• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘অহংকার’-এ পাণ্ডিত্য ফলানো সংলাপ নাই: লিটন


মিতুল আহমেদ জুলাই ১৪, ২০১৭, ০৮:০১ পিএম
‘অহংকার’-এ পাণ্ডিত্য ফলানো সংলাপ নাই: লিটন

এফডিসি কেন্দ্রীক চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে ক্যারিয়ার শুরুর প্রথম দিকেই নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন চিত্রনির্মাতা শাহাদাৎ হোসেন লিটন। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে দেশের সুপারস্টার অভিনেতা শাকিব খানকে নিয়েই করেছেন বেশীর ভাগ ছবি। আসছে ঈদুল আযহাতেও আসতে চলেছে তার নির্মাণে শাকিব খান অভিনীত ছবি ‘অহংকার’, এই ছবিতে শাকিবের বিপরীতে আছেন আলোচিত চিত্রনায়িকা বুবলি। ছবিটিকে এরইমধ্যে লোকাল সিনেমা হিসেবে এযাবৎ কালের সবচেয়ে বাজেটকৃত সিনেমা বলছেন নির্মাতা। এরইমধ্যে ছবিটির টিজার রিলিজের পর চলচ্চিত্রমোদিরা আলোচনা-সমালোচনায় মশগুল। অনেক সিনে আলোচক ভবিষ্যৎবাণী করছেন যে, ছবিটি এফডিসি কেন্দ্রীক ‘ধর মার কাট’ ফর্মুলায় নির্মিত একটি ট্রাডিশনাল সিনেমাই হবে এটি, ব্যতিক্রম কিছু না। এমন ভবিষ্যৎবাণী প্রচারকদের উদ্দেশ্যে নির্মাতা বলছেন একটু থামতে! সবাইকে সিনেমাটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে বলছেন শাহাদাৎ হোসেন লিটন। ‘সোনালীনিউজ’-এর সঙ্গে আলাপকালে অহংকার-এর পেছনের কাহিনী কিছুটা শেয়ার করেছেন। যার যৎসামান্যই দেয়া হলো এখানে...

আপনার ‘অহংকার’-এর কী খবর? মুক্তি পাচ্ছে কবে?
‘অহংকার’ নিয়েই আপাতত ব্যস্ত আাছি। ঈদুল আযহায় যাচ্ছে মুক্তি পাচ্ছে। কয়েকবার পেছানোর পর ঈদুল আযহায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। দেশের হল মালিকদের সাথে কথা বার্তা চলছে। 

শুনছি আসছে ঈদে শাকিব-বুবলির আরো একটি সিনেমা কনফার্ম। ‘অহংকার’ নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছেন? 
মোটেও না। শাকিব খানের তিনটা ছবি মুক্তি পেলে বুবলির দুইটা ছবি মুক্তি পেলে সমস্যা কি। আর কোন্ সিনেমা মুক্তি পাবে, না পাবে না সে নিয়ে এখন আর টেনশন নাই। ঈদুল আযহায় ‘অহংকার’ নিশ্চিত মুক্তি পাচ্ছে। এটি নিয়ে কোনো ডাউট নেই। 

‘অহংকার’কে আপনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী বাজেটধারি সিনেমা বলছেন? এটা কিভাবে এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশী বাজেটকৃত সিনেমা, একটু বলবেন?
আমার একটা সিনেমা ছিলো ‘জিদ্দি মামা’। ২০১১ কি ২০১২ সালের দিকে! শাকিব-অপু আর রোমানাকে নিয়ে অই সিনেমা করতে আমার খরচ হয়েছিলো ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অই সময়ে আমার ছবির সাথে মুক্তি পেয়েছিলো ‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট লাভ’ এবং ‘ডন নাম্বার ১’ ছবিটি। এই দুই সিনেমার চেয়ে আমার সিনেমা করতে ২৭ লাখ টাকা বেশী খরচ করেছিলাম। কেউ বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়নি, শুধু পুঁজিটা কোনো রকম পেয়েছি।

আমি যতদুর জানি, জয়েন্ট ভেনচার(যৌথ প্রযোজনা) সিনেমাগুলো করতে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা লাগে। এই হিসেবে লোকাল ছবি হিসেবে আমার ‘অহংকার’ সিনেমাটার খরচও কম নয়। শাকিব-বুবলি অভিনীত ‘অহংকার’ রিলিজ পর্যন্ত আমার ছবির খরচ পড়বে ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। পোস্টার খরচ এখনো ধরিনি। 

এতো খরচ হয়ে গেলো? টিজার দেখেতো এমনটি মনে হয়নি?
‘অহংকার’ ছবিটি আমি ভেবেছিলাম টানা এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে করে ফেলতে পারবো। কিন্তু এই ছবির জন্য তিন মাস আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। টানা শ্যুটিং করতে পারিনি। কিন্তু এই তিন মাসই আমাকে সবকিছু রেডি রাখতে হয়েছে। দেড় মাসের জন্য সব ভাড়া করা ছিলো, সেটা আড়াই মাস আমাকে রাখতে হয়েছে বেশী ভাড়া দিয়ে। আর লোকেশন পরিবর্তন করতে হয়েছে বারবার। 

লোকেশন পরিবর্তন কেনো, আগে পরিকল্পনা ছিলো না?
বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য লোকেশন পরিবর্তন করতে হয়েছে। আমি এক জায়গায় লোকেশন রাখতে চাইনি। প্রোডাকশনের বহর নিয়ে আমাকে প্রচুর মুভ করতে হয়েছে।

এক মাসের জায়গায় তিন মাস আপনাকে কাজ করতে হয়েছে। এটা কি আর্টিস্ট-এর জন্যও কিছুটা?
হ্যাঁ। আর্টিস্ট এর জন্যও টাকা বেশী খরচ হয়েছে। শাকিব খানের একটা কাজ একদিন করানোর কথা, দেখা গেলো সেই কাজটা করতে তার জন্য তিন দিন লেগেছে। নট অনলি শাকিব খান। গোটা প্রোডাকশনটা খুব দীর্ঘায়িত হয়েছে। 

যতদূর জানি, আপনার ‘অহংকার’-এর সময় শাকিব খান যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে দারুন ব্যস্ত ছিলেন?
হ্যাঁ। অইসময় শাকিব ভাই ইন্ডিয়াতে শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, এফডিসির ক্যামেরা ছাড়া সবকিছু আমাকে তিন মাসের জন্য বেশী বুকিং দিতে হয়েছে। তিনটি মাইক্রোবাসকে তিন মাস ভাড়া রাখতে হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা প্রোডাকশন খরচ করতে হয়েছে। আমাকে প্রচুর মুভ করতে হয়েছে।  ষাট থেকে পয়ষট্টি হাজার টাকা প্রতিদিন কনভেন্স দিতে হয়েছে। বুঝেন অবস্থা! 

কিন্তু আপনি এতো টাকা খরচ করে সিনেমায় যে কন্টেন্ট পেয়েছেন, তাতে কি সন্তুষ্ট কিনা?
যে টাকা গেছে, সেটাতো গেছেই। শেষ পর্যন্ত সিনেমাটা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমার ছবির গল্প একেবারে বাংলার গল্প। বাংলা সিনেমার যে ট্রাডিশনাল ধারা, সেটাই রাখতে চেয়েছি। আমাদের গল্পের ব্যাসিক পরিবর্তন করা যাবে না, এটা আমাদের সিনেমাতে থাকবেই। আমিতো আর কলকাতার মুখ্যমন্ত্রীকে আমার নায়ককে দিয়ে বাঁচাচ্ছি না। এমন পরিবর্তন করিনি। 

‘অহংকার’-এর টিজার রিলিজের পর ছবির ডায়ালগ, অভিনয় নিয়ে সোশাল সাইটে প্রচুর ট্রল হয়েছে। এগুলো কিভাবে দেখেন?
দেখুন, আমি ফেসবুকে খুব থাকি না। খুব কম সময় ফেসবুকে বসি। প্রচুর মানুষ ইনবক্সে মেসেজ দেয়, সবারটা পড়তে পারি না। অনেকে বাজে কথা বলে। কিন্তু আমিতো বাংলাদেশের মানুষের জন্য, বাংলার মানুষের জন্য সিনেমাটা বানাইছি। আমরা বাংলার মানুষের সেন্টিমেন্টা ভালো বুঝি। পান্ডিত্য ফলানো সংলাপ আমি আমার ছবিতে বলিনি, আর বলাবোও না। কিছু মানুষকে দেখেছি, ‘অহংকার’-এর সমালোচনা করছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন যে, মাত্র একটা টিজার দেখে যদি বলি ‘বস্তা পচা ছবি’,  তাহলেতো বিচার হলো না। আড়াই ঘন্টার ছবিকে মাত্র একটু টিজার দেখেই যদি কেউ বুঝে ফেলতে চায়, তাহলেতো সালমানের খানের ‘টিউবলাইট’ হিট হয়ে যেতো। কারণ এই ছবির টিজার দেখে সবাই কতো লাফাচ্ছিলো যে এটাও নাকি কয়েকশো কোটি টাকা ব্যবসা করবে। কিন্তু কই, সিনেমাটাতো পুরা ফ্লপ খেলো। 

মানুষতো সমালোচনা করবেই, কিন্তু সেটা মেনে নেয়ার মতো সহিষ্ণুতা কেনো আপনারা দেখাতে পারেন না?
আমার কথা হচ্ছে, সমালোচনা করুক। যে যার মতো করে সিনেমার বিশ্লেষণ করুক। কিন্তু সেটা যেনো কেউ পুরো ছবিটা দেখে পরে করেন। আমার ‘অহংকার’ দেখার পর যদি কেউ সমালোচনা করেন, বলেন যে এটা কোনো সিনেমায় হয়নি; তাহলে আমি মাথা পেতে নেবো।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিএল

Wordbridge School
Link copied!