• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো

অরক্ষিত কেন্দ্রীয় কারাগার!


বিশেষ প্রতিনিধি মার্চ ২২, ২০১৭, ০২:৩১ পিএম
অরক্ষিত কেন্দ্রীয় কারাগার!

ঢাকা : কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত ঢাকার নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারটি চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। পুরান ঢাকা থেকে স্থানান্তরের পর গত নয় মাসেও নতুন কারাগারটির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ না হওয়ায় এ ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে।

সম্প্রতি রাজধানীর দক্ষিণখানে র‌্যাবের নির্মাণাধীন সদর দফতরে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার পর দেশের সব বিমানবন্দর, কারাগার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কিন্তু এ কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও দেশের প্রধান কারাগারই থাকছে অনেকাংশেই অরক্ষিত! যেন ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’ প্রবাদটিই এখানে যথোপযুক্ত।

গত বছরের ৩০ জুলাই স্থানান্তর প্রক্রিয়া শেষে আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন জানিয়েছিলেন, নতুন কেন্দ্রীয় কারাগারের কিছু জমি স্থানীয়দের দখলে থাকায় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কারাগারের নিরাপত্তা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে।

আইজি প্রিজন আরো বলেছিলেন, নতুন কারাগারের কাজ শুরুর আগে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা উচিত ছিল। কিন্তু তা না করেই কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে। কারাগারের উত্তর-পূর্ব দিকটা সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত। গণপূর্ত অধিদফতরকে নিরাপত্তাপ্রাচীর নির্মাণসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণের জন্য বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা করছে না। এ নির্মাণ কাজে গণপূর্ত অধিদফতরের আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরো জানান, নিরাপত্তার অভাবে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কিংবা কুখ্যাত আসামিদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়নি। তাদেরকে কাশিমপুর কারাগারেই রাখা হয়েছে।

একই বিষয়ে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, সীমানাপ্রাচীরটি নির্মাণে গণপূর্ত অধিদফতরকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দিচ্ছে না। এতে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েই গেছে।

তিনি আরো বলেন, সীমানাপ্রাচীরের উত্তর-পূর্ব অংশের প্রথম স্তরের দেয়ালটি এখানো নির্মাণ হয়নি। তাই সেই অংশে আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা আছে। নিরাপত্তারক্ষীদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, শিল্ড এবং বন্দুকে গুলি লোড করিয়ে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ওয়াচ টাওয়ারে সার্বক্ষণিক সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই গণপূর্ত বিভাগকে দিয়ে প্রাচীরটি নির্মাণ করানো সম্ভব হবে।

গত বছরের ১০ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুরে সাড়ে চার হাজার বন্দি ধারণ ক্ষমতার নতুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৩০ জুলাই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের ২০০ বছরের পুরনো কারাগারের ঠিকানা বদল হয়। দুদিনে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বন্দিকে কেরানীগঞ্জের নতুন কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ১৭৮৮ সালে নির্মিত হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি। যা এখন জাদুঘর হিসেবে নতুনরূপে ফিরে আসছে। আর কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরের কারাগারটি প্রায় ১৯৪ একর জায়গার ওপর চার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে, যা এশিয়ার সর্বাধুনিক ও বৃহত্তম।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!