• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনলাইনেও জমে উঠেছে ‌‘পশুর হাট’


বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬, ০৫:৩৮ পিএম
অনলাইনেও জমে উঠেছে ‌‘পশুর হাট’

ঈদুল আজহার আর বেশি দেরি নেই। এই ঈদে পোশাক-পরিচ্ছদ, প্রসাধনীর পাশাপাশি প্রতি বছর ঈদুল আজহা এলেই সওদায় সবচেয়ে গুরুত্ব পায় কোরবানির পশু। কিন্তু এ সময়টায় যথারীতি হাটে-ঘাটেমাঠে থাকে যানজট আর জনজট। 

এর ওপর দালালদের খপ্পর, ছিনতাইয়ের ভয়, জাল টাকা ইত্যাদি নানা ঝামেলা তো আছেই। সেসব ঝক্কিঝামেলা এড়িয়ে হালে প্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসেই পরিবার-পরিজনকে নিয়ে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন নগরবাসী। 

আশপাশের কোরবানির পশুর হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও জমে উঠছে পশুর হাট। ক্লাসিফায়েড অনলাইন ও ই-কমার্স সাইটগুলোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজ খুলে চলছে কোরবানির পশু বিক্রি। এতে এক দিকে হাটের ঝক্কিঝামেলা থেকে ক্রেতারা মুক্তি পাচ্ছেন, অন্য দিকে গরু-ছাগলের খামারিরাও প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন। 

বিক্রয় ডটকম, এখানেই ডটকম, আমারদেশ ই-শপসহ বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে। পশু কেনাবেচার জন্য খোলা হয়েছে নতুন নতুন ফেসবুক পেইজও। এসব পেইজে ক্রেতারা শুধু গরু-ছাগলের ছবিসহ পশুর দাম, বয়স, দাঁতের সংখ্যা, ওজন, চামড়ার রঙ, জাত, জন্মস্থান এবং প্রাপ্তিস্থানও দেয়া থাকছে। 

ক্রেতারা চাইলে স্বচক্ষে পশু দেখতে যেতে পারেন। আর ছবি দেখেই কিনতে চাইলে বিক্রেতা সেই পশু পৌঁছে দিচ্ছেন ক্রেতার ঘরে। 

এসব সাইটগুলোর পাশাপাশি রাজধানীতে গাবতলীর একটি স্থায়ী হাট ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪টি ও উত্তর সিটিতে ৯টি অস্থায়ী হাটের নামেও বিভিন্ন পেজ খোলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। 

এসব হাট থেকে ইতোমধ্যে বাজার বুঝে অনেকেই বায়না করতে শুরু করেছেন। বায়না করার আগে তারা অনলাইন হাটে গরু-ছাগলের ছবির পাশাপাশি পশুর ওজন, উচ্চতাসহ বিস্তারিত তথ্য তুলনা করতে শুরু করেছেন। এর মধ্যে দরদাম পছন্দ হলেই অর্ডার দিচ্ছেন ক্রেতারা।

উত্তরার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা রইসুল ইসলাম প্রতি বছর দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে কোরবানির পশু কেনেন। এটি তাদের পরিবারের রেওয়াজ। প্রায় ৩০ বছর ধরেই এ রেওয়াজ চলছে। কিন্তু রইসুল ইসলামের বয়স ৭০ পেরিয়েছে। ছেলেরাও ব্যস্ত কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে। ফলে হাটে গিয়ে কোরবানির পশু কেনা তাদের জন্য বিরাট ঝক্কির ব্যাপার। এই অবস্থায় নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছেন পরিবারের সন্তানেরা। 

এবার অনলাইনে অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোরবানির পশু কেনার পরিকল্পনা চলছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারে এখন ঘরে বসে কোরবানির পশু কেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে হাট থেকে গরু কিনে আনা ও কয়েক দিন বাড়িতে লালনপালন করার ঝক্কিঝামেলা নেই। অনলাইনে বুকিং দিয়ে কিছু অগ্রিম অর্থ পরিশোধ করলে নির্দিষ্ট সময় বাড়িতে গরু পৌঁছে যাচ্ছে।

অন্য দিকে প্রবাসী বাবার একমাত্র ছেলে রাতুল। বাসার সব কেনাকাটাই তাকে করতে হয়। তাই কোরবানির গরু কেনার দায়িত্বও তার। কিন্তু হাটে গিয়ে কেনাকাটার ঝক্কি তার পছন্দ নয়। ফেসবুকের কয়েকটি গরু বেচাকেনার পেজ ঘাঁটাঘাঁটি করে বেছে নিয়েছেন তার কোরবানির গরু।

গরু কেনার জন্য বিভিন্ন সাইট ও ফেসবুকে ঘাঁটাঘাঁটির পর অনলাইনে একটি গরুর ছবি দেখে পছন্দ হয় পুরান ঢাকার মুস্তাকিমের। শেষে দরদাম ঠিক করে অর্ডার করার পর গরুব্যবসায়ী বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন গরু। 

গত কয়েক বছর ধরেই অনলাইনে গরু কেনাবেচা হচ্ছে। ফেসবুকসহ অনলাইনের মাধ্যমে গরু-ছাগলসহ কোরবানির পশু বিক্রি করার অনেক প্রতিষ্ঠান খুলেছেন উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে অনেকে আবার একেবারে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করেছেন। এসব পেজ ও ওয়েবসাইটগুলোর ফেসবুক পেজে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য বিশেষ সতর্কতাও প্রচার করা হচ্ছে। 

বিক্রয় ডটকমের ফেসবুক পেজে লেখা রয়েছে- ‘সবসময় বিক্রেতার সঙ্গে সরাসরি দেখা করবেন। আপনি যা কিনতে যাচ্ছেন তা দেখার আগে কোনো টাকা পরিশোধ করবেন না। অচেনা কারো কাছে টাকা পাঠাবেন না।’ আমার দেশ ই-শপে তারা লিখেছেন ‘যারা হাটের ভিড়বাট্টা পছন্দ করেন না, তাদের জন্য এখানে রয়েছে অনলাইনে গরু কেনার সুযোগ। 

ওয়েবসাইটটিতে ২৫০টিরও বেশি গরুর ছবি দিয়েছে তারা। এর মধ্যে যে গরুটি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তার ছবির ওপর লিখে দিচ্ছে ‘শোল্ড আউট’। শুধু ঢাকা নয়। চট্টগ্রামেও এমন গরুর হাটের ফেসবুক পেজ রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!