• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‌‘১৬৮ মামলা পুনঃশুনানি হবে না’


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ৫, ২০১৬, ১১:৪৯ এএম
‌‘১৬৮ মামলা পুনঃশুনানি হবে না’

সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কাছে রায় লেখার অপেক্ষায় থাকা ১৬৮ মামলার পুনঃশুনানি হবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত জানান।

আদালত বলেছে, আগামী এক মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এ মামলাগুলোর পূর্ণাঙ্গ রায় ও আদেশ দেওয়া হবে।

গত ২৮ এপ্রিল এই মামলাগুলো পুনঃশুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রাখা হয়।

জানা গেছে, ১৬৮টি মামলার মধ্যে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের কাছে রয়েছে ১৬১ মামলা। আর বাকি ৭টি মামলা আছে মোজাম্মেল হোসেনের কাছে।

বেশিরভাগ মামলার রায় লেখার কাজ শেষ করেছিলেন ওই দুই বিচারপতি। কিন্তু তাদের লেখা রায় গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় প্রধান বিচারপতি মামলাগুলো পুনঃশুনানির নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২০১৫ সালের ১ অক্টোবর আপিল বিভাগ থেকে অবসরে যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। অবসরে যাওয়ার সময় ১৬১টি মামলার রায় লেখার দায়িত্ব ছিল এই বিচারপতির।

এসব মামলা তার অবসরে যাওয়ার আগেই আপিল বিভাগ বিভিন্ন সময়ে শুনানি গ্রহণ সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত আদেশও জানিয়ে দেন। শুধু পূর্ণাঙ্গ রায় লেখার কাজ বাকি ছিল।

মামলাগুলোর রায় দীর্ঘদিনেও তিনি না লিখে কালক্ষেপণ করছিলেন। আর এমনই এক পরিস্থিতিতে বর্তমান প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা গত ১৭ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বাণীতে অবসরের পরে রায় লেখাকে সংবিধানপরিপন্থী হিসেবে উল্লেখ করেন।

ওই বাণীতে তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের পর দীর্ঘদিন সময় ধরে রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধানপরিপন্থী।’

অবসরের পর রায় লেখা বেআইনি বলার ব্যাখ্যায় বিচারপতি সিনহা তার বাণীতে বলেন, ‘কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না।’

এরপর গত ২২ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো রায় লিখতে দেয়া হবে না। আমাদের দেশে অতীতে এ রকম রায় দিলেও এখন থেকে আর এ সুযোগ দেয়া যাবে না।’

এরপর তীব্র সমালোচনার মুখে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৬৫টি মামলার রায় ও আদেশের কপি হাতে লিখে জমা দেন।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তিনি আরও কিছু রায় লিখে জমা দেন। বিচারপতি মানিক তার কাছে আর কোনো মামলায় রায় লেখার কাজ বাকি নেই বলে তখন মিডিয়ার কাছে দাবি করেছিলেন।

তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আরও কিছু মামলার রায় লেখার অপেক্ষায় ছিল। আর যেসব রায় তিনি হাতে লিখে জমা দিয়েছেন, সেগুলোর অনেক লেখাই অস্পষ্ট। পাশাপাশি আপিল বিভাগের যে বেঞ্চ হতে এসব মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে, সেই বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা এখনও এসব রায়ে স্বাক্ষর করেননি।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো মামলার রায় লেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি রায়টি লেখার কাজ শেষ করার পর অন্য বিচারপতিরা তা দেখে একমত হয়ে স্বাক্ষর করেন। আর বেঞ্চের সব বিচারপতির স্বাক্ষর শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটি রায় হিসেবেও গণ্য হয় না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আমা

Wordbridge School
Link copied!