• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আগের ৪ ফাইনালের হতাশার গল্প


ক্রীড়া প্রতিবেদক মার্চ ১৮, ২০১৮, ১১:৫৫ এএম
আগের ৪ ফাইনালের হতাশার গল্প

ঢাকা : আরো একবার কোনো সিরিজের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রোববার (১৮ মার্চ) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিদাহাস টুর্নামেন্টের ফাইনালে শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে বাংলাদেশ আরো চারটি ফাইনাল খেলেছে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে।

প্রতিবারই হয়েছে স্বপ্নভঙ্গ। আজ পেছনের হতাশা দূরে ঠেলে টাইগাররা কি পারবে বিজয়ীর হাসি হাসতে? সেটা সময়ই বলে দেবে। তার আগে এক নজরে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক বিগত চারটি ফাইনালের হতাশার গল্প।

ট্রাইনেশন ফাইনাল-২০০৯ : ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। বাকি দুই প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কা। চার ম্যাচের সেই টুর্নামেন্টে চমক ছিল পরতে পরতে। উদ্বোধনী ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারায় টাইগার শিবির। তাতেই মেলে ফাইনালের টিকেট, যা কোনো সিরিজের প্রথম ফাইনাল ছিল বাংলাদেশের জন্য।

মিরপুরে সেই ফাইনালে শেষ পর্যন্ত জিতেছিল শ্রীলঙ্কাই। রানার্স আপ বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৪ ওভারে মাত্র ১৫২ রানে অল আউট হয়েছিল বাংলাদেশ। স্বল্প পূঁজি নিয়ে তাও লড়াই করেছিল টাইগার বোলাররা। জিততে শ্রীলঙ্কাকে খেলতে হয়েছিল ৪৮.১ ওভার পর্যন্ত, খোয়াতে হয়েছিল ৮ উইকেট। খুব কাছাকাছি গিয়েও ফাইনালে হারের স্বাদ প্রথমবারের মতো পায় বাংলাদেশ।

এশিয়া কাপ ফাইনাল (ওয়ানডে)-২০১২ : বড়ই বেদনাবিধুর ওয়ানডে এশিয়া কাপের ফাইনাল স্মৃতি। ভারত-শ্রীলঙ্কার মতো বাঘা বাঘা দলকে পেছনে ফেলে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। জয়ের খুব কাছে গিয়েও বাংলাদেশ হেরেছিল মাত্র ২ রানে। যে ম্যাচের পর সাকিবের বুকে মাথা রেখে ডুকরে কেঁদেছিলেন মুশফিক, সঙ্গে গোটা বাংলাদেশও। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান করেছিল ৯ উইকেটে ২৩৬ রান।

জবাবে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৪ রান। সাকিব ও তামিম দারুণ ফিফটি করে দলের জয়ের ভিত গড়ে দিলেও পারেননি মাহমুদউল্লাহ। শেষ ওভারের ট্র্যাজেডিতে কপাল পোড়ে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনার্ত ফাইনাল সম্ভবত সেটিই।

এশিয়া কাপ ফাইনাল (টি-২০)-২০১৬ : পাকিস্তানের সঙ্গে সেই ফাইনাল হারের বছর চারেক পর আবার একটি ফাইনাল। এবার এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। ধুন্ধুমার চার-ছক্কার এই টুর্নামেন্টে চমক দেখিয়ে ফাইনালের টিকেট পায় বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ এবার ভারত। এই ফাইনালটি ছিল একপেশে। বৃষ্টি বিঘিœত ফাইনালে ভারত জিতেছিল দাপুটে স্টাইলে। ফলে এই ফাইনাল নিয়ে খুব বেশি আফসোস নেই টাইগার ভক্তদের।

বৃষ্টির কারণে মিরপুরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ২০ ওভারের ম্যাচ কমে এসেছিল ১৫ ওভারে। আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করতে পেরেছিল ৫ উইকেটে ১২০ রান। জবাবে সে লক্ষ্য ভারত টপকে গিয়েছিল সাত বল হাতে রেখে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে। তিন ফাইনালে হারের যন্ত্রণা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

ট্রাইনেশন ফাইনাল-২০১৮ : চলতি বছরের জানুয়ারির কথা। যে স্মৃতি বেশ জ্বলজ্বলে বাংলাদেশের। ট্রাইনেশন সিরিজে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলেছিল শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে। শুরুটা কী দারুণ ছিল বাংলাদেশের। টানা তিন ম্যাচে জয় (জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দুটি, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একটি)।

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়তো ছিল রেকর্ড গড়া। সেই শ্রীলঙ্কার কাছে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ অলআউট ৮২ রানে। যে লজ্জার ভূত দেখা মেলে ফাইনালেও। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি হয়েছিল গত ২৭ জানুয়ারি।

আগে ব্যাট করতে নেমে ২২১ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা। কম রানে আটকে শিরোপা জেতার স্বপ্নটা তখনই শুরু। তবে ইনিংসের মাঝপথে সাকিব আল হাসানের ইনজুরিতে ছন্দপতন। ব্যাট করতে পারেননি সাকিব। বাংলাদেশও যেন খেই হারিয়ে ফেলল। টাইগার শিবির অলআউট মাত্র ১৪২ রানে। ফাইনালে যা লড়ার লড়লেন শুধু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি করলেন ৯২ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। তারপরও বাংলাদেশের হার ৭৯ রানে।

চার চারটি ফাইনালে শুধুই হার। আজ পঞ্চম ফাইনাল, প্রতিপক্ষ ভারত। যাদের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে কোনো জয়ের রেকর্ডই নেই বাংলাদেশের। সেই বিবেচনায় ফাইনালে কতটা জ্বলে উঠতে পারবে বাংলাদেশ? তবে শ্রীলঙ্কায় চলমান নিদাহাস টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অবশ্য আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে। ভারতের কাছে রাউন্ড রবিন লিগ পর্বে দুটি ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টাইগার শিবির ছিল ভীষণ খুনে মেজাজে।

লিগ পর্বে দুটি ম্যাচেই জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে জয় ৫ উইকেটে, রেকর্ড রান তাড়া করে। আর শেষ ম্যাচটা তো ছিল এক কথায় অবিশ্বাস্য। নাটকীয়তায় মোড়া ম্যাচটিতে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ছক্কায় আসে হৃদয় কাঁপানো এক জয়। যে জয়ে নিশ্চিত হয় ফাইনালও।

আজ সেই নিদাহাসের ফাইনাল। কী হবে এবার? আগের চার ফাইনালে হয়েছে স্বপ্নভঙ্গ। পঞ্চম ফাইনালে শেষ হাসি হাসতে পারবে বাংলাদেশ। নাকি বরাবরের মতো হারের বেদনাতেই পুড়তে হবে সবাইকে?

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!