• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আংশিক বক্তব্য বাংলাদেশ ব্যাংকের


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৯, ২০১৭, ০৫:৪৭ পিএম
আংশিক বক্তব্য বাংলাদেশ ব্যাংকের

ঢাকা: অগ্নিকাণ্ডে বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের প্রায় ৮০ লাখ টাকার মালামাল ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়েছে।  তবে, সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে বক্তব্য শেষ করেই দ্রুত হলরুম ত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র। আগুনে ক্ষতির পরিমাণ জানালেও নীতিমালা না মানায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে কি-না সে বিষয়ে কোনো কথা বলেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।  

অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এঘটনার পরে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, অগ্নিকাণ্ডে বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের বড় ধরণের কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কোনো নথি পুড়ে যায়নি। এতে ওই ফ্লোরের কিছু আসবাব ও মহাব্যবস্থাপকের রুমটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সব মিলেয়ে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের দ্বিতীয় সংলগ্নী ভবনের ১৪তম তলায় ২৩ মার্চ, ২০১৭ তারিখে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ অগ্নিকাণ্ডের ফলে সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়। সেই বিষয়ে জানাতে এক সংবাদসম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছিল মূলত আগুনের ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণ করার জন্য। এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বেশ কিছু সুপারিশ করেছে কামিটি। আগুন নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জামাদি আরো আধুনিক করা হবে। ঢেলে সাজানো হবে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা।

এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একজন ফায়ার সেফটি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। প্রতিদিন কর্মঘণ্টা শেষে বিদ্যুতের সার্কিট ব্রেকার সুইচ বন্ধ করা হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়াও বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগের দায়িত্বে থাকা জিএম লে. কর্নেল (অব.) মাহমুদুল হক খান চৌধুরী ও কমন সার্ভিস বিভাগের জিএম তফাজ্জল হোসেন। ২৮ মার্চ গভর্নর ফজলে কবিরের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। কেপিআই এলাকা হওয়ায় এর নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা সরকারের অন্য কোনো ভবন বা প্রতিষ্ঠানের মতো নয়। অগ্নিনির্বাপক ব্যাবস্থা অধুনিক ও প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখা হয় কেপিআই ঘোষিত এলাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও তা করা হয়েছে।

সেই নিরাপত্তা বলয়ে এমন অগ্নিকাণ্ড ঘটাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা। এমনকি ফায়ার সার্ভিস বিভাগও তা মানতে নারাজ। নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাজের দ্ক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগ থেকেই। কাজে গাফিলতি ও মান নিয়ে অভিযোগ উঠেছে একাধিক।

সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের সময়ে এই বিভাগের কর্মদক্ষতা ও ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এরপরও বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিতে সেই নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাকে রাখায় তদন্ত কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এতে ঘটনার মূল চিত্র উঠে আসবে না। নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে যে অবহেলা ছিল তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে না। ফলে এবারও সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের কর্মকর্তারা পার পেয়ে যাবেন।

প্রসঙ্গত, ২৩ মার্চ রাত ৯ টার পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের ১৪তম তলায় অবস্থিত বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আধাঘণ্টার মতো কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস বিভাগ। এছাড়াও এর ছায়া তদন্ত করছে র‌্যাব ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!