• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
তৃণমূলের দাবি

আগে দল শক্তিশালী, পরে মাঠে নামা


ইলিয়াস আরাফাত নভেম্বর ২৯, ২০১৬, ০৯:০৮ পিএম
আগে দল শক্তিশালী, পরে মাঠে নামা

রাজশাহী: পরপর দুইবার সরকার নির্বাচিত হওয়ায় সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। কেন্দ্র থেকে শুরু করে দলের তৃণমূল পর্যন্ত তারা কমিটি গুছিয়ে ফেলেছে। কিন্তু বিএনপিতে বিপরীত চিত্র। ক্ষমতার বাইরে দীর্ঘদিন ধরে থাকার কারণে সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। উপরন্ত নেতাকর্মীদের ওপরে হাজারো মামলার চাপ।

এই পরিস্থিতিতে বিএনপির কেন্দ্র থেকে নতুন বছরের শুরুতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সরকারবিরোধী জনমত তৈরি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ তৈরিতে মাঠে নামা হবে। এরকম পরিকল্পনা ছক কষা হচ্ছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জানুয়ারিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে।

কেন্দ্রীয় এই পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হতে পারছে না দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের সাফ কথা, একদিকে ক্ষমতাসীন আরেকদিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী আওয়ামী লীগের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে আগে নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। কমিটি পুনর্গঠনে যোগ্য ও ত্যাগীদের সামনে নিয়ে আসা, আন্দোলনের টেকসই পরিকল্পনা করা।

আগামী ২০১৯ সালে একদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে জয় তুলে আনতে দলকে আগে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার দাবি জানাচ্ছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করে যে কোনো অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামতে হবে। তবেই সাফলতা আসবে।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর বেশিরভাগের কমিটি নেই। আর যেগুলো সংগঠনের কমিটি আছে সেগুলোও নিষ্ক্রিয়। দলকে সাংগঠনিকভাবে চাঙা করতেই এখন নতুন কমিটি করার দিকে জোর দেয়া হচ্ছে।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিমত, আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। অনেকদিন সরকারে থাকায় তারা একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। এ সরকারকে আন্দোলন করে নামানো সম্ভব নয়। আন্দোলন যতো শক্ত হবে সরকারও ততো হার্ড লাইনে যাবে। কারণ আওয়ামী লীগ যে অবস্থায় গেছে তাতে আর পিছু হটে আসা সম্ভব নয়। এতে করে লাভ কিছুই হবে না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। তাই আপাতত আন্দোলনে না গিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার কথায় বলছেন তারা।

দলকে সুসংগঠিত করতে ইতোমধ্যে সারাদেশে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছে শীর্ষনেতারা। রাজশাহী বিভাগে জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নওগাঁসহ আরো দুইটি জেলার সম্মেলন ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। বাকিগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি দেয়া হবে।

স্থানীয় নেতারা জানায়, দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করে ২০১৭ সালের শেষের দিক থেকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাজপথে নামা যেতে পারে। এর আগে দল না গুছিয়ে নতুন কর্মসূচিতে গেলে সফলতা নাও আসতে পারে।

শীর্ষ মহলও ভাবছে, সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে নামলে এবার আন্দোলন সফল হবে। সে লক্ষ্যে তরুণ ও ত্যাগী নেতৃত্ব আনার জোর চেষ্টা চলছে।

এদিকে, বিভাগের মধ্যে শুধু রাজশাহী জেলায় কোনো সম্মেলন ছাড়াই সরাসরি কেন্দ্র থেকে কমিটি দেয়ার কথা আছে বলে দলের স্থানীয় নেতাদের কয়েকজন জানিয়েছেন। তারা জানান, রাজশাহী জেলা বিএনপিতে আন্তঃকোন্দল চরমে। এসব কোন্দলের কারণে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করতে গেলে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সে কারণেই জেলা কমিটি কেন্দ্র থেকে গঠন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রাজশাহী জেলা কমিটির ঘোষণা আসতে পারে।

রাজশাহী জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন জানান, আন্দোলনে নামার আগে দলকে সংগঠিত করে তোলাই জরুরি। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন জেলা কমিটিসহ অন্য কমিটি পুনর্গঠন করার কাজ শুরু হয়েছে। তৃণমূলে বিএনপির সমর্থক অনেক বেশি। তাদের সঠিক নেতৃত্ব দেয়া প্রয়োজন। সে কারণে আন্দোলনের দিকে নজর না দিয়ে দল গোছানোই বেশি গুরুত্বের।

জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও উদিয়মান নেতা অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু জানান, বর্তমানে বিএনপি খুব সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলে চলছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও আইনের শাসন ফিরিয়ে দিতে নিজেদের শক্ত অবস্থানে দাঁড় করাতে বিএনপি দেখে শুনে কাজ করছে। সঠিক সময়ে বিএনপি জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে মাঠে নামবে।

তিন ইস্যুতে মাঠে নামছে বিএনপি

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!