• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আকার বাড়ছে আইভীর নৌকার, চাঙা বঞ্চিতরা


মেহেদী হাসান ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬, ০৭:১৭ পিএম
আকার বাড়ছে আইভীর নৌকার, চাঙা বঞ্চিতরা

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে (নাসিক) মেয়র পদে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী দ্বিতীবারের মতো বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ায় পাল্টে যাচ্ছে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ। চাঙা হয়ে উঠছেন নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের ‘বঞ্চিত’ নেতারা। তারা একটি প্ল্যাটফর্মে আসতে শুরু করেছেন। আগামীতে এসব পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।

আইভীর প্রতি খোদ দলীয় প্রধানের বিশেষ দৃষ্টি আর প্রভাবশালী ও স্বদলীয় প্রতিপক্ষের কৌশলগত সমর্থন স্থানীয় রাজনীতিতে বড় একটা পরিবর্তন আনছে। এ পরিবর্তনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তত দলের বিপুল কর্মী ও সমর্থকরা। এ পরিস্থিতিতে আইভীর নৌকার শক্তি ও আকার বাড়ার বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্রমতে, নাসিকের সদ্য মেয়র আইভীর প্রতি চরম ‘বিদ্বেষের’ বহিঃপ্রকাশ ঘটে চলতি বছরের গত ৯ অক্টোবর। এদিন গঠন করা হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি। কেন্দ্রের নির্দেশে সভাপতি হিসেবে আবদুল হাই, সহসভাপতি হিসেবে সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবু হাসনাত শহীদ বাদলের নাম উল্লেখ করা হয়।

ঘোষিত এই জেলা কমিটির মধ্যে একমাত্র বাদল এমপিই ছিলেন এমপি শামীম ওসমানের অনুসারী। এরপর ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে কেন্দ্রে জমা দিলে আর আনুমোদন পেতে ব্যর্থ হয়। এরপর মেয়র পদে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগ পক্ষ থেকে যাদের তালিকা দেয়া হয়, তার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়নি আইভীর নাম।

তবে এতোকিছুর পরেও দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেষতক আইভীকেই মনোনয়ন দেন। এ ঘটনা নিয়ে ওসমান পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য শামীম ওসমানের অনুগতরা নাখোশ হন। তবে দলীয় প্রধানের নির্দেশে আইভীর পক্ষে কাজ করতে মাঠে নামলেও কাঙ্ক্ষিত আন্তরিকতা ছিল না বলেই অভিযোগ পাওয়া যায়।

বঞ্চিত নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, আইভী আবারও মেয়র হওয়ায় এবার জেলা কমিটিতেও তাদের প্রাধান্য থাকবে। গেল বছরের (২০১৫) ডিসেম্বরে ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটিতে স্থান হয়নি আইভীর। সে কারণে ওই কমিটিতে আইভীপন্থিদেরও মূল্যায়ন হয়নি। তবে এখন সে চিত্র পাল্টে যাচ্ছে। আগামীতে জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে ব্যাকফুটে থাকা আইভী সমর্থকদের সেখানে ঠাঁই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলা বাহুল্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই শুরু থেকেই আইভীর নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিলেন। তার সঙ্গে শামীম ওসমানপন্থিদের দূরত্বও রয়েছে।

দলীয় বিরোধের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা যায়, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা, বিশেষ করে শামীম ওসমানপন্থিরা প্রথম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীলের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা সমর্থন না করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এই আনোয়ার হোসেনের নামই মেয়র পদের মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন শামীম ওসমানপন্থিরা। আনোয়ার এখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

এদিকে, রাজনীতির শিষ্টাচার প্রদর্শনে প্রশংসার দাবিদার সেলিনা হায়াৎ আইভী গেল ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরদিন ২৩ ডিসেম্বর সেই আনোয়ার হোসেন আর আবদুল হাইকে সঙ্গে নিয়েই শহরের দুই নম্বর রেলগেটের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ফুল দেন। পরে তারা একত্রে চলে যান গণভবনে।

সূত্রমতে, বিগত ২০১১ সালের নাসিক নির্বাচনে আনোয়ার ও আইভীর মধ্যে জোরদার সম্পর্ক থাকলেও ২০১৪ সালের ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচনের পর চলে আসেন শামীম ওসমানদের বলয়ে।

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, ‘নাসিক নির্বাচনের পর অনেক বিষয় স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। প্রকৃত নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তা এখানে যাচাই করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে হয়তো এগুলোকেই প্রাধান্য দেয়া হবে। জেলার রাজনীতিতেও পরিববর্তন ঘটবে।’

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!