• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আগুন লাগা ফাগুন বাগান


হৃদয় আজিজ, নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭, ০৮:৩৬ পিএম
আগুন লাগা ফাগুন বাগান

ঢাকা: পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে
       এসেছে দারুণ মাস
আমি জেনি গেছি তুমি আসিবে না ফিরে
       মিটিবেনা পিয়াস...

তপন চৌধুরীর এ গান শুনলে মন কেমন উদাস হয়ে যায়। ঝরাপাতা উড়ানো বাউরী বাতাসে অজানা প্রিয়জনের জন্য প্রাণমন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। পয়লা ফাল্গুন বসন্তের প্রথম দিন বারতা নিয়ে আসে নানা রঙের ফুলের। আকাশে যে আগুন ধরিয়ে দেয় শিমুল বন আর কৃষ্ণচূড়ারা।

এটা আবার ভাষার মাসও। লাল লাল হয়ে ফুটে থাকা শিমুল কৃষ্ণচূড়া যেন ভাষাশহীদদের স্মৃতিই স্মরণ করে দেয়। তবে তরুণ-তরুণীর মনই রাঙিয়ে দিক আর ভাষাশহীদের স্মৃতিই মনে করে দিক শিমুল ফুল যে দৈনন্দিন জীবনেও বিশেষ প্রয়োজন তা বুঝি ভুলেই যাই।

উৎকৃষ্টমানের তুলার উৎসর জন্যই শিমুল বাগান করে থাকেন অনেকে। সেই শিমুল বাগানই বসন্তে যেন আগুন রঙ ছড়িয়ে দেয়। উতলা করে তোলে কবিমনকে।

ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া টিলাভূমি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড়ের বিশাল শিমুল বাগান হয়ে উঠেছে পর্যটকদের দৃষ্টিকাড়া। বসন্তে শিমুলের রক্তরাঙা সৌন্দর্য দেখতে দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পর্যটকরা হাজির হন লাউড়ের গড়ে। যাদুকাটা নদীর তীর ঘেঁষে বিস্তীর্ণ এক নান্দনিক সৌন্দর্যের বাগান। পুরো এলাকাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল গাইছে বসন্তের জয়গান।

একপাশে শুকিয়ে যাওয়া যাদুকাটা নদী পেরিয়ে বারেকটিলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আরেকপাশে লালে লাল হয়ে থাকা শিমুলের বাগান। ডালে ডালে পাখিরা ব্যস্ত খুনসুটিতে। বসন্তের বাউরী বাতাসে শিমুলের দোল খাওয়ায় জুড়িয়ে যাবে হৃদয়-মন।

শিমুল বাগান যেভাবে শুরু
টাঙ্গুয়ার হাওর তীরবর্তী লাউড়ের গড় গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ২০০২ সালে শিমুলের বাগান গড়ে তোলা হয়। ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে এ বাগান গড়ে তোলেন বাদাঘাট (উত্তর) ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। তার আর পরিচর্যায় বেড়ে ওঠে দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান। ফাগুনের শুরুতেই হাজার দুয়েক গাছে একসঙ্গে ফুল ফোটে। তখন অসাধারণ এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। চোখ জুড়িয়ে যায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের। মধু আহরণের টানে ছুটে আসে হরেক রকমের পাখপাখালিও। শিমুলের এই আগুন রঙ দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।

বসন্তে এই বাগান যে পুরো এলাকার মানুষের মনটা উদাস করে দেয়। দূর থেকে দেখে মনে হয় গাছে গাছে থোকা থোকা আগুন ধরেছে।

সাংবাদিক ও সৌখিন ফটোগ্রাফাররা

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাস অথবা ট্রেনে যেতে হবে সোজা সুনামগঞ্জে। এরপর সুনামগঞ্জের নতুন ব্রিজের গোড়া থেকে বাইক অথবা লেগুনায় সরাসরি লাউড়ের গড় চলে যেতে পারবেন। বাইকে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে দুশ টাকা। আর লেগুনা রিজার্ভ করলে লাগবে এক হাজার চারশ থেকে দেড় হাজার টাকা। চাইলে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও চলে যেতে পারেন লাউড়ের গড়। তারপর বালু চর দিয়ে হেঁটে চলে যেতে হবে শিমুল বাগানে। বসন্তের উদাসী হাওয়ায় রাস্তায় ধুলাবালির প্রকোপ খুবই বেশি। তাই পর্যটকরা মাস্ক নিতে ভোলেন না।

সোনালীনিউজডটকম

Wordbridge School
Link copied!