুঁটি ছিল না। এই মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত লাঠিটিলা গ্রামের ১২০ একর জমি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। যদিও এই জমি বাংলাদেশের দখলেই ছিল। এই গ্রামে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৭০ টি। গ্রামের সঙ্গে সংলগ্ন এলাকা  (ডোমাবাড়ি) ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত।

২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ জরিপ দল বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভূমি জরিপ কাজ পরিচালনা করে। জরিপ শেষে একটি ইনডেক্স ম্যাপে উভয়দেশের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেন। পরবর্তী সময়ে একটি সীমান্ত প্রটোকল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে বলা হয় লাঠিটিলা-ডোমাবাড়ি সীমান্ত এলাকায় প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৯৭ এবং প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৪০০ এর মধ্যবর্তী স্থানে কোনও খুঁটি না থাকায় ভারতের পশ্চিম বঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্তে  ২.৫৬ কাঠা ভূমি এবং ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তে  মহুরীনদী- বিলোনিয়া সীমান্তে দুদেশের্র ভুমির সীমানা চিহ্নিত করে বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয় এখানে অনুসরণ করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে লাঠিটিলা-ডোমাবাড়িতে দু’দেশের সীমানা নির্ধারণ করে সীমান্ত খুঁটি স্থাপনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, লাঠিটিলায় ১২০ একর জমির বাংলাদেশের মালিকানা নিশ্চিত হয়েছে। লাঠিটিলা গ্রামটি এই ১২০ একরের মধ্যে পড়েছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন। এখন জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুঁটি বসানো হবে।

পাল্লাথল চাবাগান এলাকায় ভারতের সাথে বিরোধপূর্ণ জমি সম্পর্কে তিনি বাংলাদেশ ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেন, সেখানে বাংলাদেশের ৩৬০ একর ভূমি অপদখলে ছিল। সেখানে বাংলাদেশ-ভারত প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৭০ এবং  প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৭১ এর মধ্যবর্তী স্থানে ৫৮.৪৪ একর এবং প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৭২ ও প্রধান সীমান্ত খুঁটি নং ১৩৭৩ এর মধ্যবর্তী স্থানে ১৫.৬৫ একর মোট ৭৪.০৯ একর ভূমিতে বাংলাদেশের মালিকানা নিশ্চিত হয়েছে। এখন সেখানে দুদেশের যৌথ জরিপ দল সীমান্ত খুঁটি স্থাপনের জায়গা চিহ্ণিত করার কাজ করছেন।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, লাঠিটিলা সীমান্তের চিহ্নিত করে দেওয়া ১৪টি স্থানে সীমান্ত খুঁটি স্থাপনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

 

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!