• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবৈধ দখল উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদের অভিযোগ


নাটোর প্রতিনিধি জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ০২:৪১ পিএম
অবৈধ দখল উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদের অভিযোগ

নাটোর : জেলার মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অসংখ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য গত কয়েকদিন ধরে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, তাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ পূর্ব নোটিশ না দিয়েই তাদের অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেকু মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছেন। এ সময় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে থাকা পণ্য সামগ্রীও অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। এ কারণে তাদের লাখ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

নাটোর শহরের বড় হরিশপুর এলাকার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, হরিশপুর বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় তার বাবা মৃত সুধন মিয়াসহ সন্তোস কুমার সরকার ও নারায়ণ কুমার সরকারের ব্যক্তি মালিকানাধীন দুই শতাংশ জমিতে নির্মিত ১৯টি দোকান ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। জমির বৈধ দলিল থাকা সত্বেও পূর্ব নোটিশ ছাড়াই তাদের দোকান ঘরগুলো ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন ব্যবসায়ীরা।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মোবারক ভুঁইয়া, রনি আহম্মেদ, মাজদার হোসেন, হাসান আলীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করেই দোকান গুড়িয়ে দেওয়ায় তারা মালামালও সরাতে পারেননি। এ কারণে তাদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তারা সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

এ ছাড়াও কানাইখালী এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী সিটি মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহীম হোসেন, রানা ওয়াচ এন্ড ইলেকট্রনিক্সের মালিক প্রমোদ ধর, মাস্টার ফার্মেসীর মালিক বাবু, ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল হলের মালিক আলহাজ আব্দুল হালিম, চিত্ত মেডিক্যালের মালিক চপল সরকার এবং মামুন স্টোরের মালিক আক্কাস আলী অভিযোগ করে বলেন, তাদের দোকান ভাঙার পূর্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের কোনোরূপ নোটিশ বা সড়ক ও জনপথ বিভাগের বলে ল্যান্ড মার্ক করে দেয়া হয়নি। ফলে তারা নিশ্চিন্ত মনে ব্যবসা করছিলেন। কিন্তু গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে কোনোরূপ নোটিশ না দিয়েই তাদের ছয়টি দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এ সময় তাদের দোকানে রক্ষিত বিপুল পরিমাণ ওষুধসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগও দেয়া হয়নি। ফলে তাদের লাখ লাখ টাকার ওষুধসহ অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। তারা আরও বলেন, তিল তিল করে পরিশ্রম করে গড়ে তোলা সম্পদ নির্মমভাবে গুড়িয়ে দেয়ায় তারা পথে বসেছেন। এখন কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। বাধ্য হয়ে তাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং নাটোর পৌরসভার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

এ বিষয়ে নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি বলেন, পৌরসভার রেকর্ডিয় সম্পত্তিতে নির্মিত ৬টি দোকান ভাঙচুরে তিনি হতবাক হয়েছেন। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবেন।

এ বিষয়ে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ নাটোর থেকে সিংড়া এবং নাটোর-বনপাড়া পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ও নাটোর শহরের বড়হরিশপুর ও মাদরাসা মোড় এবং কানাইখালী এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় অসংখ্য অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান চালোনোর পূর্বে অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকিং করাসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার বাইরে কোনো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি। এটা সরকারি কাজ। এই কাজ সরকারের নির্দেশনায় চলছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!