• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ দরিদ্র কলেজ ছাত্র সুজনের


মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, সিরাজগঞ্জ জুন ১৬, ২০১৭, ১১:৫০ এএম
অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ দরিদ্র কলেজ ছাত্র সুজনের

সিরাজগঞ্জ: জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নুকালী গ্রামের দরিদ্র কৃষক আলতাফ হোসেনের ছেলে কলেজ ছাত্র সেলিম রেজা সুজন বিরল লামপ্যাথিক (Lymphatic) বা লসিকানালী রোগে আক্রান্ত।

তার পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে ভিতরে পচন ধরায় পুরো ডান পা দ্বিগুন ফুলে গেছে। এজন্য তার মাঝে-মাঝে প্রচন্ড ব্যাথা ও জ্বর হওয়ায় চলাচল করতে না পাড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে কলেজে যাতায়ত। গত কয়েক বছর নিজেদের জায়গা জমি বিক্রি করেও দেশে কোন সুচিকিৎসা হয়নি।

অবশেষে ভারতের এ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছে তাকে সুস্থ্য করা সম্ভব। এজন্য ৭/৮ লাখ টাকা লাগবে। যা এই পরিবারের জোটানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সুস্থ্য জীবনে ফিরে আসতে রোগাক্রান্ত অসহায় সুজন, তার পরিবারসহ এলাকাবাসী সরকারসহ দেশের বিত্তবানদের কাছে সহায়তা চেয়েছে।

পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, লামপ্যাথিক রোগে আক্রান্ত শাহজাদপুর সরকারী কলেজে ডিগ্রী ১ম বর্ষে পড়ুয়া সুজন (২২) তার দুই ভাই এক বোনের মধ্যে বড়। হঠাৎ গত ৪ বছর আগে তার ডান পায়ে সামান্য ফুলে ব্যাথা অনুভুত হয়। সাধারণ চিকিৎসা নিয়ে তার কেটে যায় প্রায় আড়াই বছর। এরপর তার পায়ের এই ফোলা সমস্যা পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। পা ফুলে দ্বিগুন আকার ধারন করে। পাশাপাশি দেখা দেয় জ্বর ও প্রচন্ড ব্যাথা। হাটা চলা করতে না পারায় লেখাপড়ায়ও সৃষ্টি হয় বেঘাত।

এ নিয়ে তার পরিবারের সদস্যাও ছিল চিন্তিত। তাই উপায় না বুঝে নিজেদের একখন্ড জমি বিক্রি করে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চলে চিকিৎসা। কিন্তু পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে এই রোর সনাক্ত করতে পারেনি চিকিৎসকরা। আর এভাবেই চলতে থাকে তার যন্ত্রনা ভরা জীবনের চার-চারটি বছর। পরে মাস খানেক আগে দেশীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে ভারতের এ্যাপোলো হাসপাতালে সুজনকে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের সিনিয়ন কনস্যালটেন নিউরোসার্জন ডা. এম বালামুরোগান তার পরিক্ষা-নিরিক্ষার পর সুজন লামপ্যাথিক (Lymphatic) বা লসিকানালী রোগে আক্রান্ত বলে জানান।

ডা. এম বালামুরোগান জানায়, তার পুরো ডান পায়ের শিরা-উপশিরা দিয়ে রক্ত সঞ্চলন বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্যই পায়ের এ অবস্থা। তাই দ্রুত অপরেশন করতে হবে। এজন্য ৭/৮ লাখ টাকা লাগবে। এরপর সুজন বাড়ি চলে আসলে পরিবারের মাঝে টাকা গচ্ছিত করা নিয়ে হতাশা সৃষ্টি হয়। বাড়ির ছোট্ট ভিটে ছাড়া এমন কিছু নেই যে বিক্রি করে তার চিকিৎসা করাবো দরিদ্র পরিবারটি।

আক্রান্ত সেলিম রেজা সুজন জানান, আমার ইচ্ছা লেখাপড়া শেষ করে সরকারী চাকুরি করে বাবা মায়ের পাশে দাঁড়ানো। ছোট-ভাই বোনকে ভালভাবে লেখাপড়া শেখানো। কিন্তু আমার চিকিৎসার ব্যয় মেটানোর জন্যই আজ আমাদের পরিবারটি শেষ হতে চলেছে। এখন মাঝে-মাঝে জ্বর এসে প্রচন্ড ব্যাথা করে। অপরেশন করা খুব জরুরি। কিন্তু টাকা পাবো কোথায়। আমি কি সুস্থ্য জীবনে ফিরে আসতে পারবোনা বলে কান্নায় ভেঙে পড়লেন।

এদিকে সন্তানের এই দুর্দশা তার মা দুলালী খাতুন ও বৃদ্ধা দাদী রহিমা বেগমকে হতাশ করেছে। কোনভাবেই বিনা চিকিৎসায় হারাতে চাননা তাদের আদরের ধনকে। এজন্য তারা দু-হাত তুলে সাহায্য চাইলেন সরকার ও দেশের বিত্তবানদের কাছে।

তারা জানান, খুব কষ্ট করে সুজনকে আমরা লেখা-পড়া করাচ্ছি। এখন অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় যদি ওর কিছু হয় আমাদের পুরো পরিবারটি শেষ হয়ে যাবে। আশা করি আপনারা এগিয়ে আসবেন। বর্তমানে সুজনের পরিবারের অন্য সদস্যরাও আর উপায় খুজে পাচ্ছে না। এতো টাকা তাদের কোন ভাবেই ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।

সুজনের বড় চাচা লোকমান হোসেন এবং চাচাতো ভাই আমিরুল ইসলাম জানান, একটি পরিবারের চলার পথ সুগম করতে সুজনকে বাঁচতে হবে। তাই আমরা সরকার ও বিত্তবানদের কাছে সহযোগীতা চাই।

এজন্য তারা +৮৮ ০১৭৫৭-১৭৫৬৫৯ এই নম্বরে যোগাযোগ এবং সোনালী ব্যাংক বাঘাবাড়ি শাখা সঞ্চয়ী হিসাব নং-৪২০১০০১০০ তে সাহায্য পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!