• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
পটুয়াখালী ১ আসন

আওয়ামী লীগে ভড় করেই এমপি হতে চান জাপা মহাসচিব


আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী অক্টোবর ২৩, ২০১৮, ০৪:০৬ পিএম
আওয়ামী লীগে ভড় করেই এমপি হতে চান জাপা মহাসচিব

পটুয়াখালী: আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত পটুয়াখালী-১ (সদর, দুমকি ও মির্জাগজ্ঞ উপজেলা) বিগত বছরের নির্বাচনগুলোতে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কাছাকাছি ভোটে এমপি নির্বাচিত হলেও ২০১৪ সালে পাল্টে যায় সেই প্রেক্ষাপট।

অনেকটা আওয়ামী লীগকে মাঠ থেকে তুলে দিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগে কাঁধে ভড় করে এমপি হন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। সে নির্বাচনে নিজে ভোট না দিলেও রুহুল আমিন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

রুহুল আমিন হাওলাদারের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পটুয়াখালী পৌর মেয়র ডাঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম নির্বাচন করেছিলো। তবে ডাক্তার শফিককে পরাজিত করতে আর রুহুলকে বিজয়ী হতে নানা মুখী নির্বাচনী কুট কৌশল কাজে লাগানো হয়েছিলো।

এবারও পটুয়াখালী-১ আসন থেকে এমপি হতে চায় রুহুল আমিন হাওলাদার। এ জন্য তিনি আওয়ামী লীগের সাথে নির্বাচনী দেন দরবারেই নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে চান। তবে আওয়ামী লীগে জেলা উপজেলা থেকে তৃনমূল সবার কন্ঠেই এক সুর। এবার পটুয়াখালী ১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী না দিলে চীরদিনের জন্য এ আসনটি তাদের হাত ছাড়া হতে পারে।

এর অন্যতম কারণ হচ্ছে গত ৫ বছরে দলের এমপি না থাকায় স্থানীয় উন্নয়ন যেমন বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে তেমনি দলীয় নেতা কর্মীরা ছিলো অনেকটা অভিবাবকহীন। ফলে দলের নেতাকর্মীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তেমনি আওয়ামী লীগও দলীয় ভাবে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টির কোন ভোট নেই বললেই চলে।

পটুয়াখালী-১ আসনে মোট ৩,৯৮,৮৩১ জন ভোটার থাকলেও স্থানীয় হিসাব নিকাশে জাতীয় পার্টির সর্ব সাকুল্যে ৫ হাজার ভোট থাকতে পাবে বলে দাবী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতাদের। আর সে হিসেবে এই আসন থেকে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করেল এই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী কিংবা সতন্ত্র কোন প্রার্থীরা তাদের ঘরে নির্বাচনী ফসল তুলতে পারেন বলেও মনে করেন আওয়মী লীগ ও বিএনপির একাধিক তৃনমূল নেতারা।

‘এই আসনে নৌকা নাই, লাঙ্গল হইলো নৌকার ভাই’ এমন শ্লোগানেই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসনে সফলতার মুখ দেখেছিলো জাতীয় পার্টির মহা সচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। তবে রুহুল আমিন কে বিজয়ী হতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. শাহজাহান মিয়াকে কেন্দ্রের নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়েছিলো। তবে এবার আর এই আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে রাজি নয় জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অংগ সহযোগী সংগঠনের তৃনমূল নেতা কর্মীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এড. শহজাহান মিয়া বলেন ‘গত নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিলো, আমি মনোনয় দাখিল করার পর নেত্রীর নিদের্শেই মনোনয়ন উড্ডো করেছি। রুহুল আমিনকে বিজয়ী করতে নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে মাঠে ময়দানে কাজ করে তাকে বিজয়ী করেছি। তবে এবার জাতীয় পার্টির সাথে আওয়ামীলীগ জোটগত ভাবে নির্বাচন করলে নেত্রী তাকে অন্য কোন আসন থেকে মনোনয়ন দিতে পারেন। যেহেতু জেলা হেডকোয়াটার সেহেতু এই আসনে দলের এমপি থাকাটা জরুরী। আমি মনে করি নেত্রী এবার আওয়ীলীগের প্রার্থীকেই এই আসনে মনোনয়ন দিবেন।

এদিকে গত পাঁচ বছরে রুহুল আমিন হাওলাদার এই আসনে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও স্থানীয় মানুষের সাথে রুহুল আমিন হাওলাদারের তেমন কোন যোগাযোগ ছিলনা। অনেকটা অভিবাবকহীন ভাবে এই জেলা সদরের অসনি পরিচালিত হয়েছে। অপরদিকে দলীয় ভাবে জাতীয় পার্টি এই আসনে তেমন একটা শক্ত অবস্থান তৈরী করতে পারেনি। এ কারনে আওয়ামী লীগের সহযোগীতা ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মত একটি নির্বাচন পরিচালনা তাদের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন সাধারণ ভোটারদের।

তবে জাতীয় পার্টির মাহসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের দাবি জোটগত ভাবে নির্বাচন করলে জোটের সিদ্ধান্ত সে মেনে নিবেন। তার পরও তিনি পটুয়াখালী-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার লক্ষ্য নিয়েই জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীরা মাঠে ময়দানে তার পক্ষে কাজ করছে।’


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!