• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘কর’ অফিসকে অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যো


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬, ০৪:১৩ পিএম
‘কর’ অফিসকে অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যো

বিশেষ প্রতিনিধি

সরকার দেশের সব কর অফিসকে অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ঘরে বসেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে বহু কাক্সিক্ষত ওই উদ্যোগ বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পের কাজ শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়া যাবে বলে এনবিআরের কর্মকর্তারা আশা করছেন। যদিও এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের দাবি- জুনেই তা সম্ভব হবে।  স্ট্রেনদিং গভর্ন্যান্স ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট (এসজিএমপি) শীর্ষক ওই প্রকল্পের আওতায় এনবিআরের আওতাধীন দেশের মাঠপর্যায়ের ৬৫০টি কর অফিসকেই অটোমেশন করা হবে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশের প্রায় ১০ করদাতা প্রচলিত প্রথায় কর অফিসে গিয়ে নিয়মিত রিটার্ন দেন। তবে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটে এখন অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য বর্তমানে যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে তাতে এলটিইউকে তার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে অনলাইনের পাশাপাশি করদাতারা প্রচলিত প্রথায়ও আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

সূত্র জানায়, এনবিআর করদাতাদের প্রথম ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়ার স্বপ্ন দেখে ২০০৮ সালে। তখন প্রাথমিকভাবে কর অঞ্চল-৮কে অটোমেশন করতে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। ওই কর অঞ্চলের করদাতা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবালয়ে নিজের রুমে কম্পিউটার ক্লিক করে অনলাইনে তার নিজের রিটার্ন জমা দেয়ার মাধ্যমে ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কথা ছিল পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কর অঞ্চল অটোমেশনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু এক বছর যেতে না-যেতেই ওই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। তারপর ২০১১ সালে কর বিভাগের আধুনিকীকায়নে বিদ্যমান প্রকল্পটি শুরু হয়। তবে অর্থায়ন নিশ্চিতসহ নানা সমস্যার কারণে কাজ সময়মতো শুরু করা যায়নি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়ার পর ২০১৩ সালের পর থেকে মূলত কাজ শুরু হয়। আর গতবছর ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।

সূত্র আরো জানায়, চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত কর অফিসকে অটোমেশন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ প্রকল্পে এডিবি ৭৭ কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে। সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী টার্ন-কি ভিত্তিতে অর্থাৎ যারা এ কাজ পেয়েছে তারাই একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সব ধরনের সেবা দেবে। এ প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এ কাজে অভিজ্ঞ ভিয়েতনামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম করপোরেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সফটওয়্যার বসানো হবে আগারগাঁওয়ে বিসিএস ভবনে। পাশাপাশি এনবিআরের থাকবে সেন্ট্রাল প্রসেসসিং ইউনিট।

এদিকে বর্তমানে করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রায় ২০ লাখ। তারমধ্যে নিয়মিত রিটার্ন জমা দেন ১০ লাখ। বাকিদের নোটিশ দিয়ে রিটার্ন জমা দেয়ার অনুরোধ করা হয়। এ অবস্থায় অনলাইন চালু হলেও তারা যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে খুব বেশি আগ্রহ হবে তা বলা যাবে না। তাছাড়া এদেশে বেশির ভাগ করদাতা আইনজীবীর সহায়তায় রিটার্ন জমা দেন। কাজেই করদাতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে তারা যাতে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেন।

অন্যদিকে রাজধানীর একজন কর কমিশনার বলেন, দেশের করদাতারা প্রযুক্তিবান্ধব নয়। নতুন প্রযুক্তিকে আকর্ষণ করতে হলে কিছু করপ্রণোদনা দেয়া যেতে পারে। সুইডেনে বহু আগে অনলাইন চালু হলেও এখনো ৪০ ভাগ করদাতা প্রচলিত প্রথায় রিটার্ন জমা দেন।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, পুরো কর বিভাগকে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলা এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য। অটোমেশন চালু হলে করদাতার সময়ও কম লাগবে। রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন হয়রানিমুক্তভাবে। ফলে কর বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়বে।

সোনালীনিউজ/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!