• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অত্যাধুনিক লঞ্চ ‘সুন্দরবন-১০’ উদ্বোধন হচ্ছে আজ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৫, ২০১৬, ১২:২০ পিএম
অত্যাধুনিক লঞ্চ ‘সুন্দরবন-১০’ উদ্বোধন হচ্ছে আজ

বাংলাদেশে এই প্রথম অত্যাধুনিক লিফট এবং সিসিইউযুক্ত চারতলা বিশিষ্ট সর্ববৃহৎ লঞ্চ সুন্দরবন শনিবার (২৫ জুন) উদ্বোধন হচ্ছে। ঈদে স্পেশাল লঞ্চ হিসেবে চালু করার মধ্য দিয়ে এটির ঢাকা-বরিশাল নৌ রুটে নিয়মিত চলাচল শুরু হবে। দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের বিশেষ সুবিধা দিতেই এই লঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে। 

১৪শ’ যাত্রী ধারণক্ষমতা সম্পন্ন লঞ্চটি দুপুর দেড়টায় সদরঘাটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জজামান খাঁন কামালেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এ ছাড়া বরিশালের তিন সংসদ সদস্য, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর মোজাম্মেল হক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছেন বলে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বরিশাল-ঢাকা-ঝালকাঠী-পটুয়াখালী রুটে চলছে সুন্দরবন নেভিগেশনের আরও ৯টি লঞ্চ এরমধ্যে ‘সুন্দরবন-৮’ই ছিল দেশের সর্ববৃহৎ লঞ্চ। ‘সুন্দরবন-৮’ দৈর্ঘ্যে ৩০০ ফুট প্রস্থে ৪৬ ফুট। সুন্দরবন-১০ তার চেয়েও বৃহৎ। এটি দৈর্ঘ্যে ৩৩২ ফুট প্রস্থে ৫২ ফুট। সুন্দরবন নেভিগেশনের লঞ্চগুলোর মধ্যে ‘সুন্দরবন-১০’ সবচেয়ে অত্যাধুনিক।

লঞ্চটিতে রয়েছে ডুপ্লেক্স কেবিন, ফুডকোর্টসহ আধুনিক নানান প্রযুক্তির ছোঁয়া। এই প্রথম কোনো লঞ্চে যুক্ত হলো লিফট ও সিসিইউ ইউনিটের সুবিধা। লঞ্চের নীচতলায় অগ্রভাগে হৃদরোগীদের জন্য এক শয্যার সিসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট। যেখানে অক্সিজেনের পাশাপাশি চিকিৎসক ও সেবিকার সহায়তা পাওয়া যাবে। 

দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় রয়েছে প্রথম শ্রেণির জন্য শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত সিঙ্গেল ও ডাবল মিলিয়ে ২৪০টি কেবিন। লঞ্চের সিঁড়ি এমনভাবে নির্মিত যে নীচ তলা থেকে সরাসরি দ্বিতীয় বা তৃতীয় তলায় যাওয়া যাবে। রয়েছে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ৪০টি সোফা ও ১২ টি কমন বাথরুম।

এছাড়াও ভিআইপি কেবিন ছাড়াও রয়েছে ৬টি বিশেষ ভিআইপি কেবিন। যার প্রতিটি কক্ষের সঙ্গেই রয়েছে আলাদা বাথরুম, বারান্দা, এসির ব্যবস্থা। এর প্রতিটিই আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। ভিআইপি কেবিনগুলোর নাম রাখা হয়েছে- ৭১, অমর একুশেসহ সংগ্রাম, ইতিহাস-ঐতিহ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নামে।

সুন্দরবন নেভিগেশনের এর স্বত্ত্বাধিকারী সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, লঞ্চটির ডেকের নিচে ১২টি কম্পার্টমেন্ট করা হয়েছে। যাতে লঞ্চের তলার কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হলে অপর অংশে পানি প্রবেশ করতে না পারে।

এরপর নীচতলার ডেকে রয়েছে হাঁটার জায়গা, পর্যাপ্ত টয়লেট, ডেকের যাত্রীদের জন্য রয়েছে ক্যান্টিন। নীচতলায় এলইডি ও সাধারণ লাইটের সংযোজনে আলোকসজ্জায় আনা হয়েছে পরিবর্তন। বিশেষ করে লঞ্চের ডেক থেকে কেবিন, সোফা, ভিআইপি সবখানেই যাত্রীদের জন্য রয়েছে এলইডি টেলিভিশন।

শিশুদের জন্য এই লঞ্চে রয়েছে প্লে-গ্রাউন্ড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার যাত্রীদের চা-কফি পানের জন্য লঞ্চের অগ্রভাবে রাখা হয়েছে রুচিশীল বসার জায়গা। আর যাত্রীদের জন্য পুরো লঞ্চটিকে ওয়াইফাই জোনের আওতায় আনা হয়েছে। অন্যদিকে নিরাপত্তার জন্য পুরো নৌযানটির পরিচালনা ব্যবস্থা সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।

তিনি জানান, লঞ্চের চতুর্থ তলার সম্পূর্ণটুকুই হুইল হাউজ। এ ছাড়া লঞ্চটিতে জার্মানের একটি কোম্পানির তৈরি ২,৭৫০ অশ্ব শক্তির ২টি মূল ইঞ্জিন ছাড়াও নৌযানটির প্রথম শ্রেণি ও ভিআইপি কক্ষসহ ডেক যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস নিশ্চিতকরণে ৩টি জেনারেটরসহ আরো একটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটরও সংযোজন করা হয়েছে। রাখা হয়েছে আধুনিক রাডার, জিপিএস পদ্ধতি। ফগ লাইটের সংযোজনের মাধ্যমে ঘন কুয়াশার মধ্যেও নৌযানটি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপক আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজন তো রয়েছেই।

প্রায় ১৪০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এ লঞ্চ বরিশাল নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরে বেলতলা ফেরিঘাট এলাকায় সুন্দরবন নেভিগেশন ডক ইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়। 

লঞ্চের ভাড়া প্রসঙ্গে সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘বাড়তি সুবিধার জন্য বাড়তি ভাড়া বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। মূলত এই রুটে যাত্রীদের বিশেষ সুবিধা দিতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!